জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, আসানসোলঃ নিয়ামতপুর চেম্বার অফ কর্মাসের সদস্য সন্দীপ দোকনিয়ার অভব্য আচরণের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে কুলটির নিয়ামতপুর বাজার অঞ্চলে সিটু সমর্থিত মুটিয়া মজদুর ইউনিয়নের পক্ষ থেকে অনির্দিষ্টকালীন কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে।
ইউনিয়নের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে গত ১৯ মে তাদের চারজন মুটিয়া মজদুর অভিযুক্ত সন্দীপ দোকানিয়ার গুদামে মাল খালাসের কাজ করছিল। পরে সেখানে সন্দীপ বাবু এসে তাদের অন্য একটি কাজের নির্দেশ দিয়ে অন্যত্র যেতে বলে। কিন্তু ওই চারজন মজদুর অন্যত্র যেতে অস্বীকার করে। তার নির্দেশ অমান্য করায় সন্দীপ বাবু ক্ষুব্ধ হন ও তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এমনকি তাদের কাজ থেকে তাড়িয়ে দেন। পাশাপাশি তাদের হুমকি দিয়ে বলেন এলাকার কোনো নেতার কাছে তারা গেলেও তিনি তাদের প্রাপ্য অর্থ দেবেননা। একই সাথে তাদের ওই অঞ্চলে ওই চারজন মজদুর যাতে কোনো কাজ করার সুযোগ না পায় সেই ব্যাপারে তিনি সচেষ্ট হবেন।
এই পরিস্থিতিতে সন্দীপ বাবু গত ২০ মে বাইরে থেকে শ্রমিক এনে মাল বোঝাই ও খালাস করার কাজ শুরু করলে শ্রমিকদের ক্ষোভ চরমে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে সিটু সমর্থিত মুটিয়া মজদুর ইউনিয়নের পক্ষ থেকে অনির্দিষ্টকালীন কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়। সমস্ত এলাকা জুড়ে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। চরম সমস্যায় পড়ে এলাকার ব্যবসায়ীরা।
মজদুরদের বক্তব্য প্রকৃত কারণ না দেখিয়ে চেম্বারের পক্ষ থেকে ওই চারজন মুটিয়া মজদুরকে কালো তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। ফলে পরিবার নিয়ে তারা চরম সমস্যায় পড়েছে। তাদের দাবি অবিলম্বে তাদের কাজে ফিরিয়ে নিতে হবে। পাশাপাশি তাদের আরও দাবি বহিরাগত শ্রমিক এনে কোনো কাজ করা যাবেনা।
প্রসঙ্গত অসংখ্য ছোটো-বড় কোম্পানির মালপত্র কারখানা থেকে সরাসরি এখানকার বিভিন্ন গুদামে আসে এবং বাজারজাত হয়। মাল খালাস ও বোঝাই করার জন্য মুটিয়াদের ব্যস্ততা লেগেই থাকে। কিন্তু এই কর্মবিরতির ফলে শ্রমিকরা যেমন বিপদে পড়েছে তেমনি বাজারে মালপত্রের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।
এদিকে চেম্বারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে চারজন মজদুরকে কালো তালিকাভূক্ত করা হয়নি। উভয়পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ওই চারজন মজদুরের মাধ্যমে কাজ না করানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা যাচ্ছে পরিস্থিতির গুরুত্ব উপলব্ধি করে সমস্যার সমাধানের জন্য ২২ মে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ও নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ আধিকারিক সক্রিয় উদ্যোগ নেন। তাদের উপস্থিতিতে মুটিয়া মজদুর ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনা হয়। আলোচনা সদর্থক হওয়ায় মুটিয়া মজদুররা ঘোষিত অনির্দিষ্ট কালীন কর্মবিরতি তুলে নেন এবং কাজে যোগ দেন।
Social