প্রবীর মণ্ডল, বর্ধমানঃ দেখতে দেখতে কেটে গেছে বেশ কয়েকটা মাস। কোভিডের চোখরাঙানিতে বন্ধ হয়েছিল রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ১৬ নভেম্বর। সমস্ত রকম কোভিড বিধি মেনে মঙ্গলবার খোলা হল রাজ্যের স্কুল নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সূত্রের খবর, নবম ও একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে সকাল ১০টা থেকে এবং দশম দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে সকাল ১১ টায়। কিন্তু ক্লাস শুরু হওয়ার আধা ঘন্টা আগে স্কুলে হাজির হতে হবে পড়ুয়াদের। সেইমতো ক্লাস শুরু হওয়ার আধা ঘন্টা আগে পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান দু’নম্বর ব্লকের জোতরাম বিদ্যাপীঠের ছাত্র-ছাত্রীরা পৌঁছে গেছে। পড়ুয়াদের স্বাগত জানাতে গেটে দাঁড়িয়ে আছেন কিছু শিক্ষক এমনকি সকল ছাত্র-ছাত্রীদের কোভিড বিধি মেনে চলার সচেতনতার বার্তাও দিচ্ছেন তারা। পাশাপাশি স্কুলের মূল প্রবেশ দ্বারে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে স্যানিটাইজার দিয়ে প্রবেশ করানো হয়। এদিন ক্লাসরুম ঘুরে দেখা যায় সামাজিক দূরত্ব মেনে প্রত্যেক বেঞ্চে দু’জন করে বসেছেন। দীর্ঘদিন পর ক্লাস রুমে ফিরতে পেরে শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের মুখে লেগে আছে মিষ্টি হাসি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন কুমার ঘোষ বলেন, আমরা সমস্ত রকম বিধিনিষেধ মেনে ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে প্রবেশ করাচ্ছি এবং ক্লাসরুমে বসাচ্ছি। তবে স্কুল খুললেও ছাত্র-ছাত্রীদের হাজিরা নিয়ে একটা সংশয় থেকেই যাচ্ছে। তবে অনেক অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের এই পরিস্থিতিতে স্কুলে পাঠাতে চাইছে না। প্রত্যেক অভিভাবককে ফোন মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয় পাঠানোর জন্য বলেছি।
পাশাপাশি এক অভিভাবক জানান, স্কুল খোলায় আমরা অভিভাবকরা খুবই নিশ্চিন্ত। কিন্তু, একটু ভয় থেকেই যাচ্ছে। কোভিড একটু নিয়ন্ত্রণে হলেও সম্পূর্ণ মিলিয়ে যায়নি। তাই সংক্রমিত হওয়ার একটা ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। তবে সন্তানকে সমস্ত রকম কোভিড বিধি মেনে স্কুলে পাঠিয়েছি।
পাশাপাশি বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী জানান, অনেকদিন পরে স্কুল আসতে পেরে ভীষণ খুশি, বন্ধু-বান্ধবী, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাথে দেখা করতে পেরে খুবই আনন্দিত। স্যারেরা আমাদের প্রত্যেক ক্লাসরুমে এসে সকলকে সচেতন যাচ্ছে। তাদের একটাই আক্ষেপ আর টিফিন ভাগ করে খাওয়া যাবে না।
প্রথম দিনেই স্কুলমুখী হয়ে নিজেদের সমস্যার কথা জানাল ছাত্র-ছাত্রীরা। সকাল সাড়ে ৯ টার মধ্যে স্কুলে আসার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফ থেকে, ফলে তাদের পক্ষে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। কারণ, এই সময়ের মধ্যে স্কুলে উপস্থিত হতে গেলে না খেয়েই স্কুলমুখী হতে হচ্ছে তাদের। কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীর বক্তব্য, তাদের অনেকেরই এই সময় টিউশনি পড়া থাকে। তাই সময়টা সাড়ে ১০টা থেকে করলে সকলের পক্ষে খুবই সুবিধা হয়।