পাপু লোহার, পানাগড়ঃ পানাগড়ের দানবাবা প্রাঙ্গণে দানবাবা ওরফে সৈয়দ পাহাড়ি শাহ-র উরস উৎসব। উৎসবকে ঘিরে প্রস্তুতির কাজ চলছে জোর কদমে। আগামী মার্চ মাসের ৯ তারিখ থেকে শুরু মেলা চলবে ১০ দিন। লোকমুখে শোনা যায় ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের শেষ দিকে বেশ কিছু ফকির ঈশ্বরের বাণী প্রচারে ও মানুষের কল্যাণে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াতেন। তেমনই একজন হলেন সৈয়দ পাহাড়ি শাহ ওরফে দানবাবা। শোনা যায় পানাগড়ের এলাকায় এলাকায় তিনি ঘুরতেন এবং মানুষের কাছে ঈশ্বরের বাণী প্রচার করতেন। দিনের শেষে কাঁকসায় বর্তমানে যেখানে দানবাবা মাজার আছে সেখানেই তিনি রাত্রি যাপন করতেন। এলাকার মানুষজন জানান, বাবা কাউকে ফেরাতেন না। ভক্তরা তাঁকে যা কিছু দিতেন সবই তিনি দান করে দিতেন। যার কারণে তাঁর নাম হয় দানবাবা। পরে ১৯৬০ সালে তিনি দেহ রাখলে এলাকার মানুষ ওই জায়গায় তাঁকে সমাধিস্ত করেন। সেই সমাধীর উপর তৈরি করা হয় একটি মাজার। সেই মাজারটি দীর্ঘদিন ধরে ভগ্নপ্রায় অবস্থায় ছিল বর্তমানে দান বাবার নতুন যে কমিটি সেই কমিটি সেখানে একটি নতুন মাজার তৈরি করে তার কাজ প্রায় শেষের মুখে কারণ হাতে গোনা কয়েকটা দিন তারপর শুরু মেলা। আর সেই কারণেই জোরকদমে চলছে মাজারের সংস্কারের কাজ। কাঁকসার সুশান্ত মল্লিক জানান দান বাবার মাজারে প্রায় আসেন , তার মতো বহু লোক প্রতিদিনই আসে বাবাকে প্রনাম করতে ও তাদের মনস্কামনা জানাতে।
তিনি ছোট থেকে এই মাজারে আসতেন সেই মাজারটি আগে প্রায় ভগ্নপ্রায় অবস্থায় ছিল কিন্তু নতুন কমিটি আসার পর নতুনভাবে সেজে উঠেছে দান বাবার মাজার। সুশান্ত মল্লিক জানান দান বাবার মেলার নতুন কমিটির পিরু খান ও কমিটির অন্যান্য সদস্যদের উদ্যোগে এই নতুন মাজার তৈরি হলো, কমিটির পাশাপাশি পানাগড় গ্রাম, কাঁকসা, মোল্লাপাড়া, মিরেপাড়া ছাড়াও এলাকার সমস্ত গ্রাম এর উদ্যোগে আবারও নতুন ভাবে সেজে উঠছে দান বাবা।
মেলা কমিটির সদস্য সেখ আজগর আলী জানান হাতে গোনা কয়েকটা দিন তাই জোরকদমে চলছে মাজারের সংস্কারের কাজ। এই মেলা পশ্চিম বর্ধমানের সবথেকে বড় মেলা আমরা চাই আগামী দিনে এই মেলা রাজ্যের বড় দশটা মেলার মধ্যে অন্যতম মেলা হোক দান বাবা মেলা। এবারের মেলা আমরা সমস্ত রকম কোভিড এর বিধি নিষেধ মেনেই মেলা করানো হবে।আর এই দান বাবার মেলা সকল জাতি-ধর্ম-বর্ণ মিলে এক উৎসব পালন করে এলাকাবাসী।
দান বাবা মাজারের খাদিন তাহের আলী মিদ্দা বলেন, কারও কোন সমস্যা থাকলে বাবার পছন্দের ওই সব জিনিস নিয়ে বাবার কাছে মানত করেন। পরে ফল পেলে বাবার সমাধিতে নতুন চাদর দেন। প্রতি বছর মার্চ মাসে বাবার সমাধিস্থলের পাশে মেলা বসে। আটদিন ধরে ধুমধাম করে হয় উৎসব। শুধু পানাগড়ের মানুষই নয়, রাজ্য ছাড়িয়ে ভিন রাজ্য থেকেও ভক্তরা ভিড় জমান ।