লিখেছেন ৪ হাজারেরও বেশি কবিতা, ভাগ্যের পরিহাসে আজ সাধনবাবু নাপিত

Burdwan Today
2 Min Read

 

বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, নদীয়াঃ কথায় বলে যে রাধে সে চুলও বাঁধে তবে এমন কি কখনো শুনেছেন যে চুল কাটে সে কবিতাও লেখে ? হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন কবি সাধন প্রামাণিক পেশায় একজন নাপিত। চুল দাড়ি কাটাই তার প্রধান আয়ের পথ। সকাল থেকেই দোকান খুলে ছুরি কাঁচি নিয়েই তার কারবার। কারোর কাটতে হয় চুল কারওর বা দাড়ি। তবে চুল দাড়ি কাটার ফাঁকেই খাতা কলম নিয়ে তিনি বসে পড়েন কবিতা লিখতে।

নদীয়ার মাজদিয়ার বাসিন্দা পেশায় নাপিত সাধন প্রামাণিকের ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল একজন কবি হওয়ার। কিন্তু, ভাগ্যের পরিহাসে সংসারের বোঝা কাঁধে তুলে নিতে গিয়ে খুব বেশি দূর লেখাপড়া করা হয়নি তার। হাতে তুলে নিতে হয়েছিল চুলদাড়ি কাটার যন্ত্রপাতি। তবে কথাই বলে ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়, সেই কারণেই নিজের সেলুনে বসেই চুল দাড়ি কাটার পাশাপাশি তিনি লিখতে থাকেন একের পর এক কবিতা। দীর্ঘ ৪০ বছরে তিনি ৪ হাজারেরও বেশি কবিতা লেখেন। তার লেখা কবিতার চারটে বই ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে যার মধ্যে তিনটে ভারতবর্ষে এবং একটি ওপার বাংলায়। 

তিনি জানান, “ছোটবেলায় খুব বেশি দূর পড়াশোনা করতে পারিনি। ছোটবেলা থেকেই শখ কবিতা লেখার। সেলুনে বসে বসে কাজের ফাঁকেই কবিতা লিখি এবং পড়ে শোনাই। আমি চাই এখনো যে সমস্ত কবিতাগুলি রয়েছে কোনো সরকারিভাবে সেগুলিকে প্রকাশিত করার।”

তবে এখানেই শেষ নয় সাধন বাবু আরও আক্ষেপের সুরে জানান, “দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে কবিতা লিখে আসছি তবে কবি হিসেবে কোনো সাম্মানিক সরকারের তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত আমি পাইনি। সরকার যদি আমায় কোনোভাবে সাহায্য করে অন্তত জীবনের শেষ বেলাটুকু শান্তিতে কাটাতে পারি”। 

সাধন বাবুর কবিতা শুনে ইতিমধ্যে অনেকেই বাহবা দিয়েছেন। তার প্রতিবেশী থেকে শুরু করে আত্মীয়স্বজনেরাও চান তিনি তার যোগ্য সম্মান পাক। এখন দেখার বাংলার প্রত্যন্ত এক গ্রামের কোলে লুকিয়ে থাকা অখ্যাত প্রতিভাসম্পন্ন এই কবি তার যোগ্য সম্মান পান কিনা।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *