Breaking News

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে লোকসভা নির্বাচনে ৪২-এ ৪২ জয়জয়কার সুনিশ্চিত

ফারুক আহমেদঃ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ্য নেতৃত্বে লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়জয়কার সুনিশ্চিত শুধু সময়ের অপেক্ষা। এবার ৪২-এ ৪২ করতে দৃঢ়সংকল্প নিয়ে এগিয়ে চলেছেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের সঙ্গে পদ্ধতিগত পার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু দলে নেত্রী একজনই, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সত্যিই কি পদ্ধতিগত পার্থক্য আছে? এই প্রশ্নের জবাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘পদ্ধতিগত পার্থক্য থাকতেই পারে। সেটা দলের জন্য স্বাস্থ্যকর। যদি না থাকে, তাহলে তো মিথ্যে বলা হবে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার দূরত্ব তৈরি হয়ে গেল। আমার সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত কোনও বিরোধ নেই। আমি তো বারবার বলি, এখনও বলছি, আমার গলা কেটে দিলেও ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ’, ‘তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ’, ‘জয় বাংলা’ স্লোগান বেরবেই। তৃণমূলে দুটো দল নেই। আর দুটো, তিনটে, চারটে, যে কটা দলের কথাই বলুন না কেন, আমার কাজ সব জায়গায় ঢুকে জোড়াফুল ফোটানো।’ সম্প্রতি এক মুখোমুখি ইন্টারভিউতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় দ্বন্দ্বের প্রশ্নে জবাব দিয়ে বলেন, ‘সারা বাংলা জুড়ে তৃণমূলের এত নেতা, কর্মী, সমর্থক। তাঁদের কারও সঙ্গে আমার কোনও দ্বন্দ্ব নেই। এটাই সবচেয়ে বড় কথা। এ বিষয়ে আমি তাঁদের ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা জানাই।’

বামফ্রন্টের আমলে পিছনের সারিতে চলে যাওয়া এই বাংলাকে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী আবার সামনের সারিতে অধিষ্ঠিত করেছেন, সেই লড়াইয়ের কথা বাংলার ঘরে ঘরে পাঠিয়ে দেওয়ার মাধ্যম হয়ে উঠেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার সাফল্য, মমতার আগামী দিনের কর্মসূচী প্রচারের মূল দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের এমুহূর্তে তুরুণ তুর্কী অপ্রতিরোধ্য সেনাপ্রধান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো তাঁর যুববাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, মানুষের কাছে যেতে, মানুষকে বোঝাতে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে যে উন্নয়ন যজ্ঞ চলছে, সেই উন্নয়নের বার্তা রাজ্যবাসীর কাছে পৌঁছে দিয়ে মমতার জয় সুনিশ্চিত করে তোলার পিছনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-এর অবদান কারও থেকে কম নয়। তাঁর দূর্বার ডাকেই তৃণমূলের হাত শক্ত করতে সমর্থনের জোয়ার বয়ে গিয়েছিল। তাইতো, যতই তলে তলে জোট গড়ুক সিপিএম-বিজেপী, মানুষ বুঝতে সমর্থ হয়েছিল, অত্যাচারী সিপিএম আর জুমলা বিজেপি আর নয়, বাংলার বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে যার হাত ধরে তাঁকেই বাংলার কুর্সিতে দরকার। যুব সংগঠনই দলের ভবিষ্যৎ। যুব সংগঠনের বৃদ্ধি না হলে, নতুন মুখ উঠে না এলে, যে-কোনও দলেই পচন ধরে। আর মানুষের পাশে, মানুষের কাছে গেলে, দলে নতুন সদস্যের অন্তর্ভুক্তি হতে বাধ্য। দলীয় সদস্যপদ নবীকরণ হওয়া মানেই দলের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়ে ওঠা। সেই সরল সাধারণ মন্ত্রই যুব নেতা হিসাবে রাজ্যের প্রতিটি যুব শাখার অন্দরে প্রবেশ করিয়ে দিতে পেরেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

বয়সে নবীন হলেও, রাজনৈতিক বিচক্ষণতার সার্থক বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে সমর্থ হয়েছেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। নেত্রীর দেখানো পথই তাঁর এগিয়ে চলার সোপান। তাই তো যুব সংগঠনের দায়িত্ব নিয়েই তিনি বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, শৃঙ্খলা আর অনুশাসনই দলের মূলমন্ত্র। বলেছিলেন দলের অন্দরে অশান্তি-বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত নয়। চূড়ান্ত করে দিয়েছিলেন যুবনেতা-কর্মীদের চলার পথ। তাঁর নির্দেশনামার প্রথমেই ছিল, মানুষের জন্য কাজ। বলেছিলেন, মানুষের জন্য জীবনপাত করুন, স্বার্থসিদ্ধি মানব না। রাজ্য সরকারের কর্মসূচি ও সাফল্যের কথা বুথে বুথে পৌঁছে দিতে হবে। যুব সংগঠনের মাধ্যমেই রাজ্যের তৃণমূল সরকারের সাফল্যের কথা গ্রামেগঞ্জে, শহর-শহরতলির অলি-গলি, তস্য গলিতে ছড়িয়ে পড়বে। রাজ্যের যুব সম্প্রদায়ের মধ্য দিয়ে যদি এই বার্তা মানুষের মনে প্রবেশ করানো যায়, তাঁর প্রভাব পড়বে বহুগুণ। দলের প্রতি, দলনেত্রীর প্রতি মানুষের বিশ্বাস দ্রুত বাড়তে থাকবে। দল বাড়বে। সরকারের উন্নয়নমুখী কাজের প্রচারে যোগ দিতে ভিন্ন ভিন্ন দল থেকে ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের মানুষও ভিড় জমাতে শুরু করবেন। তাঁদের দলে অন্তর্ভুক্তির জন্য ছাঁকনির কাজ করার গুরুদায়িত্ব নিতে হবে যুবকর্মীদের। আরও একটা বড় কাজ, ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে চলা। কেননা ছাত্র সংগঠনের পরের ধাপই যুব সংগঠন। ছাত্র নেতা-কর্মীদের যুবস্তরে নিয়ে আসারও তৈরি করার দায়িত্ব তো যুবনেতা-কর্মীদেরই।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, মূল সংগঠনের সঙ্গে নীতিগত ফারাক বা কোনও সংঘাত তিনি চান না। এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে সর্বস্তরে। মনে রাখতে হবে যুব সংগঠন দলের ডানহাত। এ হাত যত শক্ত হবে, দল ততটাই মজবুত হবে। কিন্তু মূল সংগঠনের সঙ্গে স্বার্থ-সংঘাত থাকা মানে দল নড়বড়ে হয়ে পড়া। যুব শাখার একটা বিশেষ দায়িত্ব থাকে। দলীয় নীতি মেনে সেইসব কাজের মাধ্যমেই দলকে শক্তিশালী করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। রাজ্যের উন্নয়নের প্রচারে মুখ একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেসে এক, দুই বা তিন বলে কিছু নেই। দলের শীর্ষে আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর নীচে আছেন কর্মীরা। আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নেত্রীর কর্মযজ্ঞকে সফল রূপায়ণে সহায়তা করব। সেই ব্রত নিয়েই তিনি এগিয়ে চলেছেন। যে মন্ত্রে তিনবার বিধানসভায়, পৌরসভা ও পঞ্চায়েত ভোটে বিপুল জয় এসেছে, সেই একই মন্ত্রে এবার লক্ষ্য লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ সচেতন নাগরিকগণের কাছে একাটাই দাবি নিয়ে বিজেপিকে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে হটিয়ে তাদের পতন সুনিশ্চিত করার।

গ্রামের উন্নয়নে তাঁকে দলনেত্রী যেভাবে কাজে লাগিয়েছেন, সেই মতোই তিনি দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়ে বিপুল কাজ করছেন। গ্রামে বিগত দিনে যে উন্নয়নের ঝড় বয়ে গিয়েছে, তা তিনি তুলে ধরছেন তাঁর যুববাহিনীর মাধ্যমে। বলছেন ভবিষ্যৎ কর্ম যজ্ঞের কথাও। এখন বিজেপির পতন সুনিশ্চিত করতে তিনি শোকসভা নির্বাচনে বিভিন্ন আসনে অংশ গ্রহণকারী প্রার্থীদের হয়ে জোরালো প্রচার চালিয়ে যাবেন। এবার ভোটেও কর্মীদের যে-কোনোও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন তিনি। বলেছেন, অসন্তোষ থাকলে দলের মধ্যেই আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নিতে। যুব সংগঠনের দায়িত্ব নিয়ে তিনি আদর্শ যুবনেতার পরিচয় বহন করতেই আগ্রহী ছিলেন আমরা সবাই দেখেছি। একন তিনি সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অনেক বড় দায়িত্ব কাঁধে। তিনি চান দুর্যোগ বা ঝড়ে প্রকৃত কাণ্ডারীর মতোই শক্ত হাতে হাল ধরতে। স্বচ্ছ প্রশাসন রাজ্যবাসীকে উপহার দিতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলার যুবরাজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বদ্ধপরিকর। যুবাদের অনুপ্রেরণার তিনিই উৎস। আবার রাজনীতিতেও সক্রিয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শক্ত হাতে হাল ধরেছেন।

২০২১ বিধানসভা ভোটেও তৃণমূল কংগ্রেসকে বিপুল ভাবে জিতিয়ে আনতে তিনিই প্রধান সেনাপতি ছিলেন। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসকে বাংলায় পুনরায় ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে তিনি সংগঠনকে ঢেলে সাজিয়ে ছিলেন। হ্যাট্রিক করতে তিনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরবর্তীকালে তিনিই মুখ্যমন্ত্রী হবেন, এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। বাংলার প্রতি প্রান্তে সংগঠন ও সদস্য সংখ্যা বাড়াতে দৃঢ় পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি। বাংলার কল্যাণে ও দেশের কল্যাণে যুব সম্প্রদায়ের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে আদর্শ ভারত গড়তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই দিদির যোগ্য উত্তরসূরি। তিনিই আলোর দিশা হয়ে উঠছেন।

এদিকে রদবদল করা হল তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনে। কয়েক মাস আগেই তৃণমূল ভবনে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের একটি সাংগঠনিক বৈঠকের আয়োজন করে সংগঠনকে জেলায় জেলায় সাজিয়ে তোলার আহবান জানালেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যু বসু ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মচারী সংগঠনের চেয়ারম্যান চিকিৎসক মানস ভুঁইয়া। ওই বৈঠকের পরেই সম্পূর্ণভাবে বদল আনা হয়েছিল তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের বিভিন্ন পদে। সেখানে রাজ্যের শাসকদলের প্রাথমিক শিক্ষা সেলের নতুন সভাপতি করা হয়েছে কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়কে। কার্যকরী সভাপতি করা হয়েছে পলাশ সাধুখাঁকে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি করা হয়েছে প্রীতম হালদারকে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক সংগঠনের জন্য কার্যকরী সভাপতি করা হয়েছে বিজন সরকারকে। অন্য দিকে পার্শ্ব শিক্ষক, এমএসকে, এসএসকে, শিক্ষামিত্র, শিক্ষাবন্ধু, মিড-ডে মিল কর্মীদের নিয়ে একটি নতুন সংগঠন শুরু করা হয়েছে। চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের নিয়ে যে সংগঠন তৈরি হয়েছে তার জন্য সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মইদুল ইসলামকে। নতুন এই সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি করা হয়েছে রবিউল ইসলামকে।
সিদ্ধান্ত হয়েছে, এবার থেকে সংগঠনে নতুন সদস্য হওয়ার জন্য কোনও টাকা দিতে হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের সংগঠনের ক্ষেত্রেও সাংগঠনিক বদল আনা হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এদিন নতুন দায়িত্বপ্রাপ্তদের নাম প্রকাশ করার সময় শ্রী ব্রাত্য বসু জানান, এবার ধর্মনিরপেক্ষ ও অসাম্প্রদায়িক দিক বিবেচনা করে এই নাম বাছাই করা হয়েছে৷ যাঁরা ময়দানে নেমে কাজ করতে পারবেন তাঁদেরকেই প্রধানের ভূমিকা দেওয়া হচ্ছে। জেলায় জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষা সংগঠনকেও বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে মতুন করে সাজানো হচ্ছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নেই। আগামীতে স্থায়ী উপাচার্য দায়িত্ব পেলে তবেই হবে ছাত্র ভোট। শিক্ষক সংগঠন মজবুত করতে রাজ্যের জেলায় জেলায় সম্মেলন করে গড়ে তোলা হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের মজবুত শিক্ষা সংগঠন। সামনে লোকসভার নির্বাচনে শিক্ষকদের বড় ভূমিকা পালন করতে হবে বিভেদকামী শক্তির পতন সুনিশ্চিত করতে। শিক্ষক ও অধ্যাপকদের ওপর নৈতিক দায়িত্ব থাকে সুস্থ সমাজ গড়তে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার শিক্ষা প্রসারে ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে। নতুন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে নয়া ইতিহাস রচনা করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার।

লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক উদার আকাশ।

About Prabir Mondal

Check Also

বাঘ গুনতে সুন্দরবনে বসছে ১৪৪৪টি ক্যামেরা

টুডে নিউজ সার্ভিসঃ বাঘের সংখ্যা জানার জন্য আবার সুন্দরবনের জঙ্গলে বসতে চলেছে ক্যামেরা। প্রতিবছর শীতের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *