গৌরনাথ চক্রবর্ত্তী, কাটোয়াঃ পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া থানার আমড়াঙ্গা মৌজার আমড়াঙ্গা গ্রামের ব্রহ্মাণী নদীর তীরে গড়ে উঠেছে “শরণম্ আশ্রম”। বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমার অন্তর্গত চাণ্ডুলী গ্রামে ১৮৮০ খ্রীষ্টাব্দে ২৭ আগষ্ট জন্মাষ্টমীর পুণ্য তিথিতে শ্রীমৎ স্বামী প্রত্যাগাত্মনন্দ সরস্বতী জন্মগ্রহণ করেন। বহুদেশ ঘুরে গ্রামে ফিরে স্বামীজি জগদানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আমড়াঙ্গা গ্রামের ব্রহ্মাণী নদীর তীরে নির্জন পরিবেশে এক জঙ্গলাকীর্ণ অশ্বথ গাছতলায় নিরবিচ্ছিন্ন তপস্যায় আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৭৩ খ্রীষ্টাব্দে ২০ অক্টোম্বর এখানেই স্বামীজির মহাসমাধি ঘটে। বিভিন্ন সহৃদয় ব্যক্তি স্বামীজির সাধনস্থল সংলগ্ন জায়গা মন্দির গড়ার উদ্দেশ্যে দান করেন।
বর্তমানে প্রায় ১২ বিঘা দানকৃত জমির পরিমাণ। স্বামীজির মৃত্যুর পর পরই ১৯৭৩-৭৪ সালে তাঁর শিষ্য কলকাতানিবাসী লোকেশ ব্যানার্জী এখানে একটি মন্দির তৈরি করেন। এই মন্দিরে পাশাপাশি তিনটি কক্ষ, মাথায় তিনটি চূড়া। পশ্চিম দিকের কক্ষে দেবাদিদেব শিবলিঙ্গ, পূর্ব দিকের কক্ষে শক্তিরূপিনী কালিকার বেদী প্রতিষ্ঠিত আছে। মাঝের কক্ষে স্বামীজির নিজের প্রস্তর মূর্তি, ধ্যানাসনে বসা। মূর্তির উচ্চতা প্রায় আড়াই ফুট। মন্দিরের দক্ষিণ দিকে রয়েছে নাটমন্দির।
এখানে দুর্গাপূজা, কালীপূজা ও সরস্বতীপূজা হয়। বর্তমানে লোকের অভাবে দুর্গাপূজা বন্ধ রয়েছে। মূলমন্দিরের উত্তরদিকে ফুল ও ফলের বাগান। বাগানের উত্তর-পশ্চিম কোণে স্বামীজির সাধনক্ষেত্র। বর্তমানে সেটি শ্বেতপাথরে বাঁধানো ঘর। এইঘরে স্বামীজির ছবি ও সেবার ব্যবস্থা আছে। বাগানের বাইরে পশ্চিম দিকে দ্বিতলা বিশিষ্ট অতিথি নিবাস। উপরে-নীচে আটটি ঘর, টানা বারান্দা।
বর্তমান পুজারীর নাম সাধন কুমার বটব্যাল। আগে চিকিৎসকরা রোগী দেখতেন এখানে। গুরুপূর্ণিমা, স্বামীজির তিরোধান দিবস পালিত হয় এখনও। প্রতিদিনই সকাল-সন্ধ্যায় নিত্যসেবা হয়।
শ্রীমৎ স্বামী প্রত্যাগাত্মনন্দ সরস্বতীর তিরোধান দিবসের তিথি উপলক্ষে প্রতিবছরই একাদশী তিথিতে এখানে মহোৎসব হয়। এবছরও হরিনামসংকীর্তন সহকারে মহোৎসবের আয়োজন হয়েছে।জগদানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোড়ানাশ, মুস্থূলী, আমডাঙ্গা, একডেলা ও শ্রীবাটী গ্রাম পঞ্চায়েতের চাণ্ডুলী, নন্দীগ্রাম, মুলগ্রাম সহ বিভিন্ন গ্রামের লোকজন এখানে এসেছেন।
Social