বাধা কি ‘‌মাওবাদী’‌ তকমা? অর্ণব দামের গবেষণা ঘিরে অনিশ্চয়তা

Prabir Mondal
2 Min Read

টুডে নিউজ সার্ভিস, বর্ধমানঃ বাধা কি ‘‌মাওবাদী’‌ তকমা? অর্ণব দামের গবেষণা ঘিরে অনিশ্চয়তা!বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের পিএইচডিতে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সোমবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেয়, বিশেষ কারণে ইতিহাসের পিএইচডি কোর্সে ভর্তি আপাতত পিছিয়ে দেওয়া হল। সেখানে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ইতিহাসের পিএইচডির জন্য মেরিট-বেসড কাউন্সেলিং হচ্ছে না। কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আনঅ্যাভয়েডবল সারকামস্ট্যান্সেস।’

২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মাওবাদীদের একটি দল হামলা চালায় শিলদায় ইএফআর শিবিরে। ইএফআর জওয়ানদের খুনের পাশাপাশি ওই শিবির থেকে ইনসাস, কালাশনিকভ সহ প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র লুট করে মাওবাদীরা। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত অর্ণব ওরফে ‘‌বিক্রম’‌ গ্রেফতার হয় এবং বিচারে তাঁর যাবজ্জীবন সাজা হয়। আপাতত অর্ণবকে রাখা হয়েছে হুগলি সংশোধনাগারে। সেখানেই উঁচু পাঁচিলের আড়ালে অর্ণব লেখাপড়ায় মন দেন। সিদ্ধান্ত নেন ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করার। সেই মতো গত ২৬ জুন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫০ জনের সঙ্গে তিনিও পিএইচডি করার জন্য ইন্টারভিউ দেন। গত সপ্তাহেই রেজাল্ট বেরোয়, তালিকায় প্রথমেই অর্ণব দামের নাম। মঙ্গলবার ৯ জুন অন্যদের সঙ্গে তাঁর ভর্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এরপরেই তৈরি হয় সমস্যা‌।

প্রশ্ন উঠছে এমন কী ঘটল, যার জন্য ইতিহাসের এই ভর্তির প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে অর্ণবের ভর্তি আটকাতেই কি এই পদক্ষেপ? মাথায় মাওবাদী তকমাটাই কি তাঁর পড়াশোনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে? এবিষয়ে রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি জানিয়েছেন, তিনি খোঁজ না নিয়ে এবিষয়ে বলতে পারবেন না।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য গৌতম চন্দ্র এবিষয়ে বলেন, “জেল-সুপারের আবেদনের ভিত্তিতে অর্ণবকে ইন্টারভিউয়ে বসার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অর্ণব মাওবাদী কি না তা আমাদের জানা নেই। সেটা সংবাদমাধ্যমে দেখেছি। অর্ণবের পিএইচডি করার অনুমোদন রাজ্য সরকার দিয়েছে কিনা, কিংবা ৬ মাসের ‘কোর্স ওয়ার্ক’ কীভাবে করবে, তা জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হবে। কারণ এক্ষেত্রে সুরক্ষা ও নিরাপত্তার প্রশ্ন রয়েছে।”

জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি স্বরাজ ঘোষ বলেন, ‘‌রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি মাওবাদীদের মূল স্রোতে ফেরানোর জন্য সবচেয়ে বেশি আগ্রহী। তাই আমরা চাই নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে গবেষণার সুযোগ দেওয়া হোক। যদি সত্যিই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় এই ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তার আমরা প্রতিবাদ জানাবো।’‌ এএফআইয়ের রাজ্য কমিটির সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন, ‘‌ছেলেটির মেধার ভিত্তিতে যা যা প্রাপ্য তা ওঁর পাওয়া উচিত।’‌

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *