টুডে নিউজ সার্ভিসঃ ভুয়ো ভোটার ধরতে এবার কি আধার কার্ড ও এপিক কার্ড এর সংযুক্তিকরণ? ভোটের বুথে ঢুকে ইভিএম এর বোতাম টেপার আগে ভোট কেন্দ্রের দরজাতে বায়োমেট্রিক হাজিরা দিতে হবে ভোটারকে? নির্বাচন কমিশনের সদর দপ্তর নির্বাচন সদনের দিকেই এই একরাশ প্রশ্ন নিয়ে তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ। নির্বাচন কমিশন বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিল, এদিনের বৈঠকে আইনগত দিকগুলো খতিয়ে দেখা হয়েছে। প্রযুক্তিগত বিষয়গুলি আদার কর্তৃপক্ষের আইন বিভাগ এবং নির্বাচন কমিশনের আইনজ্ঞরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বিচার বিশ্লেষণ করবেন।আজ দিল্লিতে নির্বাচন সদনে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব, সংসদীয় মন্ত্রকের সচিব, ইউআইএআই-এর সিইউ এবং নির্বাচন কমিশনের আইন বিভাগীয় আধিকারিকদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।বৈঠকে পৌরহিত্য করেন দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে সংবিধানের আর্টিকেল ৩২৬ এর ১৯৫০ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ২৩(৪), ২৩(৪) এবং ২৩ (৫) ধারা অনুযায়ী দেশের একজন নাগরিকেরই শুধুমাত্র ভোটাধিকার আছে এবং আধার কার্ড সেই নাগরিকের পরিচয় নিশ্চিত করে। আর ভুয়া ভোটার ধরতে নাগরিকের সেই সুনির্দিষ্ট পরিচয়কেই হাতিয়ার করতে চাইছে কেন্দ্রের শাসকদল।
প্রসঙ্গত, ভুয়ো ভোটার চিহ্নিত করতে ভোটকেন্দ্রে আধার কার্ড এবং এপিক কার্ডের যে সংযুক্তিকরণের চর্চা বেশ কিছুদিন ধরে চলছে এবং কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন কমিশনে এ নিয়ে দাবি-দাওয়া জানানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ড সংযুক্তিকরণের পর একজন ভোটার ভোটকেন্দ্রে ঢুকে ভোট দিতে পারবেন। এ প্রসঙ্গে সংবিধানের আর্টিকেল ৩২৬ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের অতীত একাধিক নির্দেশের নিদর্শনও বৈঠকে তুলে ধরেন নির্বাচন কমিশনের আইনজ্ঞরা। কমিশন জানিয়েছে আইনগত দিক নিয়ে আজকের বৈঠকে বিশদ আলোচনার পর এবার প্রযুক্তিগত বা টেকনিক্যাল দিকগুলি নিয়ে আধার কর্তৃপক্ষের আইন বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনের আইনজ্ঞরা বিশদ আলোচনা করবেন।
আপাতত দীর্ঘ আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই আধার-এপিক সংযুক্তিকরণের বিষয়টি রূপায়িত হবে। এদিনের বৈঠকে নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য বা তথ্যপঞ্জি যাতে সুরক্ষিত থাকে সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে বলে জানায় নির্বাচন কমিশন। কারণ আধার কার্ডের মাধ্যমে একজন নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যপঞ্জি সহজেই বের করা যায়। সে ক্ষেত্রে আধার কার্ডের সংযুক্তিকরণ এর ক্ষেত্রে ওই নাগরিকের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ঝুঁকির বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে কেন্দ্রকে। ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়টি যেকোনো ভারতীয় নাগরিকের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে ফলে সে ক্ষেত্রে গোপনীয়তা রক্ষা করাটা মূল বিচার্য বিষয় বলেও বৈঠকে আলোচনা হয়। সব বিষয়ে খতিয়ে দেখে ও বিবেচনা করে সংবিধান এবং আইনের খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করার পর নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় সরকার যৌথভাবে আধার ও এপিক কার্ড সংযুক্তিকরণের সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানানো হয়েছে।