টুডে নিউজ সার্ভিসঃ লোকসভা ভোটে বাংলায় স্যুইপ করার পর এবার প্রশাসনে বড় রকমের ঝাঁকুনি দিতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১১ তারিখ মঙ্গলবার নবান্ন সভাঘরে মেগা বৈঠক ডাকলেন তিনি। প্রশাসনের ঝাঁকুনি দেওয়ার এই চেষ্টার পাশাপাশি যে প্রশ্নটা বড় হয়ে উঠতে পারে তা হল অর্থের সংস্থান । কারণ, এখন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার খাতে কোষাগারের উপর চাপ বেড়েছে। তাছাড়া ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আবাস যোজনা খাতে সাড়ে ১১ লক্ষ মানুষকে অনুদান দেওয়ার কথাও ঘোষণা করে রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে নবান্ন কর্তারা মনে করছেন, অর্থনৈতিক বিষয়ে কেন্দ্রের থেকে যে অসহযোগিতা গত পাঁচ বছর ধরে দেখা গিয়েছে, এবার তা চালিয়ে যাওয়া বিজেপির জন্যও মুশকিল। তা ছাড়া কেন্দ্রে জোট সরকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুই বন্ধুও এবার রইলেন । তাঁরা হলেন, চন্দ্রবাবু নায়ডু ও নীতীশ কুমার।মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রে খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, বাংলায় যে নেতি নেতি পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করেছিল বিরোধীরা, এই জনাদেশ তাকে খণ্ডন করে দিয়েছে। তৃণমূলের প্রতি মানুষ আস্থা জানিয়েছে। শাসক দলের ভোটও বেড়েছে। একে তাঁর সরকারের প্রতি আস্থা হিসাবেই বিবেচনা করা উচিত। কারণ, সাধারণ নির্বাচন হলেও বিজেপি এই ভোটে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতাকে হাতিয়ার করতে চেয়েছিল। সেই অবস্থায় মানুষ যদি তৃণমূলকে আগের তুলনায় বেশি হারে ভোট দেয়, তাহলে বুঝতে হবে প্রতিষ্ঠানের পক্ষেই আস্থা রয়েছে। সেই আস্থা ধরে রাখতে এবার প্রশাসনকেও কোমর বেঁধে নামতে হবে । গত লোকসভা ভোটে বাংলায় তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে ভোটের ফারাক ছিল ৩ শতাংশ। এবার তা বেড়ে ৭ শতাংশ হয়েছে। বিজেপির ভোট গত লোকসভার তুলনায় ৩ শতাংশ কমেছে। তৃণমূলের ভোট ২ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪৫.৭৬ শতাংশ।
অনেকের মতে, সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা তৈরিতে হাওয়া দিয়েছিলেন প্রশাসনেরই অনেকে । মহার্ঘ ভাতা ইত্যাদি নিয়ে প্রশাসনের একাংশ ক্রমাগত সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করে গেছেন বলেও নবান্নের শীর্ষ স্তরের ধারণা। এবার সেই কারণেই ঝাঁকুনি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে। লোকসভা ভোটের মধ্যে এবার বেশ কিছু জেলা শাসক, অফিসার এবং পুলিশ কর্তাকে তাঁদের পদ থেকে সরিয়েছিল নির্বাচন কমিশন ।
সূত্রের দাবি, মঙ্গলবার নবান্ন সভাঘরে বৈঠকের আগে সোমবার সেই সব অফিসারদের মধ্যে অনেককেই তাঁদের পুরনো পোস্টিংয়ে ফেরানো হবে । রাজ্য পুলিশের ডিজি পদে ফের আনা হতে পারে পুলিশ কর্তা রাজীব কুমারকেও। তার পর ১১ তারিখের বৈঠকে সব দফতরের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি, সচিব, বিভাগীয় প্রধান ও জেলা শাসক, পুলিশ সুপারদের ডাকা হয়েছে। নবান্ন কর্তাদের মতে, ওই বৈঠকে প্রশাসনের অনেক অফিসার হয়তো মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা পেতে পারেন। কিন্তু অনেকের কপালে অন্য কিছুও জুটতে পারে। তবে এ ব্যাপারে আগাম জল্পনা ঠিক হবে না ।
Social