বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, নদীয়াঃ অস্বাভাবিক মৃত্যু ১৪ বছরের নাবালিকার! ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই তড়িঘড়ি রাতের অন্ধকারে দাহ করে পরিবার। মদত দিল তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য। বেআইনি শ্মশান রমরমিয়ে চলছে জানা নেই প্রধানের। তবে কি হাঁসখালি কাণ্ডের ছায়া শান্তিপুরে। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য এলাকায়। নদীয়ার শান্তিপুর থানার হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা। জানা যায় হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর কলোনী এলাকার বাসিন্দা রবি দাস। তাঁর ১৪ বছরের মেয়ে শর্মিষ্ঠা দাস। ফেব্রুয়ারি মাসের ২৫ তারিখে বাড়িতেই অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। সূত্রের খবর, শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। এখান থেকেই মেয়েটিকে তার পরিবার বাড়িতে নিয়ে চলে আসে। এরপরই তড়িঘড়ি হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন নৃসিংহপুর শ্মশানে দাহ করে ফেলে ওই নাবালিকাকে। প্রশ্ন উঠছে কোনোরকম ডেট সার্টিফিকেট ছাড়া কিভাবে রাতের অন্ধকারে দাহ করা হলো ওই নাবালিকাকে। তাহলে কি নাবালিকার মৃত্যুর পেছনে কোন রহস্য রয়েছে। যে শ্মশানে ওই নাবালিকাকে দাহ করা হয়েছে ওই শ্মশানটি পুরোটি বেআইনি। সেখানে দাহ করতে কোনরকম বৈধ কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় না।
নদীয়ার হাঁসখালি কাণ্ডে ঠিক এইরকম একটি শ্মশান নিয়ে তোলপাড় হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। যেখানে কোনো বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই হাঁসখালির নির্যাতিতা নাবালিকাকে দাহ করে দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও কিভাবে এখনও রমিয়ে বেআইনিভাবে চলতে পারে একটি অবৈধ শ্মশান।
এ বিষয়টি যার মদতে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া চলেছে সেই পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল মজুমদারকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, যেহেতু এই শ্মশানটি বাড়ির কাছে সেই কারণে তাঁকে দাহ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে ডেথ সার্টিফিকেট চাওয়া হলে আজব যুক্তি দেন তিনি। তিনি বলেন কোনো এক অশরীরী আত্মা ওই মৃত নাবালিকার ডেথ সার্টিফিকেট এবং আধার কার্ড নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। অর্থাৎ কোনো রকম বৈধ কাগজপত্র লেখাতে পারেনি তারা। ওই পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল মজুমদার নিজের দায়িত্ব নিয়েই নাকি দাহ করে দেয় ওই নাবালিকাকে।
এ বিষয়ে হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শোভা সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে, প্রয়োজনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে তার পঞ্চায়েত এলাকায় এইভাবে অবৈধভাবে রমরমিয়ে চলছে একটি শ্মশান। কেন সে বিষয়ে তিনি জানেন না? ওই শ্মশানে অস্থায়ী কর্মী কালুভুঁয় ফোর-কে জিজ্ঞাসা করা হলে চাঞ্চল্যকর বক্তব্য দেন তিনি। বলেন, তিনি উপস্থিত না থাকলে যে কেউ এসে এই শ্মশানে দাহ করে চলে যান। ওই নাবালিকাকে যে রাতে দাহ করা হয়েছিল সেই রাতে তিনি ছিলেন না। কিন্তু দাহ করার তিনদিন পার হয়ে গেল কোন রকম নথিভুক্ত করাতে আসেনি কেউ। হঠাৎ শ্মশানে কোন রকম বৈধ কাগজ ছাড়ায় দিনের পর দিন দাহোর কাজ চলছে।
এলাকাবাসীর সূত্রের খবর ওই নাবালিকার কোন স্বাভাবিক মৃত্যু ছিল না। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল নাবালিকার। তাহলে প্রশ্ন উঠছে কেন ওই নাবালিকাকে দাহ করার জন্য উঠে পড়ে লিখেছিল পরিবার। পঞ্চায়েত সদস্য কেন মদত দিয়েছিল তার পরিবারকে? যদিও ক্রিয়া কর্ম চলার কারণে ওই নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে সেভাবে কথা বলা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে হাসপাতালে নাবালিকাকে নিয়ে এসো, কিভাবে ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া পরিবারের হাতে মৃতদেহ তুলে দিল হাসপাতাল। সে বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারীকেএ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দায়ের হলে তদন্ত করে দেখা হবে।
Social