পাপু লোহার, কাঁকসাঃ প্রায় ৩০০ বছরের পুরাতন পানাগড় গ্রামের পানাগড় চোবরেশ্বর শিব মন্দির। এই মন্দিরে শ্রাবণ মাসে তৃতীয় সোমবার পানাগড়ের কয়েকশ ভক্ত চোবরেশ্বর শিব মন্দিরে শিবের মাথায় জল ঢাললেন। ভক্তদের মুখে ‘ভোলে বাবা পার করে গা’ আওয়াজ। আর বাঁক কাঁধে খালি পায়ে হেঁটে পুণ্যার্থীরা দামোদর নদের সিলামপুর ঘাট থেকে জল নিয়ে যান চোবরেশ্বর শিব মন্দিরে। গত ২ বছর করোনার কারনে জল ঢালা বন্ধ ছিল তাই এবছর ভক্তদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মত।
পৌরাণিক কাহিনীতে আছে শিবকে তুষ্ট করতে ভক্তরা শিবের মাথায় জল ঢালেন। পুরাণ মতে সমুদ্র মন্থনে ওঠা হলাহল এই শ্রাবণ মাসেই পান করেছিলেন ভগবান শিব। সেই প্রচণ্ড বিষ পান করে তাঁর সারা শরীর নীল হয়ে গিয়েছিল। তাই মহাদেবের আর এক নাম নীলকণ্ঠ। সেই কারণে মহাদেবকে শ্রাবণ মাসে দুধ অথবা জল ঢেলে পুজো করেন ভক্তরা।
বিশেষ করে শ্রাবণ মাসের সোমবারগুলিতে উপবাস রেখে শিবলিঙ্গের মাথায় দুধ অথবা জল ঢালার নিয়ম রয়েছে। এতে পূণ্যলাভ হয় বলে বিশ্বাস। এ ছাড়াও শ্রাবণ মাসে বেশি করে ভজন, কীর্তন শুনলে তা আধ্যাত্মিক ভাবে মানুষের আত্মাকে শোধন করে বলে মনে করা হয়।
প্রতিবছর এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, তাই রাস্তার প্রতিটি মোড়ে কাঁকসা থানার পুলিশকর্মীরা মোতায়েন ছিলেন। পানাগড় গ্রামের বাসিন্দারা তথা চোবরেশ্বর শিব মন্দির কমিটির সদস্য মিলন পাঁজা জানিয়েছেন, বহু পুরাতন মন্দিরে দীর্ঘদিন ধরে এই প্রথা চলে আসছে। পানাগড় গ্রাম সহ আশেপাশের গ্রামের শতাধিক মানুষ আজকের দিনে মহা আনন্দে তারা সিলামপুর থেকে পায়ে হেঁটে দামোদর নদের জল নিয়ে এসে শিবের মাথায় ঢালেন এবং চোরবেশ্বরের কাছে পরিবারের সকলের সুখ শান্তি কামনা করেন।
প্রতিবছরের মত এ বছরও শতাধিক মানুষ ভিড় করেছিলেন। বয়স্ক মানুষ থেকে শুরু করে বহু কচিকাঁচারাও এ বছর শিবের মাথায় জল ঢালার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল।
সারাদিন মন্দির প্রাঙ্গনে শিবের মাথায় জল ঢালতে হাজার হাজার ভক্ত ভিড় জমাবেন বলে জানিয়েছেন এলাকার মানুষ। তাছাড়া ওই দিন সারাদিন ধরে পূজার্চনা ও যজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছে।
Social