মূর্তি ছাড়া পূজিত হচ্ছেন বর্ধমানের রাজপরিবারের পটেশ্বরী দুর্গা

Prabir Mondal
2 Min Read

টুডে নিউজ সার্ভিস, বর্ধমানঃ বাঙালির বড় উৎসব দুর্গাপুজো বিভিন্ন জায়গায় চলে প্রতিমার লড়াই বা থিমের লড়াই। আরে এই পূজা মন্ডপে চোখে পড়ে দেবীর মূর্তির কিন্তু বর্ধমানের রাজ আমলের দুর্গাপূজায় দেবী দুর্গা মূর্তিতে নয়, পূজিত হন পটে। যা বর্ধমানের মহারাজ মহাতাব চাঁদ ৩০০ থেকে ৩৫০ বছর আগে থেকে এই পূজা শুরু করেন বলে জানা যায়। যেখানে পটে অর্থাৎ পটেশ্বরী দুর্গা সাড়ে সাত ফুট বাই সাড়ে পাঁচ ফুট ফ্রেমে আঁকা একটি ছবি। যা কখনো বিসর্জন হয় না বরং সেখানে প্রত্যেক বারো বছর অন্তর নতুন করে রং করা হয় ছবিটিতে। রাজ আমলের এই পুজো জাঁকজমক ভাবে অনুষ্ঠিত হতো যেখানে বাহান রকমের ভোগ দেওয়া হতো দেবীকে এবং দেবীকে সুপারি বলিদান দেওয়া হতো।

বর্ধমানের মহিলা কলেজের পিছনে দুর্গা দালানে এই পূজা অনুষ্ঠিত হতো বলে জানা যায়। কিন্তু সেই দুর্গা দালান ভগ্নদশা হওয়ার পর মন্দিরটি পড়ে যায় তারপর সেই পটের দুর্গাকে নিয়ে আসা হয় লক্ষীনারায়ণ জিউ মন্দিরে। আর তারপর থেকেই লক্ষ্মীনারায়ণ জিউ মন্দিরে নারায়ণ শিলা থাকার কারণে থাকার কারণে বৈষ্ণব মতে দেবী পটেশ্বরীর পুজো অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আগে সুপারি বলি হলেও এখন আর কোনরকম বলি হয় না। এই পুজো দেখতে রাজবাড়ীর বর্তমান বংশধরেরা এসে উপস্থিত হয় পাশাপাশি বর্ধমান জেলার আশপাশের এলাকা থেকেও বহু মানুষ হাজির হয় এই পুজো দেখতে।

মন্দিরের প্রধান পুরোহিত উত্তম মিশ্র জানান, রাজবাড়ীর এই পুজোর একটি বৈশিষ্ট্য হলো এখানে দশ দিন ধরে দেবী দুর্গা অর্থাৎ পটেশ্বরী। মহালয়ার পরের দিন থেকেই শুরু হয় এই পুজো। সেই প্রাচীর আমল থেকেই এই রীতি চলে আসছে। পুজোর সময় রাজ পরিবারের বর্তমান বংশধরেরা উপস্থিত হয়। এই পুজোয় প্রায় ৫২ রকমের ভোগ হতো এখন বর্তমানে যৎসামান্য ভোগ হয়। কিন্তু অষ্টমী ও নবমীর দিন ছোলা, হালুয়া, পুড়ি ভোগ দেওয়া হয়। পাশাপাশি পুজোর কয়েকটা দিন গুজরাটি সম্প্রদায়ের মানুষজনারা এখানে জমায়েত হয়ে নাক মন্দিরে ডান্ডিয়া নৃত্য প্রদর্শন করেন। কিন্তু, এই মন্দিরটি এখন ভগ্ন দশায় খুব তাড়াতাড়ি সংস্কার দরকার না হলে যখন তখন ভেঙে পড়তে পারে।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *