পাপু লোহার, কাঁকসাঃ অবশেষে পানাগড়ের বাড়িতে ফিরে সংবাদমাধ্যমকে সে জানালো ইউক্রেনের ভয়াবহ পরিস্থিতি এবং ইউক্রেন থেকে কিভাবে সে বাড়ি ফিরল সেই ভয়ানক অভিজ্ঞতার কথা। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে সোমবার বিকালে বাড়ি ফিরল পানাগড় বাজারের বাসিন্দা ডাক্তারি পড়ুয়া জ্যোতি সিং। মেয়ে বাড়িতে ফিরে আসায় খুশি জ্যোতি সিং-এর বাবা মা ও তার পরিবার আত্মীয় স্বজনরা। সকলেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন অনেক প্রতিক্ষার অবসানের পর ঘরের মেয়ে ঘরে ফিরল।
জ্যোতি সিং জানিয়েছেন, তার মত অনেক ভারতীয় পড়ুয়া সেখানে এখনো আটকে রয়েছে। যদি যুদ্ধের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার নেয় তবে তাদের সেখান থেকে বার করা কঠিন হয়ে পড়বে। তবে ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে জ্যোতি। জ্যোতি জানিয়েছে ইউক্রেনে থাকার সময় সবথেকে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিলো খাবার ও পানীয় জলের। কারণ, ইউক্রেন সরকার কোনোভাবেই তাদের কোনো বিষয়ে সহযোগিতা করছিলো না। ভারতীয় দূতাবাস থেকে তাদের বাসে করে রোমানিয়া বর্ডার পর্যন্ত পৌঁছানোর সমস্ত ব্যবস্থা করার পাশাপাশি ভারতে ফেরার জন্য বিমানের ব্যবস্থাও করে এবং বাসে করে যখন তাঁরা রোমানিয়া বর্ডারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় তখন তাদের বাসে ভারতের জাতীয় পতাকা লাগানোর কথা জানানো হয়। সেই মতো তাঁরা বাসের সামনে ভারতের জাতীয় পতাকা লাগিয়ে বাসে চেপে রোমানিয়া বর্ডার পৌঁছায়। কারণ, তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল রাশিয়ান সেনা ভারতীয় পতাকা দেখলে তাঁরা সেই সমস্ত বাসে কোনোরকম ক্ষতি করবে না। সেই ভরসা নিয়ে তারা সাহসের সাথে রোমানিয়া বর্ডার পর্যন্ত পৌঁছায়। সোমবার বিকালে জ্যোতি সিং বাড়ি ফেরার পরই আনন্দে মেতে ওঠেন পরিবারের সদস্যরা।
পেশায় শিক্ষক জ্যোতির বাবা অশোক সিং জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরে তিনি এবং তার পরিবার নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেননি সর্বসময় মেয়ের বিষয়ে চিন্তা ছিল তাঁদের। মেয়ে বাড়ি ফিরে আসায় অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছেন তাঁরা। তবে পরিস্থিতি যদি ইউক্রেনে আগামী দিনে স্বাভাবিক হয়। তারপর ফের ওই দেশে পড়াশোনা করার জন্য মেয়েকে পাঠাবেন কিনা তা ভেবে দেখবেন তিনি।
জ্যোতি সিংয়ের মা প্রভা কুমারী জানান, আমার মেয়ে যেমন বাড়ি ফিরে এসেছে সে রকম আরও অনেক মায়ের সন্তান সেখানে আটকে আছে ভারত সরকারের কাছে তিনি আবেদন রেখেছেন সেখানকার পরিস্থিতি ভয়ানক হয়ে ওঠার আগেই যেন তাঁদের ভারতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে।