দেবজিৎ দত্ত, বাঁকুড়াঃ বর্তমানে রাষ্ট্রে ধর্ম একটা আবেগের জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রত্যেক মানুষের। হ্যাঁ, এখন ধর্ম নিয়ে রাজনীতিও চলছে বেশ, আমি হিন্দু, তুমি মুসলিম, তুমি খ্রীষ্টান, তুমি বৌদ্ধ, তুমি জৈন বোঝানোর পালাও সদা চলমান। আমাদের পূর্বপুরুষেরা কিন্তু আমাদেরকে এই পথ দেখিয়ে যায়নি, তবুও আমরা কেন ধর্মীয় ভাবাবেগের পথ বেছে নিলাম? এটাই এখন বড় প্রশ্ন চিহ্ন! আচ্ছা এসবকে বাদ দিয়ে হাতে হাত রেখে যদি পথ চলা যায়, তাহলে কি খুব মন্দ হবে? বোধ হয় না।
মহরম মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি একটি পবিত্র অনুষ্ঠান, সেই মহরমের দোফরমাতমকে ঘিরে একটি সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী ছবি দেখা গেল৷ বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস ব্লকের চকসাপুর গ্রামে মুসলিমদের ধর্মগুরু পীর সংরক্ষিত হয়ে আসছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম বাঙালি পরিবার পালেদের বংশধরদের হাতে। মহরমের দোফরেমাতমে বাঁকুড়ার ইন্দাসে এসে সম্মিলিত হয়েছে দুই ধর্ম অর্থাৎ হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়ের একাধিক মানুষ। প্রত্যেক ধর্মের মানুষরা একসাথে সম্মিলিত হয়ে পুজার্চনা প্রসাদ বিলি সহ আরও অন্যান্য কাজে একসাথে হাতে হাত মিলিয়েছে। শুধু তাই নয় এই অনুষ্ঠান নাকি হিন্দু ভাই-বোনেরাই পরিচালনা করে। সবে মিলে এই যুগের দাঁড়িয়ে সম্প্রীতির এক নজির স্থাপন করেছে বাঁকুড়া জেলার ইন্দাসের এই চকসাপুর গ্রাম। সম্রাট আকবর প্রচলন করে গেছলেন ‘সুল ই কুলের’ অর্থাৎ সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের, তারই এক দৃষ্টান্ত দেখতে পাওয়া গেল বাঁকুড়ার এই প্রান্তিক গ্রামে।
সুনীল কুমার পাল নামে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি জানান, ভারতবর্ষের খুব কম জায়গাতেই এরকম দৃষ্টান্ত আপনারা দেখতে পাবেন, আমরা চাই সম্প্রীতির বার্তা পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়ে যাক। একই সাথে ঝাঁজ ঘন্টা বাজুক আর আজানের ধ্বনি শোনা যাক।
আবাদ মোল্লা নামে এক ব্যক্তি জানান, পূর্বপুরুষ ধরে আমরা একইভাবে সম্মিলিত হয়ে আছি এবং ভবিষ্যতেও হবো। পৃথিবীর প্রত্যেকটা প্রান্তরে কাঁসরঘন্টা এবং আজানের ধ্বনি একই হয়ে যাক তার জন্য রইলো আমাদের এই প্রতিবেদন।