Breaking News

সিবিআই হেফাজতে লালন সেখের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ

 

টুডে নিউজ সার্ভিস, রামপুরহাটঃ গত ২১ মার্চ ২০২২ রাত্রে বীরভূম জেলার রামপুরহাট এলাকার বগটুই গ্রামের বাসিন্দা তথা বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূল কংগ্রেসের উপ-প্রধান ভাদু শেখ দুস্কৃতকারীদের ছোড়া বোমার আঘাতে খুন হন। বদলা হিসেবে সে রাতেই বগটুই গ্রামের একাধিক বাড়িতে ঘটানো হয় অগ্নিসংযোগ, সাথে পুড়িয়ে চলে নরহত্যা। গ্রাম জুড়ে সেদিন হত্যালীলার ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে যায় এলাকা। যা নিয়ে সমগ্র রাজ্য রাজনীতি সরগরম হয়ে ওঠে। বগটুই গণহত্যা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অন্যতম মূল অভিযুক্ত ছিলেন লালন সেখ। তিনি নিহত ভাদু সেখের ছায়া সঙ্গী বলে পরিচিত। ঘটনার পর থেকেই ফেরার ছিলেন। গত ৩ ডিসেম্বর লালন শেখকে পাশের রাজ্য ঝাড়খন্ডের পাকুড় থেকে গ্রেফতার করে সিবিআই এবং ৪ ডিসেম্বর রামপুরহাট আদালতে তোলা হলে বিচারক পর পর দু’দফায় সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন।

 রামপুরহাটের পান্থনিবাস গেস্ট হাউসে সিবিআই এর অস্থায়ী ক্যাম্পে হেফাজতে থাকাকালীন সোমবার বিকেল নাগাদ লালন সেখ শৌচাগারের মধ্যে গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। বগটুই গ্রাম জুড়ে মৃতের পরিবার পরিজন সহ এলাকাবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গ্রাম সহ এলাকা জুড়ে নামানো হয় বিশাল পুলিশবাহিনী। 

মৃত লালন সেখ এর স্ত্রী রেশমা বিবির দাবি সিবিআই তাঁকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে। হেফাজতে থাকা অবস্থায় সিবিআই লালন সেখ-কে বেশ কয়েকবার গ্রামের বাড়িতে এমনকি গ্রামেই তাঁর শ্বশুর বাড়িতে ও তদন্তের জন্য নিয়ে আসেন। তখনই লালন সেখ তাদের সকলের সামনে সিবিআই-এর মারধরের কথা বলে। মারের চোটে ঠিক মতো হাঁটা চলার ক্ষেত্রে ও অসুবিধা লক্ষ্য করা যায় বলে পরিবারের দাবি। উল্লেখ্য, বগটুই গণহত্যায় অগ্নিসংযোগ ঘটানো বাড়ির উল্টো দিকে লালন সেখ এর বাড়ি। তাঁর বাড়ি ও বাড়ির বাইরে সিসি ক্যামেরা লাগানো ছিল। আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্তে নামে এবং লালন সেখ এর বাড়ির সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খোঁজ করতে গিয়ে পাইনি। সেটার জন্য ও সিবিআই চাপ সৃষ্টি করছিল। তাছাড়া বাড়িটি তো আগেই সীল করে দিয়ে ছিল সিবিআই বলে ক্ষোভ পরিবারের।মঙ্গলবার সকালে রামপুরহাট থানায় মৃত লালন সেখ-এর স্ত্রী রেশমা বিবি দায়িত্বপ্রাপ্ত সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। এদিন রামপুরহাট মেডিকেল কলেজে মৃতদেহে ময়না তদন্তের কাজ সম্পন্ন হলে ও সিবিআই আধিকারিকদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত মৃতদেহ নেবে না বলে জানান মৃতের স্ত্রী রেশমা বিবি। অপরদিকে সিবিআই আধিকারিকদের গ্রেফতারের দাবিতে জাতীয় সড়কের ওপর এবং সিবিআই-এর অস্থায়ী দপ্তরের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও পথ অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যায় লালন সেখ-এর পরিবার পরিজন সহ এলাকাবাসী। 

অন্যদিকে সূত্র মারফত জানা যায় যে, সোমবার সিবিআই এর দুই আধিকারিক যখন আদালতে গিয়েছিলেন তখন এক জোওয়ান লালন সেখ এর পাহারায় ছিলেন।শৌচাগারের মধ্যে ঢুকে লালন সেখ, কিন্তু দীর্ঘক্ষণ কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় দরজা ভেঙে দেখে যে গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে একটি লোহার মধ্যে রয়েছে তার ঝুলন্ত দেহ। শোনা যাচ্ছে ইতিমধ্যে সিবিআই এর উর্দ্ধতন কতৃপক্ষ এসে পৌঁছেছে রামপুরহাট সিবিআই-এর অস্থায়ী ক্যাম্পে এবং অন্তর তদন্ত শুরু করেছেন।সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত শেষ পাওয়া খবরে জানা যায় পথ অবরোধ উঠে গেলে ও রামপুরহাট মর্গে থাকা লালন সেখ-এর মৃতদেহ নিয়ে যায়নি তাঁর পরিবার।

About Burdwan Today

Check Also

‘আধঘন্টা ছেড়ে দিন…’, যাদবপুর কাণ্ডে এবার বিতর্কে বিজেপি বিধায়ক!

টুডে নিউজ সার্ভিসঃ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা প্রসঙ্গে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন বিজেপি বিধায়ক অমরনাথ শাখা। শনিবার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *