অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার সিভিক ভলান্টিয়ার

Burdwan Today
3 Min Read

 

দেবজিৎ দত্ত, বাঁকুড়াঃ  চার মাসের অন্তঃসত্বা স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগে ইন্দাসের এক সিভিক ভলান্টিয়ার সহ বধূর শ্বশুর ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম পূর্ণেন্দু পাল, অভয় পাল ও রবিরানী পাল। পূর্ণেন্দু মৃতার স্বামী।  সে ইন্দাস থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার পদে কর্মরত। বাড়ি ইন্দাসের আব্দুলপুর গ্রামে। মৃতার নাম সুমনা পাল (২৩)।  

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে গৃহবধূ সুমনাকে বাড়ির লোকেরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় ইন্দাস ব্লক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।  বধূর শ্বশুর বাড়ির লোকেরা সুমনাকে বাড়ির মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে বলে চিকিৎসক ও পুলিশকে জানায়। তবে ঘটনায় বধূর বাপের বাড়ির পক্ষ থেকে ইন্দাস থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করে। তাঁর ভিত্তিতে বৃহঃস্পতিবার সকালে সিভিক ভলান্টিয়ার স্বামী সহ তার বাবা ও মাকে পুলিশ গ্রেফতার করে।

পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, ইন্দাস থানার অন্তর্গত করিসুণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের আব্দুলপুর গ্রামের বাসিন্দা পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার পূর্ণেন্দু পালের সঙ্গে এক বছর আগে পাত্রসায়রের বালসির বাসিন্দা সুমনার বিয়ে হয়। সুমনা চারমাসের অন্তঃসত্বা ছিলেন। এমনকি মেধাবী সুমনা এবারের প্রাইমারী টেট পরীক্ষায় ভালো মার্কস নিয়ে পাশও করেন। অভিযোগ, বিয়েতে সাধ্যমতো পণ দেওয়া সত্বেও তাঁকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার চাপ দেওয়া হত। প্রতিবাদ করলে মদ্যপ অবস্থায় পূর্ণেন্দু তার স্ত্রী’কে মারধর করত। তবে চাপা স্বভাবের হওয়ায় সুমনা সব সহ্য করেও চুপচাপ থেকেছেন।  বরং নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য রাত জেগে পড়াশুনা শুরু করেন।  তাঁর ফল স্বরূপ তিনি প্রাইমারি টেট পাশ করেন।  ইতিমধ্যে তিনি অন্তঃস্বত্তা হন।  তা সত্বেও শ্বশুর বাড়িতে তাঁর উপর মানসিক ও শারীরিক ভাবে অত্যাচার চালানো হয় বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার রাতে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় এবং দেওয়ালে গাঁথা মশারির হুকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।  ঘটনায় বাপের বাড়ির পক্ষ থেকে ইন্দাস থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।  বৃহঃস্পতিবার বধূর স্বামী সহ শ্বশুর ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করা হয়। 

মৃতার বোন বলেন, জামাইবাবু রোজ দু’বেলা মদ খেত। টাকার জোগান পেতে দিদির গয়নাও বেচে দেয়। প্রতিবাদ করলে দিদিকে মারধর করত। দিদি কয়েকদিন পরে প্রথম বিবাহবার্ষিকী অনুষ্ঠান করবে বলেছিল। কিন্তু তার আগেই তাঁকে শেষ করে দিল। আমি জামাইবাবুর চরম শাস্তি চাই। 

মৃতার মা বলেন, জামাই সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি করে যা টাকা আয় করত তা মদ খেয়েই উড়িয়ে দিত। এমনকি আমার এটিএম ব্যবহার করে পাশ বইয়ের সব টাকা জামাই তুলে নিয়েছে। তাতেও ওর শান্তি হয়নি। মেয়ের শ্বশুর ও শাশুড়ি দু’জনেই জামাইকে ইন্ধন দিত। কিন্তু ওরা আমার মেয়েকে একেবারে মেরে ফেলবে তা ভাবতে পারিনি। ওদের কঠিন শাস্তি চাই। 

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *