Breaking News

জামাইবাবুর বাড়ি থেকে নাবালিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য

 

বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, নদীয়াঃ জামাইবাবুর বাড়ি থেকে এক নাবালিকাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য। পুলিশের তদন্ত সঠিক নয় এই অভিযোগে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ। পরিবারের দাবি তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। দ্বিতীয়বারের জন্য ধানতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করে পুনরায় ময়না তদন্তে পাঠায় পুলিশ। মৃতদেহ বাড়িতে গেলে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা। ঘটনাটি নদীয়ার গাংনাপুর থানা এলাকায়। হাঁসখালির পর এবার ধানতলায় এমনই ঘটনায় চঞ্চল্য।

   গাংনাপুর থানার ঘোলা এলাকার এক ১৫ বছরের নবম শ্রেণীর ছাত্রী চড়ক পূজার মেলা উপলক্ষে ধানতলা থানার শংকরপুর এলাকায় পিসতুতো জামাইবাবুর বাড়ি বেড়াতে যায়। বৃহস্পতিবার রাত্রে তাকে ঝুলন্ত অবস্থা দেখতে পায় জামাই বাবুর পরিবার। এরপর তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় রানাঘাট মহাকুমার হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে জানায়। মৃত নাবালিকার বাড়ি গাংনাপুর থানার অন্তর্গত ঘোলা এলাকায়। ময়নাতদন্ত পর শুক্রবার রাত্রে মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে গেলে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। অভিযোগ তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। স্থানীয় বিজেপির বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীর উপস্থিতিতে পুনরায় ধানতলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় যে, তাকে মাদক খাইয়ে ধর্ষণ করে খুনের।

এরপর দ্বিতীয়বারের জন্য শুক্রবার রাত্রে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে আবার রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়।

 এই ঘটনাটি ঘটে দিদির বাড়ি নদীয়ার ধানতলা থানার অন্তর্গত শংকরপুর এলাকায়। সেখানে চড়ক মেলা উপলক্ষে তার জামাইবাবু বাসুদেব সন্ন্যাসী ওই নাবালিকা শালিকাকে বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যায়। প্রায় তিন দিন তার বাড়িতে ছিল বলেই অভিযোগ পরিবারের। গত বৃহস্পতিবার রাতে জামাইবাবুর বাড়ি থেকে ওই নাবালিকার পরিবারকে জানানো হয় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা করেছে এবং অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরপর ওই নাবালিকার পরিবার তড়িঘড়ি হাসপাতালে যায় এবং জানতে পারে ওই নাবালিকার মৃত্যু হয়েছে। ওই নাবালিকার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর নাবালিকার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় শুক্রবার।

 এরপর নাবালিকার মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর মৃতদেহ ঘিরে দীর্ঘক্ষন বিক্ষোভ গাংনাপুর থানার অন্তর্গত ঘোলা এলাকায়। রাতে ঘটনাস্থলে আসে গাংনাপুর থানা পুলিশ। গাংনাপুর থানার পুলিশকে ঘিরেও স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘক্ষন ধরে বিক্ষোভ দেখান। পরিবারের তরফ থেকে দাবি করা হয় ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। পরিবারের তরফ থেকে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলে। পরিবারের তরফ থেকে আরও অভিযোগ অভিযুক্ত বাসুদেব সন্ন্যাসীর পরিবার শাসকদলের ঘনিষ্ঠ বলেই প্রশাসন ধর্ষণের অভিযোগ নিতে অস্বীকার করছে। এছাড়াও বারংবার হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে মৃত নাবালিকার পরিবারকে। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। ঘটনাস্থলে আসে বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী। এই ঘটনা নিয়ে মুকুটমণি অধিকারী মূলত বর্তমান রাজ্যের শাসক দল ও মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করলেন। তিনি আরও জানালেন প্রশাসন নিষ্ক্রিয় আমরা হাঁসখালির ঘটনার পর এই ঘটনার জন্য সিবিআই তদন্তের দাবি জানাবো। এই দরিদ্র পরিবারের উপর যে অন্যায় করা হয়েছে অন্যায় ও নৃশংস ভাবে একটি নাবালিকার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে । তার প্রতিবাদে এই পরিবারের পাশে থেকে আমরা শেষ পর্যন্ত ন্যায় বিচারের জন্য লড়াই করে যাব।

পুলিশ সূত্রে খবর, মেয়েটির মৃত্যুর পর পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর মৃত্যুতে প্রচারণা দেয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয় তিনজনের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে দুজনকে আটক করে ধানতলা থানার পুলিশ। শুক্রবার মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বিক্ষোভে  সামিল হন এলাকার মানুষ। তাদের অভিযোগ তাকে মদ খাইয়ে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এর পর পুনরায় ধানতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে আবার রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় ময়না তদন্তের জন্য। পুলিশের পক্ষ থেকে রানাঘাট আদালতে দ্বিতীয়বারের জন্য ময়না তদন্তের আবেদন করা হয়েছে। এছাড়াও পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ধানতলা থানার পুলিশ।

About Burdwan Today

Check Also

কোজাগরীতে মধ্যবিত্তের পকেটের লক্ষ্মীতে টান!

জ্যোতির্ময় মণ্ডল, মন্তেশ্বরঃ শারদীয়া দুর্গা উৎসবের পর আশ্বিন মাসের শেষে পূর্ণিমার তিথিতে কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *