বর্ধমান বিশ্ববিদ‍্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বিক্ষোভ

Burdwan Today
3 Min Read

 

টুডে নিউজ সার্ভিস, বর্ধমানঃ বর্ধমান বিশ্ববিদ‌্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগের ২০১৯-২১ শিক্ষাবর্ষে এমএ পার্ট টু ফাইনাল মার্কশিট এখনও না বের হওয়ায় কর্তৃপক্ষের তরফে কোনো সদুত্তর না মেলায় সোমবার ব্যাপক ক্ষোভে ফেটে পড়লেন শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী। সোমবার সকালে ছাত্র-ছাত্রীরা তাঁদের মার্কশিটের দাবি নিয়ে প্রথমে দূরশিক্ষা ভবনে যান। কিন্তু সেখান থেকে কোনো সদুত্তর না পাওয়ায় তাঁদের বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ছাত্র-ছাত্রীরা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কন্ট্রোলার বিভাগে এসে দেখেন দুটি গেটেই তালা ঝোলানো রয়েছে। বারবার ছাত্র-ছাত্রীরা কন্ট্রোলার অনিন্দ্যজ্যোতি পালের সঙ্গে দেখা করার কথা বললেও তাঁদের দাবি মানা না হওয়ায় বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্র-ছাত্রীরা। শুরু হয় শ্লোগান। প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে হাতে প্লাকার্ড নিয়ে এই বিক্ষোভ চলার পর পুলিশি হস্তক্ষেপে ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ থেকে ২ জন গিয়ে দেখা করেন পরীক্ষা নিয়ামকের সঙ্গে। 

পরীক্ষা নিয়ামক অনিন্দ্যজ্যোতি পাল জানিয়েছেন, তাঁরা দ্রুত চেষ্টা করছেন ফল প্রকাশের। এদিকে, এদিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিক্ষোভ নিয়ে ব্যাপক শোরগোল শুরু হয়। অভিরুপ দত্ত, সপ্তিক ঘোষ, জাগৃতি ঘোষ প্রমুখ ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছেন, ২০১৯-২০২১ শিক্ষাবর্ষে তাঁরা দূরশিক্ষা বিভাগের ছাত্রছাত্রী। ২০২১-এর ডিসেম্বর মাসে তাদের ফাইনাল পরীক্ষা হবার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট সময়ে সেই পরীক্ষা নিতে পারেনি। এরপর ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন শুরু হলে চলতি ২০২২ সালে জানুয়ারী মাসে তাদের পরীক্ষা নেওয়া হয়। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই ছাত্র-ছাত্রীদের একটা বছর নষ্ট হয়েছে। এরই মাঝে যাঁরা বিএডে ভর্তি নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। তাঁদের কাছ থেকে মার্কশিট এবং মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাঁরা তা দিতে পারছেন না। ফলে সেক্ষ‌েত্রেও ছাত্র-ছাত্রীরা চরম সমস্যায় পড়েছেন। অথচ কবে তাঁরা মার্কশিট পাবেন সে বিষয়ে বারবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলেও তাদের তা জানানো হচ্ছে না। বাধ্য হয়েই তাই এদিন তাঁরা এসেছেন কবে মার্কশিট প্রকাশিত হবে তা সঠিকভাবে জানতে। কিন্তু এখানে আসার পর কন্ট্রোলার সেকশনের দুটি গেটেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। বারবার তাঁরা কন্ট্রোলারের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করলেও অফিস থেকে কখনও জানানো হয় – তিনি খাচ্ছেন আবার কখনও বলা হয় তিনি অফিসে নেই। আর এরপরেই ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষোভ বাড়ে। কেন ছাত্রছাত্রীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে তা জানতে চান ছাত্র-ছাত্রীরা। 

দীর্ঘক্ষণ এভাবে বিক্ষোভ চলার পর অবশেষে বর্ধমান থানা থেকে পুলিশ গিয়ে মধ্যস্থতা করে এবং ২ জনকে নিয়ে দেখা করানো হয় কন্ট্রোলারের সঙ্গে। উল্লেখ্য, তীব্র গরমের মাঝেও এদিন আসানসোল, বরাকর সহ নানা জায়গা থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা এসে জড়ো হন বিশ্ববিদ্যালয়ে। গরমের মধ্যে অসুস্থও হয়ে পড়েন অনেকে। ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, আগেই টাকা নিয়ে নেওয়া হয়েছে। অনলাইনের মাধ্যমে সমস্ত টাকা নেওয়া হলেও রেজাল্ট প্রকাশ করেনি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২০২১ এ শিক্ষাবর্ষ শেষ হয়ে গেলেও ২০২২ এর এপ্রিল মাসেও মেলেনি মার্কশিট।

 এদিন এই বিক্ষোভের জেরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক অনিন্দ্যজ্যোতি পাল গেটে তালা লাগানোর প্রশ্নে তিনি জানিয়েছেন,  অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাজকর্মের জন্য দুটি গেটকেই টেনে রাখা হয়েছিল। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কোনো দুর্ব্যবহার করা হয়নি।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *