রাহুল রায়, কাটোয়াঃ বাঙালীর বারো মাসে তেরো পার্বণ। চৈত্র মাসের শেষ দিকে বাংলার বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে শিবিরের গাজন উৎসব। পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া দু’ব্লকের গাজন উৎসবগুলির মধ্যে অন্যতম শ্রীবাটী অঞ্চলের নন্দীগ্রামে নন্দেশ্বরের গাজন উৎসব। কাটোয়া দু’ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় গাজন উৎসব হলেও নন্দেশ্বরের গাজন উৎসব ঐতিহ্যপূর্ণ। যা প্রায় ২০০ বছরের পুরনো। এইবার সন্ন্যাসী হয়েছে ৫৫ জন। ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে বাবা নন্দেশ্বরের কাছে সন্ন্যাসগ্ৰহণ। এই সন্ন্যাসীদের দেখভাল করেন তাকে মুলে বলা হয়। সোমনাথ রেজ হল মূলসন্ন্যাসী।
মঙ্গলবার সন্ন্যাসীরা উড়তি নেয়। রাতে নন্দেশ্বর মন্দির প্রাঙ্গণে বোলান গানের আয়োজন করা হয়। গ্ৰামের যুবকদের সহযোগিতায় একটি দল গঠন করা হয়। এই দলে ১৮ জন সদস্য রয়েছে। একজন ওস্তাদ দলের নেতৃত্ব দেয়। কিছু ছেলে মেয়ে সেজে গান-নাচ করে। বোলান গান দেখতে বহু মানুষ ভিড় জমান মন্দির প্রাঙ্গণে। সন্ন্যাসীরা বিভিন্ন ধরনের কলাকৌশল দেখায়। বুধবার সন্ন্যাসীরা গ্ৰামের নতুন পুকুরে স্নান করে ভট্টাচার্য্য বাড়ি থেকে শিব ঠাকুরে নিয়ে আসা হয় নন্দেশ্বর মন্দিরে। সন্ন্যাসীরা ফল করে ঢাকের বাজনায় নাচতে নাচতে শিব ঠাকুর মাথায় নিয়ে গ্ৰাম পরিক্রমা করতে বের হয়। শিব ঠাকুরের গ্ৰাম পরিক্রমা দেখতে গ্ৰামের মোড়ে মোড়ে বহু মানুষ ভিড় জমিয়েছিল।
মুলগ্ৰাম, কুরচিগ্ৰাম, পোস্টগ্ৰাম, শ্রীবাটী গ্ৰামে বাড়ি বাড়ি ঘুরে সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামে ফিরে আসার রেওয়াজ রয়েছে। বৃহস্পতিবার নন্দেশ্বর মন্দিরে নীলের পুজো। নীলের পুজোয় শিবির বিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সন্ন্যাসীরা। শুক্রবার চরক। এই গাজনে উৎসবে আনন্দে মেতে ওঠেন গ্রামের মানুষেরা।