পাটকাঠির মশালের আলোয় ক্ষেপীমার বিসর্জন

Burdwan Today
2 Min Read

 

গৌরনাথ চক্রবর্ত্তী, কাটোয়াঃ কাটোয়ার এই দুর্গা ক্ষেপীমা নামে খ্যাত। পাটকাঠির মশালের আলোয় প্রতিমা বিসর্জনে নিয়ে যাওয়া হয়। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া থানার ঘোড়ানাশ গ্রামের রায় পরিবারের দুর্গা পুজোর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ বিসর্জন ।রায় পরিবারের পুজো এলাকায় “ক্ষেপীমা”-এর পুজো বলে খ্যাত। 

ক্ষেপীমা নামকরণ কী করে হল, তার সঠিক ব্যাখ্যা মেলে না। তবে গ্রামবাসীদের কাছে ক্ষেপীমা মা খুবই জাগ্রত। গ্রামবাসীরা বলেন, রায় পরিবারের পুজো হলেও, ক্ষেপীমা এখন গ্রামের সার্বজনীন পুজো।সেইজন্য প্রতিমা বিসর্জনের সময় বাহক ঠিক করতে হয় না। মাকে কাঁধে নেওয়ার জন্য গ্রামবাসীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। পাটকাঠির মশালের আলোয় প্রতিমা নিয়ে বাহকরা দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে বিসর্জন দিতে যান ব্রহ্মাণী নদীতে। এই রীতি চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

রায় পরিবারের প্রবীণ সদস্য মহিম রায় বললেন, প্রায় ৩০০ বছর আগে নবাব আলিবর্দি খাঁ-র আমলে আমাদের পূর্বপুরুষ ভবানন্দ রায় এখানকার দেওয়ান ছিলেন। আমরা পূর্বপুরুষদের কাছে জানতে পারি, তিনিই এই একচালার পুজো প্রতিমা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদ থেকে পুজো শুরু হয়।পারিবারিক পুজো হলেও এখন সার্বজনীন হয়ে গেছে।মহাষ্টমীতে যে যা মানত করে সেদিন মাকে পুজো সহ দিয়ে যান। এমনিতেই নানান ইতিহাস রয়েছে এই প্রতিমাকে ঘিরে।

ঘোড়ানাশ গ্রামের বাসিন্দারা জানালেন, ক্ষেপীমার পুজোর বড় আকর্ষণ হল বিসর্জন। বিসর্জনের সময় বাহক ঠিক করতে হয় না।গ্রামবাসীরা মাকে নিয়ে যান। এই গ্রাম থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে চাণ্ডুলী গ্রামের কাছে ব্রহ্মাণী নদীতে বিসর্জনের সময় গ্রামবাসীরা পথের দুধারে সারিবদ্ধভাবে পাটকাঠির মশাল জ্বালিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। সেই মশালের আলোয় ভক্তরা একচালার প্রতিমাকে নির্দিষ্ট পথে দৌড়াতে দৌড়াতে নিয়ে যান। বিসর্জনের আগে প্রতিমা কাঁধে নেওয়ার জন্য ঘোড়ানাশ, মুস্থূলী, আমডাঙ্গা, একডেলা প্রভৃতি গ্রামের বাসিন্দারা আসেন। প্রতিবছরই নতুন কাঠামোতে মাকে তৈরি করা হয়।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *