ওঝার বুজরুকি রুখতে মাঠে নামল যুক্তিবাদী সমিতি

Burdwan Today
2 Min Read

দেবজিৎ দত্ত, বাঁকুড়াঃ সাপের কামড়ের পর ওঝার বুজরুকিতে সময় নষ্ট, আর তাতেই মাত্র চার বছর বয়সেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিল সঞ্জয় হাঁসদা। সাপে কামড়ালে ওঝা,  গুনিন নয় রোগীকে দ্রুত নিয়ে যেতে হবে হাসপাতালে এই মেসেজ দিতে এবার সঞ্জয় হাঁসদা-র গ্রামে সচেতনতা শিবির করল যুক্তিবাদী সমিতি। 

গত ৩১ জুন বাঁকুড়ার ইন্দাস থানার বনকী গ্রামে ঘুমন্ত অবস্থায় সাপে কামড় দেয় চার বছর বয়সী সঞ্জয় হাঁসদাকে। তারপর শরীর অসুস্থ হলেও পরিবারের লোকজন বুঝতে পারেনি তাকে সাপে কামড় দিয়েছে। অসুস্থতা কাটাতে সঞ্জয়কে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নিয়ে যায়। ওঝা সঞ্জয়ের কপালে সিঁদুরের টিপ পরিয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় ফের তাঁর কাছে ঝাড়ফুঁকের জন্য নিয়ে যেতে বলেন। ওইদিন দুপুরের পর সঞ্জয়ের অবস্থা খারাপ হতে শুরু করলে পরিবারের লোকজন সঞ্জয়কে স্থানীয় ইন্দাস ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে ছোট্ট সঞ্জয়। সাপের কামড়ের সাইন সিম্পটম না জানায়, ওঝার উপর অন্ধবিশ্বাস এসবের কারনেই সঞ্জয়ের মৃত্যু হয়েছে জানতে পেরে একযোগে আসরে নামে স্থানীয় ব্লক প্রশাসন, ব্লক স্বাস্থ্য দফতর ও যুক্তিবাদী সমিতি। 

 সন্ধ্যায় বনকী গ্রামে গিয়ে এলাকার মানুষকে সাপের কামড়ের বিভিন্ন সাইন সিম্পটম, সাপের কামড়ের হাত থেকে বাঁচার উপায় এবং রোগ অসুখ বা সাপের কামড়ের ক্ষেত্রে ওঝা-গুনিনের উপর ভরসা না করে রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। রীতিমত প্রোজেক্টারের মাধ্যমে গ্রামবাসীদের বোঝানো হয় যে কোনো রোগ অসুখ সারানোর ক্ষেত্রে ওঝা গুনিনদের বুজিরুকি। বোঝানো হয় ওঝার কাছে না নিয়ে গিয়ে সঞ্জয়কে সময়মতো হাসপাতালে নিয়ে গেলে কেন সঞ্জয়কে এভাবে প্রাণ হারাতে হত না। 

স্থানীয় ব্লক  প্রশাসনের আধিকারিক,  ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের  আধিকারিক ও যুক্তিবাদী সমিতির এই মিলিত প্রয়াসে কিছুটা হলেও ওঝার প্রতি ওই গ্রামের মানুষের অন্ধবিশ্বাস কাটবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *