Breaking News

চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ভাঙচুর দিঘা হাসপাতালে, উত্তপ্ত পরিস্থিতি

 

টুডে নিউজ সার্ভিসঃ স্কুল পড়ুয়া এক বালকের মৃত্যুকে ঘিরে শুক্রবার বিকেলে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল দিঘা স্টেট জেনারেল হাপাতালের পুরুষ বিভাগ। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মীদের হেনস্থা ও হাসপাতালের ভিতরে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে মৃতের আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয় দিঘা মোহনা কোস্টাল থানার পুলিশ। ভাঙচুরের ব্যাপারে রোগীর পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ লিখিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে চিকিৎসায় গাফিলতি ছিল কিনা তা জানতে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার সন্দীপ বাগ। তিনি বলেন, ‘ শুক্রবার সকাল ৯ টা ৫০ নাগাদ ১৫ বছরের একজন বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন জনাদশেক। বাচ্চাটির বমির সমস্যা ছিল। ভর্তি হওয়ার পর ডাক্তারবাবু বাচ্চাটিকে দেখেন এবং যা যা চিকিৎসা করার করেন। হঠাৎ করে বাচ্চাটার খিঁচুনি শুরু হয় এবং শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। ডাক্তারবাবু তাঁর মতো করে চেষ্টা করেন। তা সত্বেও আমরা বাচ্চাটিকে বাঁচাতে পারিনি। বিকেল ৩ টা ৫ নাগাদ তার মৃত্যু হয়। তারপরই তার বাড়ির লোকজন হাসপাতালে ভাঙচুর করেছে। ৩ টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মেশিন আছড়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং পুরুষ বিভাগের নার্সিং স্টেশনের সমস্ত কিছু ভাঙচুর করা হয়েছে।  ডাক্তারবাবু, নার্স দিদিমণিদের অকথ্য গালিগালাজ এবং মারধর করেছে বলে এমনই আভিযোগ। এ ব্যাপারে ডাক্তারবাবুরা আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। মৃতের পরিবারের থেকে কোনো অভিযোগ জানায়নি। তবুও আমরা কেন বাচ্চাটা মারা গেছে জানার জন্য মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করাব। মৃত্যুর প্রকৃত কারণটা আমাদেরও জানা দরকার, যে গাফিলতিটা কার ছিল।’ 

জানা গেছে, মৃত ওই বালকের নাম মহাদেব রানা। বাড়ি পটাশপুর থানার রামচকে। টেপরপাড়া শশীভূষণ জুনিয়ার হাইস্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র ছিল সে। এদিন বাবা-মা, প্রতিবেশী ও আত্মীয় পরিজনের সঙ্গে নিজস্ব গাড়িতে করেই এদিন দিঘা বেড়াতে আসে মহাদেব। সকাল সাড়ে ৮ টা নাগাদ দিঘা এসে পৌঁছায় ৩৫ জনের দলটি। দিঘা পৌঁছেই বমি করতে শুরু করে মহাদেব। অম্বলের ওষুধ খাওয়ানোর পরও বমি না থামায় বাড়ির লোকজন তাঁকে নিয়ে আসেন দিঘা হাসপাতালে। মৃতের জেঠু অনন্ত কুমার রানা বলেন, ‘ সকালে বাড়ি থেকে চা-বিস্কুট খেয়ে বেরিয়েছিল ছেলেটা। দিঘা পৌঁছেই বমি করতে শুরু করে। অম্বলের ওষুধ খাওয়ানোর পরও বমি না থামায় আমরা হাসপাতালে নিয়ে আসি। যদি হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দিত, তা হলেও বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে উপযুক্ত চিকিৎসার বব্যস্থা করতে পারতাম। সমস্যা গুরুতর কিনা আমরা বারবার জিজ্ঞাসা করেছি। কিন্তু ডাক্তারবাবু আমাদের বলেছিলেন, কোথাও নিয়ে যেতে হবে না। সামান্য গ্যাস, অম্বলের সমস্যা। আমরা ঠিক করে দেব। ডাক্তারবাবুর কথায় ভরসা করে আমরা এখানে রোগীকে রেখে দিই। তারপর বিকেলে এই অবস্থা।’ 

মহাদেবের বাবা বিষ্ণুপদ বলেন, ‘আমার উপস্থিতিতেই যাবতীয় টেস্ট করানো হয়েছিল। সব রিপোর্টই ঠিক ছিল। পরপর ৪ টা সেলাইন দেওয়া হয়। তারপর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। তখন ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তারপর ১০ মিনিটের মধ্যে আবার দুটো সেলাইন দেওয়া হয়। এরপর পুরো শরীরটা ঠান্ডা হয়ে যায়। তখন আর একটা ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই ছেলের মৃত্যু হয়।’ রোগী মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজন হাসপাতালে ভিড় করেন। এর পরেই উত্তেজিত হয়ে তাঁরা হাসপাতালের পুরুষ বিভাগে ভাঙচুর চালান এবং চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীদের হেনস্থা করেন।

About Burdwan Today

Check Also

রাজা রামমোহন রায়ের আবক্ষ মূর্তি উন্মোচন

টুডে নিউজ সার্ভিস, কালনাঃ কালনার রামমোহন রায় ছাত্রী নিবাসে মঙ্গলবার উন্মোচন হলো রাজা রামমোহন রায়ের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *