নিখিল কর্মকার, নদীয়াঃ শান্তিপুরের প্রধান জীবিকা তাঁতের শাড়ি উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি! কোথাও কোথাও ত্রিপল শুকনো খাবার মিললেও আবার কোথাও কোথাও মিলেনি ত্রান , উপার্জনের বিষয়ে আশ্বাসও মেলেনি ।
তাঁত প্রধান শান্তিপুরে, গন পরিবহন ব্যবস্থাগুলি বন্ধ থাকার ফলে এবং দীর্ঘদিন লকডাউনে বিক্রির তাঁত কাপড়েরহাট গুলি বন্ধ থাকায় অনটনে দিন কাটাচ্ছেন বেশিরভাগ তন্তুজীবি মানুষের। তার উপরে কোথাও ঝড়ে কোথাও বা জল জমে রয়েছে তাঁত কারখানার মধ্যে।
শান্তিপুর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালপুর গোপীনাথ ঠাকুরের লেনের ইনসান শেখের মতো জলমগ্ন হয়ে রয়েছে প্রায় ৭০ টি বাড়ি, যার মধ্যে ৫০ জনেরই প্রধান উপার্জনের ব্যবস্থা তাঁত! জলে ভিজে নষ্ট হয়েছে লক্ষাধিক টাকার মহাজন’ কর্তৃক প্রদত্ত সম্পত্তি।
গয়েশপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত হিজুলি মুসলিম পাড়ার মসিবুল শেখ, ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে, দুটি পাওয়ার লুম তাঁত বসিয়েছিলেন এক লক্ষ টাকা খরচ করে, কারখানা ঘরের মধ্যে এক হাঁটু জল, লোহার তাঁতের নিচের অংশ ডুবে গেছে জলে, যদি না বৃষ্টি হয় প্রাকৃতিক নিয়মে জল শুকাতে লেগে যাবে প্রায় ১৫ দিন! ততোদিনে মরিচা পড়ে শেষ হয়ে যাবে।
বাগাআঁচড়া অঞ্চলের পেকে পাড়া গ্রামে পূর্ণিমা মৃদাঙ্গ ষাটোর্ধ্ব বয়সেও জীবন-জীবিকার কারনে হস্তচালিত তাঁতের কাপড় উৎপাদনে লড়াই করে যাচ্ছেন আজীবন! সুসজ্জিত সুতো ঝড়ে লন্ডভন্ড, থান ইঁট টালিরটুকরো পড়ে নিজে আহত হয়েছেন, সে ক্ষত সেরে যাবে কিছুদিনের মধ্যে! কিন্তু এত বছরের পরিশ্রমে একটি তানা পটি এবং তাঁত যন্ত্র সম্পূর্ণ নিজস্ব মালিকানা হওয়ায় খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হলো তাতে আর কোনদিন ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। এইরকমই শান্তিপুর শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শিব দুর্গা কলোনি, বাগআঁচড়া ঢাকাপাড়া, করমচাপুর সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে প্রায় ৩০০ পরিবারের মূল উপার্জনের তাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকারি ক্ষতি পূরণ হোক বা বেসরকারিভাবে দু-একটি ত্রিপল ছাড়া , আশ্বাস দেন নি কেউই। তাই আপাতত মাথাগোঁজার ব্যবস্থা হলেও, আগামী দিন তাদের পরিবার কিভাবে চলবে! তা প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড়িয়ে।
Social