অরুণাভ দত্ত, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পতিরামের অম্বিকা রূপে বিরাজিতা মা বিদ্যেশ্বরী হলো ৫১ মহা শক্তিপীঠের মধ্যে অন্যতম। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পতিরাম সতীর ৫১ পীঠের মধ্যে অন্যতম। পীঠ নির্ণয়তন্ত্র মতে এটি বিরাট বা বৈরাট নামে পরিচিত। এখানে সতীর বাঁ পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল পতিত হয়েছিল। দেবী এখানে অম্বিকা রূপে বিরাজিতা আর ভৈরব হলেন অমৃতাক্ষ।
স্থানীয় বাসীন্দাদের কাছে মা বিদ্যেশ্বরী নামেই পরিচিতা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পতিরাম থানায় মন্দিরটি অবস্থিত। শ্রী শ্রী মা বিদ্যেশ্বরী কালী মাতার মন্দিরকে কেন্দ্র করে একটি জনশ্রুতি আছে, প্রতিদিন সন্ধ্যেবেলা এক বালিকা সন্ধ্যে প্রদীপ দিতে আসতো। একদিন সন্ধ্যেপ্রদীপ দিতে এসে বালিকাটি হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায়। বালিকাটির পরিবারের লোকেরা অনেক খোঁজার পর মন্দিরে এসে দেখতে পান বালিকার পরনে লাল পাড় সাদা শাড়িটি মায়ের বেদীর উপর বিছানো আছে। তারপর থেকে দেবীর ইচছানুয়াযী ভক্তের মনোস্কামনা পূর্ণ হলে মাকে লাল পাড় সাদা শাড়ি দিয়ে পূজো দেন। বতর্মানে বেদীটি কূর্মাকৃতিরূপ ধারন করেছে কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় যুগ যুগ ধরে বেদীতে শাড়ি পড়লেও শাড়ির উচ্চতা একই থাকে।মন্দিরের জনৈক পূজারী মায়ের বেদী থেকে কাপড় সরাতে গেলে সর্পদংশনে মৃত্যু হয়। তাই শাড়ি একবার বিছিয়ে দিলে সেই শাড়ি আর বেদী থেকে তোলা হয় না।
প্রতিবছর পৌষমাসের অমাবস্যাতিথিতে মায়ের বাৎসরিক পূজা অনুষ্ঠিত হয়, সেই সময় যজ্ঞানুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে তিন দিন ধরে মা বিদ্যেশ্বরীর পাশাপাশি বাবা ভৈরব অমৃতাক্ষেরও পুজা চলে। দুর্গাপূজার অষ্টমী তিথিতে ও কার্ত্তিক মাসের দীপান্বিতা অমাবস্যায় কালীপূজাতে বিদ্যেশ্বরী মা ও বাবা ভৈরব অমৃতাক্ষের বিশেষ পূজা হয়। স্থানীয় মহিলারা বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসে মঙ্গলচন্ডী ও বিপদতারিনী পূজাও করে থাকেন। এছাড়াও প্রতিদিন দেবীর নিত্যপূজা হয়।
যাতায়াত : কলকাতা থেকে ট্রেনে করে বালুরঘাট স্টেশন। তারপর বালুরঘাট থেকে বাসে করে ৩০মিনিটের পথ পতিরাম।
Social