টুডে নিউজ সার্ভিস, বর্ধমানঃ হাজারও জটিলতা কাটিয়ে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে বর্ধমানের তালিত সাঁই কমপ্লেক্সে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবতের সভা হলো রবিবার। এদিন সংঘের প্রধান বলেন, “সংঘের একমাত্র লক্ষ্য হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করা।” তিনি স্পষ্ট করেন যে, সংঘের মূল কাজ হল সমাজকে একত্রিত রাখা এবং এমন মানুষ গড়ে তোলা, যারা ঐক্যবদ্ধ জীবনযাপন করবে।
তিনি আরও বলেন, “হিন্দু সমাজই ভারতের দায়িত্বশীল সমাজ। এই দেশের একটি স্বতন্ত্র স্বভাব রয়েছে, যা বহুবিধ সংস্কৃতি ও মতাদর্শকে গ্রহণ করে এগিয়ে যায়।” তার মতে, যারা ভারতের এই বৈচিত্র্যময় স্বভাবের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারেনি, তারা আলাদা দেশ গঠন করেছে।
সংঘের কার্যপ্রণালী সম্পর্কে তিনি জানান, “এটি কোনো আনুষ্ঠানিক সদস্যপদভিত্তিক সংগঠন নয়। কোনো ফি নেই, সদস্যপদের বাধ্যবাধকতা নেই, যে কেউ এসে সংঘের কাজ বুঝতে পারেন এবং ইচ্ছা হলে চলে যেতে পারেন।” সমাজের বৃহত্তর স্বার্থেই সংঘের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, “ভারতের প্রকৃতির সঙ্গে সমাজের একটি বিশেষ গোষ্ঠী মানিয়ে নিতে পারে না। তাই তারা আলাদা দেশ বানিয়েছে। কিন্তু হিন্দুরা গোটা বিশ্বের বৈচিত্র্যকে আপন করে নিয়েছে। আমরা প্রায়শই বলি, বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য। কিন্তু হিন্দুরা বোঝে বৈচিত্রের মধ্যে আসল একতা। ভারতের মহারাজা বা সম্রাটদের কথা কেউ মনে রাখেনি। সবাই মনে রেখেছেন যিনি ১৪ বছর বনবাসে গিয়েছিলেন তাঁকে। মোহন ভাগবত বলেন, এটাই ভারতের বৈশিষ্ট্য। এই বৈশিষ্ট্য যিনি মেনে চলেন, তিনি প্রকৃত হিন্দু। গোটা দেশের বৈচিত্র্যকে এক সুতোয় বেঁধে রাখে হিন্দুরাই।”
একই সঙ্গে সংঘ প্রধান বলেন, “তবে কাউকে আঘাত দেওয়ার মতো কাজ কখনোই আমরা করব না। শাসকপক্ষ, প্রশাসন তাদের কর্তব্য পালন করে। দেশের জন্য কাজ করতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।” রবিবার তালিতে মোহন ভাগবতের সমাবেশে রাজ্য বিজেপির সামনের সারির অনেক নেতা হাজির ছিলেন। বিজেপি- রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার, সাংসদ তথা রাজ্য সহ-সভাপতি জগন্নাথ সরকার, সাংসদ তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় মাহাতো, বিধায়ক তথা আর এক সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সতীশ ঢোন্ড তাঁদের অন্যতম। সভা শেষে সুকান্তের সঙ্গে মোহন ভাগবতের বেশ কিছুক্ষণ আলাদা কথাবার্তা হয়।
দিলীপ ঘোষ বলেন, বাংলাদেশে পরিস্থিতি নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত ওই দেশের মানুষরা কিভাবে বাঁচবে সেটাই বড় চিন্তার বিষয়। এই সভা করা নিয়ে বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়। আদালত পর্যন্ত গড়ায় বিষয়টি। অবশেষে অনুমতি পায়। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে দিলীপ ঘোষ বলেন, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ ১০০ বছর ধরে বিভিন্ন বাঁধা অতিক্রম করে দেশ গঠনের কাজ করে চলেছে। এই ধরনের ছোট খাটো বাঁধা কোনো বিষয় নয়।
