টুডে নিউজ সার্ভিস, বর্ধমানঃ এই বাংলায় তৃণমূলের অন্দরে এমন ঘটনা একেবারে নজিরবিহীন। পূর্ব বর্ধমানের বুদবুদের মানকর পঞ্চায়েতের উত্তর ক্যানেল পাড় এলাকায় রাতের অন্ধকারে দলবল নিয়ে গিয়ে দলের পার্টি অফিস গুঁড়িয়ে দিলেন খোদ তৃণমূল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা মানকর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তন্ময় ঘোষ। এই ঘটনার ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
অভিযোগ জানাতে পিছপা হননি দলেরই মহিলা পঞ্চায়েত সদস্য মিতালি মজুমদার। তিনি বুদবুদ থানায় গিয়ে তন্ময় ঘোষের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, দলের নির্দেশ মেনে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনীত মহিলা প্রধানকে না মানায় আগেও তাদের হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে। তার স্বামী অলোক মজুমদার, যিনি ব্লক তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক, তাকেও দোকান থেকে তুলে নিয়ে চরম হেনস্থা করা হয়। আর এবার থানায় অভিযোগ জানানোয় তাঁদের বিপদের আশঙ্কা আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ মিতালি মজুমদারের।
তন্ময় ঘোষের দাবি, সেই পার্টি অফিস তৈরির বিষয়ে তাঁর বা ব্লকের কোনো নেতৃত্বের অনুমতি নেওয়া হয়নি। ফলে তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সেটি ভেঙে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, দলের গাইডলাইন মেনেই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে, যদি ঐ পার্টি অফিস বেআইনি হয়, তবে তা নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো যেত। নিজে হাতে আইন তুলে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা কেন ছিল? তাহলে কি তৃণমূলের এই উপপ্রধান মুখ্যমন্ত্রীর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের থেকেও বেশি প্রভাবশালী?
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর বিরোধীরা রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ তুলেছিল। কিন্তু এবার উল্টো চিত্র। শাসক দলের মধ্যেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠছে।
২৬ সালের নির্বাচনের আগে দলের অন্দরে এই বিরোধ নতুন করে অশান্তির সৃষ্টি করছে। প্রশ্ন উঠছে, দলীয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দলীয় কর্মীদের এক হয়ে লড়ার’ নির্দেশ কি মানকর এলাকায় পৌঁছায়নি? বিরোধীরাও একযোগে শাসক দলের এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে সরব হয়েছেন।
