পাপু লোহার, বুদবুদঃ দিদি সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি অথচ সুরক্ষিত নয় দলেরই কর্মীরা দলের মধ্যেই চলছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচী সফল করতে গিয়ে এবার দলের কর্মীদের ফেলে পেটানোর অভিযোগ খোদ পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের বিরুদ্ধে। বুদবুদের এই ঘটনায় পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামী সহ দুই জন হাসপাতালে ভর্তি। দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে দাবি জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের। সুর চড়ালো বিজেপি।
বুধবার দিদির রক্ষাকবচের কর্মসূচীর জন্য দলীয় পতাকা লাগাতে গিয়ে খোদ দলের উপপ্রধান ও তার দলবলের হাতে মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হলো তিন তৃণমূল কর্মীকে। বৃহস্পতিবার বুদবুদের গলসি এক নম্বর ব্লকের অন্তর্গত বুদবুদ এলাকায় দিদির রক্ষাকবচ কর্মসূচী আর যেখানে থাকার কথা রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ, বুদবুদ বাজারে এই কর্মসূচিকে সফল করার ডাক দিয়ে তিন তৃণমূল কর্মী পতাকা লাগাচ্ছিলেন, আচমকাই তৃণমূল পরিচালিত বুদবুদ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রুদ্রপ্রসাদ কুন্ডু ওরফে মনা কুন্ডু ও তার দলবল বুদবুদ বাজারে এসে ঐ তিন তৃণমূল কর্মীকে ব্যাপক মারধর করে বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম তিনজনকে তড়িঘড়ি মানকর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, জখম তিন তৃণমূল কর্মীর মধ্যে একজন স্থানীয় বুদবুদ পঞ্চায়েত সদস্য রেখা সাউয়ের স্বামী রাকেশ সাউ।
সূত্রে জানা যায়, যে সময় তিন তৃণমূল কর্মীকে মারধর করছে পঞ্চায়েত উপপ্রধান রুদ্রপ্রসাদ কুন্ডু ও তার দলবল তার একটু আগে পঞ্চায়েত উপপ্রধানের সাথে অন্য একটি বিষয়ে মিটিং ও করেছেন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য রেখা সাউ। গোটা ঘটনায় দিদির রক্ষা কবচ কর্মসূচী শুরুর আগে বেশ বিড়ম্বনাতে তৃণমূল শিবির। যদি দলের নেতাদের হাতে দলের পতাকা লাগানোর জন্য মার খেতে হয় তাহলে এই দলটা আর করবো কিনা সেটা নিয়ে আরও একবার ভাবতে হবে বলে মন্তব্য আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের।
জখম তিন দলীয় কর্মী গলসি এক নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি জনার্দন চ্যাটার্জীর অনুগামী, জনার্দন চ্যাটার্জীর হয়ে কাজ করা যাবে না এই ফতোয়া দিয়ে তৃণমূলের উপপ্রধান রুদ্রপ্রসাদ কুন্ডু হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। গোটা ঘটনায় টানটান উত্তেজনা বুদবুদ এলাকায়। দলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে উপপ্রধানের এই দাদাগিরির আচরণ নিয়ে জানানো হয়েছে বলে জানান, গলসি এক নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি জনার্দন চ্যাটার্জী। এর আগেও নানা অভিযোগ ছিল তৃণমূল পরিচালিত বুদবুদ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রুদ্রপ্রসাদ কুন্ডুর বিরুদ্ধে। আবাস যোজনার বাড়ি চাইতে গিয়ে এই উপপ্রধানের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছিল বুদবুদের সুকান্ত পল্লী পূর্ব পাড়ার মানুষজনকে, এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ফের দলীয় কর্মীদের মারধর করার ঘটনাকে ঘিরে এখন সাধারণ মানুষকে দিদির রক্ষাকবচ দিতে খোদ দলীয় কর্মীরা সুরক্ষাহীন হয়ে পড়াতে বিড়ম্বনায় ঘাসফুল শিবির।
এই ইস্যুতে সুর চড়িয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব, কটাক্ষ তৃণমূলের কর্মসূচির পাশাপাশি দলীয় নেতৃত্বকে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূল উপপ্রধানের হাতে খোদ দলের কর্মী তো বটেই পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামীকে ব্যাপক মারধরের ঘটনায় ব্যাপক বিড়ম্বনাতে তৃণমূল। অন্যদিকে উপপ্রধান রুদ্রপ্রসাদ কুন্ডু অভিযোগ করেছেন যারা তৃণমূলের হয়ে পতাকা লাগাতে এসেছিল তারা কেউ তৃণমূল কর্মী নয় তারা বিজেপি কর্মী। গত নির্বাচনে এই সমস্ত বিজেপি কর্মীদের হাতেই বুদবুদ অঞ্চলে তৃণমূল কর্মীরা মার খেয়েছে তাই এদেরকে কখনোই দলে মেনে নেওয়া যায় না বলে সুর চড়িয়েছেন উপপ্রধান। তিনি বলেন মারপিটের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা কি নাটকীয় ঘটনা সাজিয়ে এলাকা উত্তপ্ত করছে, এই সমস্ত বিজেপি কর্মীরা।
সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছে যে দলের কর্মসূচি সুরক্ষাকবচ অথচ দলের কর্মীরাই সুরক্ষিত নয় তাহলে দলীয় কর্মসূচি দিদির সুরক্ষাকবজ কিভাবে সফল করবে তৃণমূল কংগ্রেস।
Social