Breaking News

‘উদার আকাশ’-এর ঈদ-শারদ উৎসব সংখ্যা প্রকাশ

ড. মোহাম্মদ শামসুল আলমঃ উদার আকাশ ঈদ-শারদ উৎসব সংখ্যা ১৪২৯ উদ্বোধন করলেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য অধ্যাপক গৌতম পাল। শনিবার সহ উপাচার্যের কার্যালয়ে উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ পত্রিকার বিশেষ সংখ্যাটি গৌতম পাল-এর হাতে তুলে দিলেন। সমাজকল্যাণে ও শিক্ষা প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নতুন সভাপতি ড. গৌতম পাল।

এদিন সুস্থ সমাজ গঠনে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক মননের উৎকর্ষ নির্মাণে লেখকদের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন গৌতম পাল। আধুনিক শিক্ষাই অনুন্নত সমাজের মুক্তির একমাত্র পথ বলে মনে করেন তিনি। বাঙালির দুই মুখ্য সম্প্রদায়ের দুই প্রধান উৎসব ঈদ ও শারদোৎসবকে সামনে রেখে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও মিলনের জয়গান করাই উদার আকাশ পত্রিকার প্রয়াস সার্থক। 

সম্পাদক ফারুক আহমেদ বলেন, উদার আকাশ ঈদ শারদ উৎসব সংখ্যায় একগুচ্ছ কবিতা লিখেছেন কবি সুবোধ সরকার। ব্রাত্য বসুর দুটি নাটক নিয়ে আলোচনা করেছেন বর্ণালি হাজরা। বাঙালি জীবনে প্রত্যাশা ও নিরাশা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ লিখেছেন মইনুল হাসান। এছাড়াও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কলম ধরেছেন তরুণ মুখোপাধ্যায়, মহিউদ্দিন সরকার, অচিন্ত্যকুমার গঙ্গোপাধ্যায়, শুভেন্দু মণ্ডল, প্রমথনাথ সিংহ রায়, সোমা দেব, মিলন মণ্ডল, রাধামাধব মণ্ডল, শান্তনু প্রধান, মোঃ মনিরুল ইসলাম, মোহাম্মদ শামসুল আলম, জহির উল ইসলাম, ইয়াসমিন নেহার, তানবীর শরীফ রব্বানী, আজিজুল হক মণ্ডল, তানজিলা আখতার প্রমুখ।

সম্পাদকীয়তে কবি কাজী নজরুল ইসলাম-এর বিদ্রোহী কবিতার শতবর্ষ নিয়ে বিশেষ আলোকপাত করেছেন উদার আকাশ সম্পাদক ফারুক আহমেদ।

মানবজীবন নানা অনুষঙ্গে সম্পৃক্ত। এমন অনুষঙ্গগুলো গতিপথ লাভ করে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিক ও মাত্রার সম্মিলনে। বিশেষ করে শিল্পসাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে যাপিত অনুষঙ্গের বিকাশ হৃদয়মনকে সহসায় নাড়া দিয়ে থাকে। আর হৃদয় মনকে নাড়া দেওয়ার মুখপত্র হিসেবে কাজ করে সংস্কৃতি বিকাশের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখাসমূহ। তাই সংস্কৃতি বিকাশের সহায়ক ও অনন্য উপকরণের মধ্যে পত্র-পত্রিকা, ম্যাগাজিন-জার্নালের অবদান অপরিসীম। এমন শাখা-প্রশাখা ও ধারার মধ্য দিয়ে মানুষের মননচিন্তার খোরাক মেটানোর প্রয়াস অনেকটা সহজলভ্য হয়। সেজন্যই বলতে হয় এসবের তুলনা কেবল এসবই। এমন তুলনা প্রসঙ্গে যে কথাটি বলা সংগত, তারই এক অনন্যমাত্রা ‘উদার আকাশ জার্নালে’র সুদীর্ঘ পথ চলা। প্রায় দু’দশক পেরিয়ে তৃতীয় দশকে এসে এই পিয়ার রিভিউড রিসার্চ জার্নালের গতিপথ আজ অনন্য মাত্রা অর্জন করেছে। কেবল ভারতেই নয়, উভয় বাংলার মানুষের কাছে ‘উদার আকাশ জার্নাল’ ও ‘উদার আকাশ প্রকাশনী’র নাম আঙ্গিকগত ভাবনা ও বিষয়বিন্যাসের কারণে সুপরিচিত। এমনকি বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকেও জার্নালটির নিরপেক্ষতা অটুট রয়েছে।

জেনে নেয়া সমীচীন যে, কেবল মননশীল ও মানসম্মত গবেষণামূলক প্রবন্ধ  জার্নালটিতে নিয়মিত প্রকাশিত হয়। এরই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ‘ঈদ-শারদ উৎসব সংখ্যা-১৪২৯’ প্রকাশিত হয়েছে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে। পাঠকমহলে এই জার্নালের ব্যাপ্তি ও অভীপ্সা সংবেদনশীল মননে সম্প্রীতির বন্ধন তৈরির লক্ষ্যে অধরাকে ধরবার এবং অজানাকে জানবার একটি প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যা কালের বাস্তবতায় বহমান স্রোত হিসেবে ক্রমঅগ্রসরমান। জার্নালের সম্পাদক ফারুক আহমেদ বাঙালির যাপিত জীবন ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও মজবুত ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত করার নিমিত্তে নিরলসভাবে কাজ করছেন ‘উদার আকাশ জার্নাল’ প্রকাশ পর্বের মধ্য দিয়ে। ‘২১ বর্ষ ২য় সংখ্যা’টিতে বাংলা ও ইংরেজিসহ মোট কুড়িটি মননশীল ও গবেষণালব্ধ প্রবন্ধে শেকড় সন্ধানী তথ্য উপাত্ত সংযোজনার মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ মৌলক বিষয়কে তুলে ধরবার প্রচেষ্টা গৃহীত হয়েছে। জার্নালটির প্রবন্ধসমূহে ভাবের উপযোগী ভাষা প্রযুক্ত হওয়ার কারণে সাধারণ পাঠকের বোধগম্যতা সহজে অনুধাবনীয়। দুর্বোধ্য ও বাহুল্য শব্দের প্রয়োগ প্রবন্ধসমূহে অনুপস্থিত। আবেগের আতিশয্য জার্নালের মননশীল প্রবন্ধসমূহে স্থান না পাওয়ার কারণে নবজীবন ও নবমানবতার সাধনা অর্থপূর্ণ হতে পেরেছে। বলা সংগত যে, সাধারণ বাঙালি জীবনের অবাঞ্ছিত চেহারা বদলে দেওয়ার নিমিত্তে সাহিত্যিকগণ নিরলসভাবে কাজ করে থাকেন। তবে এমন কাজ এখনো অসম্পূর্ণ। এই অসম্পূর্ণ কাজটি সম্পন্ন করার নিমিত্তে পত্রিকার সম্পাদক নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সমাজবাস্তবতার অনন্য দর্পণ সদৃশ এই জার্নালের বিষয় ভাবনা সংস্কৃতির এক অপূর্ব নিদর্শন হিসেবে বিবেচ্য। চলমান জগতের আত্মকেন্দ্রিক বাস্তবতাকে সামনে রেখে প্রত্যাশা-প্রাপ্তির পাল্লাকে মানুষ নিবিড়ভাবে অনুসরণ করে। এমন আয়োজনকে যাঁরা পিছনে ফেলে আত্ম মানবতার ব্রত নিয়ে বীরদর্পে সামনের দিয়ে এগিয়ে যান তাঁরা তুলনারহিত ও সত্যিকার অর্থে মানবিক। ‘উদার আকাশ জার্নাল’ ও প্রকাশনীর প্রকাশক কবি, গবেষক, প্রাবন্ধিক ও সমাজকর্মী ফারুক আহমেদ তাঁদেরই একজন। যিনি টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে টিফিন না খেয়ে পত্রিকা প্রকাশের মতো মহৎ কর্ম সম্পাদনের মধ্য দিয়ে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। তাঁর এমন আত্মোৎসর্গের স্মারক ‘উদার আকাশ জার্নালে’র পথচলা। জার্নালে উভয় বাংলার মননশীল প্রাবন্ধিক ও গবেষকগণ ইতিহাস-ঐতিহ্য, জীবনস্মৃতি, সমাজভাবনা, সাহিত্য সমালোচনা, লোকসংস্কৃতি, মনোদর্শন, নাট্যপ্রতিভা প্রভৃতি বিষয়ক যুক্তিনিষ্ঠ প্রবন্ধ উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে জ্ঞান আহরণের একটি ক্ষেত্র উপহার দিয়েছেন। যা কালের আবর্তে মহাকালকে তুলে ধরার একটি প্রচেষ্টা অন্বিষ্ট হয়েছে কথাটি বলতেই হয়।

About Burdwan Today

Check Also

ইলেকট্রিক শকে মৃত্যু

টুডে নিউজ সার্ভিস, বর্ধমানঃ ইলেকট্রিক শক খেয়ে মৃত্যু এক যুবকের। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *