রাজিয়া সুলতানা ঈশিতার ঃঃ আবু সাঈদ-এর গবেষণা ও সম্পাদনায় প্রকাশিত হলো ‘মুক্তিযুদ্ধে রেডিও’।
মুক্তিযুদ্ধে সময় রেডিওর ছিল একমাত্র গণমানুষের গণমাধ্যম। যা মানুষ পেত সাহস, শক্তি, অনুপ্রেরণা ও উদ্দীপনা। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে ছিল বাংলাদেশের ‘মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় ফ্রন্ট’ কিংবা ‘দ্বাদশ সেক্টর’। মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষের একমাত্র নির্ভরযোগ্য ভরসা ছিল রেডিও।
এই সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র ছাড়াও বিবিসি বাংলা,আকাশবাণী , ভয়েস অব আমেরিকা, রেডিও অস্ট্রেলিয়া, রেডিও জাপানসহ নানা রেডিও অনেক ভূমিকা পালন করেন। সেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে লিখেছেন ২৬জন লেখক. গবেষক, শিল্পী ও সাংবাদিক। প্রবন্ধ, স্মৃতি ও দলিলপত্র নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে আবু সাঈদ এর গবেষণা, গ্রন্থনা ও সম্পাদনায় ১৯২ পৃষ্ঠায় ‘মুক্তিযুদ্ধে রেডিও’। বইটি প্রকাশ করে প্রীতম প্রকাশ। প্রচ্ছদ করেন শিল্পী নিয়াজ চৌধুরী। বইটি পরিবেশক হিসেবে আছে স্বপ্ন ’৭১ প্রকাশন ও ভারতের উদার আকাশ।
‘মুক্তিযুদ্ধে রেডিও’–র সূচিপত্র
‘৭ মার্চ ও বাংলাদেশ বেতার’, উপরে প্রবন্ধ লিখেছেন আশফাকুর রহমান খান, প্রিয়জিৎ দেবসরকার ও ইসলাম খান লিখেছেন ‘বেতারে পশ্চিম পাকিস্তানি পাঞ্জাবি সাংবাদিকদের ভূমিকা’, সঞ্জিত দত্ত ‘কৃষ্ণনগরের ওল্ড হিন্দু ছাত্রাবাসে স্বাধীন বাংলা বেতারের ট্রান্সমিটার’, ড. এ কে এম শাহনাওয়াজ : ‘মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র এবং সংস্কৃতিকর্মীদের ভূমিকা’, ড. মো. এমরান জাহান: ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি গণমাধ্যম: প্রসঙ্গ বিবিসি রেডিও’, ড. মোহাম্মদ মাহবুবুল হক: ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচারিত’, মুহাম্মদ লুৎফুর হক: ‘রেডিও যখন হাতিয়ার’, জয় বাংলা বেতার কেন্দ্র নিয়ে আনোয়ার হোসের শিকদার, মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ‘ভূঁইয়ার স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে ৪৮ ঘণ্টা,সাজেদুল আলম-সিরাজগঞ্জের জয়বাংলা বেতার কেন্দ্র ও আবু সাঈদ লিখেছেন- শোনো একটি মুজিবরের..গানটি যেভাবে জন্ম।
‘স্মৃতিতে রেডিও’ বিভাগে লিখেছেন, সেই সময়ে বিবিসি বাংলায় কর্মরত ছিল কবি সৈয়দ শামসুল হকের লেখা-সে এক দারুণ সময় ছিল আমার জন্যে; কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন: ‘বাবা রেডিওর খবর শোনার জন্য অপেক্ষা করতেন’, কবি শামীম আজাদ: ‘শক্তির আকবর: এক অবিস্মরণীয় বেতার কেন্দ্র’, মেজর জেনারেল (অব.) বীর প্রতীক মাসুদুর রহমান: ‘রেডিওতে স্বাধীনতা ঘোষণা শোনার পর উত্তেজনায় লাফিয়ে উঠি’, মুক্তিযোদ্ধা ডা. এম এস এ মনসুর আহমেদ: ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় রেডিও’,ফারাহ দিবা আহমেদ: ‘মুক্তিযুদ্ধে রেডিও আমার ছোট জীবনে নানা প্রভার ফেলেছিল’।
শব্দসৈনিক বিভাগে বেলাল মোহাম্মদ: ‘শোনেন বলি নতুন করে পুরান ঘটনা’, আ.ম. শারফুজ্জামান: ‘বিমান হামলা ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’, অজিত রায়: ‘একাত্তরে রেডিও বিজয়ের সেই দিনে কেবল চা খেয়েই কাটিয়েছিলাম’, তপন মাহমুদ: ‘যেভাবে যুক্ত হলাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে’, আখতার হুসেন: ‘এর চেয়ে গৌরবের আর কী হতে পারে!’ দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় ‘তোমারই হোক জয়’; উপেন তরফদার–আকাশবাণীর ‘সংবাদ বিচিত্রা’; পঙ্কজ সাহা-অনুষ্ঠানের নাম দিয়েছিলাম, ‘গাছের পাতায় বৃষ্টির শব্দ’; স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে সম্প্রচারিত স্লোগান ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতাদের পরিচিতি।
বইটির সম্পর্কে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে রেডিও একটি অতিব গুরুত্বপূর্ণ বই। যা প্রকাশিত হয়ে আমাদের ইতিহাসকে ঋদ্ধি করেছে। বইটি অত্যাবশ্যক ছিল। দলিল হিসেবে থাকবে। অসংখ্য ধন্যবাদ বইটি গবেষক, সম্পাদক আবু সাঈদকে।
Social