টুডে নিউজ সার্ভিস, বর্ধমানঃ ফি বছরই তাঁদের দেখা মেলে ঠিক এই বিশ্বকর্মা পূজোর প্রাকঃ মূহূর্তে। এবারেও তার ব্যতিক্রম নেই বর্ধমান শহরে। কিন্তু প্রকৃতির রোষে মুখ ভারই শুধু নয়, একরাশ লোকসানের চিন্তায় পড়ছেন তাঁরা। উত্তর ২৪ পরগণার স্বরূপনগর থেকে গত ১৪ থেকে ১৫ বছর ধরে একদল মানুষ আসেন প্লাষ্টিকের মালা বিক্রি করতে। বস্তা বস্তা মালা নিয়ে তাঁরা হাজির হন ঠিক এই বিশ্বকর্মা পূজোর প্রাকঃ মূহূর্তে। বর্ধমান শহর জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে তাঁরা ফেরি করে বেড়ান এই মেলা। এবছরও তার কোনো অন্যথা হয়নি। কিন্তু বর্ধমানে পা দিয়েই মুষলধারে বৃষ্টির মুখে পড়েন তাঁরা। ফলে গত কয়েকদিন বিক্রিবাটা একদমই হয়নি বলে জানিয়েছেন বিশ্বজিৎ মণ্ডল, দেবব্রত সরকার, সত্যজিৎ সরকার প্রমুখরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এবছরও স্বরূপনগর থেকে প্রায় ৪৫ জন তাঁরা এসেছেন। এর মধ্যে কেউ কেউ আরামবাগেও গেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, কলকাতার বড়বাজার থেকে কাঁচামাল কিনে নিয়ে গিয়ে তাঁরা বাড়ির মহিলাদের দিয়ে এই বিভিন্ন রকমের মালা তৈরি করেন। এরপর সেই মালা নিয়ে তাঁরা আসেন বিক্রি করতে।
সত্যজিৎ সরকার জানিয়েছেন, এই কাজ করতে যাঁরা আসেন তাদের মধ্যে স্কুল, কলেজের পড়ুয়ারাও রয়েছেন। এই মালা বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়েই পরিবারের সকলের জন্য দুর্গাপুজোর খরচ জোগান এবং একইসঙ্গে সারাবছরের হাতখরচাও মজুত করেন। কিন্তু এবছর বৃষ্টির জন্য বিক্রি একদমই হয়নি। যদিও সোমবার দুপুর থেকে বৃষ্টি বন্ধ হতেই তাঁরা কিছুটা আশা দেখছেন। সত্যজিৎ বাবু জানিয়েছেন, বৃষ্টির জন্য বাড়ি থেকে যদি লোকই বের হতে না পারেন, তাহলে মালা কিনবেন কে? তবুও এদিন দুপুর থেকে বৃষ্টি কমায় তাঁরা আশা করছেন মঙ্গলবার সকালের মধ্যে হয়ত কিছুটা হলেও তাঁরা লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পাবেন। কারণ এই মালা বিক্রি না হলে তার রং চলে যাবে। সেক্ষেত্রে পরে আর বিক্রি হবে না। ফলে পুরোটাই লোকসানে পড়বেন তাঁরা। অন্যদিকে, বৃষ্টির জন্য এবছর প্রতিমা বিক্রির বাজারও তেমন জমেনি। এদিন কোর্ট চত্বরে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা নীলপুর এলাকার বাসিন্দা তাপস পাল জানিয়েছেন, বৃষ্টির জন্য এবার প্রতিমা বিক্রি তেমন হয়নি। যদিও মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সময় আছে। তবুও অন্যান্য বছর আগের দিন ভাল বিক্রি হয়। এবারেও সেই আশা ছিল। তিনি জানিয়েছেন, বৃষ্টির জন্য কম দামেও প্রতিমা বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
Social