শুভদীপ দত্ত, মহেশতলা, কোলকাতাঃ করোনা সংক্রমিত অতিমারী। গত ২০২০-র জানুয়ারি-মার্চ মাস থেকে করোনা অতিমারীর জেরে রাজ্য-দেশ-বিদেশ সর্বত্রই বিপর্যস্ত অবস্থা। জন জীবন যেমন বিঘ্নিত হচ্ছ তেমনই হচ্ছে অর্থনীতি। শুধুই অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশ নয় উন্নত দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয়। এমনই কর্মহীন লোকসংখ্যার অভাব নেই দেশে, তার ওপর করোনা প্রতিরোধে প্রায় পৃথিবীজুড়ে সকল দেশের সরকার লকডাউনের পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছে, করোনার মতো সংক্রমিত অতিমারী রোধে। লকডাউনের আসল উদ্দেশ্য সামাজিক বা শারিরীক দূরত্ব দূরত্ব গড়ে তোলা একে অপরের থেকে। এই লকডাউনের সুফল আমরা হাতেনাতে পেয়েছি সংক্রমণের মাত্রা ঐ সালেরই শেষের দিকে অনেকাংশেই কমতে থাকে। যার কারণে সরকার আন-লকডাউনের পথে হাঁটতে শুরু করে ধীরে ধীরে। কিন্তু, কুফল স্বরুপ দেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙে যায় সৃষ্টি হয় বেকারত্বের, কলকারখানা বন্ধ হয়ে যায় শ্রমিকদের মজুরি দিতে না পারায়। অর্থাৎ প্রায় সব দেশেই কম-বেশি অর্থনীতিক-সামাজিক-মানসিক অরাজকতা সৃষ্টি হয়। তাই সংক্রমণের হার কমতেই সরকার আন-লকডাউনের পথে হাঁটতে বাধ্য হয়।
কিন্তু, ২০২১ সালে সেই একই সমস্যার সন্মুখীন দেখা দেয় বেশ কিছু দেশে। যার একমাত্র কারণ হিসেবে বলা যেতে পারে একমাত্র জন সাধারনের অসচেতনতা। তাই আবারো, বেশ কিছু দেশ লকডাউনের পথে হাঁটেন এবং যার ফলে আবারো সংক্রমণের মাত্রা-হার কমতে থাকে। বর্তমানে দেশে ৩টি ভ্যাকসিনের টিকা করণ প্রক্রিয়া চলছে যথা – কোভ্যাকসিন, কোভিশিল্ড ও স্পুটনিক-ভি। উল্লেখিত এই ৩টি ভ্যাকসিন নিলেই যে সেই ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন না এমন উদাহরন এখনো পাওয়া যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, উক্ত ভ্যাকসিনের মধ্যে যেকোন একটির ২টো ডোজ নিলে ঐ ব্যক্তি আক্রান্ত হলেও মৃত্যুর আশঙ্কা অনেকাংশেই কম হবে। তবে বর্তমানে ভ্যাকসিন গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেকেরই ভীতি কাজ করছে, প্রথম পর্যায়ে পোলিও রোগের টীকাকরণের কুফল-ব্যর্থতা স্মরন করে। তবে বর্তমানে, কর্মক্ষেত্রে টীকাকরণ বাধ্যতামূলক করায় অনেকেই ভীত-সন্ত্রস্ত হয়েও রুটি-রুজির টানে বাধ্য হয়েই টীকা নিচ্ছেন। তবে ভবিষ্যতেই বোঝা যাবে এই টীকাকরণের সুফল-কুফল কিন্তু, ততদিনে খুব বেশি দেরি হয়ে যাবে না তো???
শুধুমাত্র টীকাকরণই কি করোনা অতিমারী প্রতিরোধক??? না, আমার মতে সচেতনতাই এই সংক্রামক ব্যাধির প্রতিরোধক। শুধুমাত্র করোনাই না যেকোন রোগের প্রতিরোধক সচেতনতা। আজ সারা বিশ্ব এই সচেতনতার অভাবে অথল জলে তলিয়ে যাচ্ছ। আমাদের সাথে ঘটা যেকোন দুর্ঘটনাই সচেতনতার অভাবেই ঘটে তা যেকোন ক্রাইম বা রোগ বা দুর্ঘটনা। প্রতি ক্ষেত্রেই কিছু সুনির্দিষ্ট সচেতনতা থাকে, তাই করোনা সংক্রামক অতিমারী প্রতিরোধে কিছু নির্দিষ্ট সচেতনতাগুলি হল,-
১) সামাজিক বা শারিরীক দূরত্ব বজায় রাখা;
২) স্যানিটাইজার ব্যবহার করা ও হাত ধোয়া মাঝে মধ্যেই;
৩) জামা-কাপড়ের মতো মাস্ক পরিধান করা;
৪) নাকে মুখে অপরিষ্কার হাত না দেওয়া;
৫) বহু মানুষ একত্রে জমায়েত না হওয়া;
৬) সঠিক খাদ্যগ্রহণ করা;
৭) বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মত চলা;
৮) ওয়ার্ক ফ্রম হোম (উৎপাদন বা নির্মাণ শিল্প ব্যতিত, সেক্ষেত্রে স্থানীয় কর্মী নিয়োগ প্রয়োজনে প্রশিক্ষণ), এডুকেশন ফ্রম হোম, অনলাইন শপিং ও অনলাইন বা ডিজিটাল মাধ্যমের সাহায্যে সরকারি-বেসরকারি কাজকর্ম প্রভৃতি যার ফলে বায়ু দূষনের মাত্রাও হ্রাস পাবে।