মোল্লা জসিমউদ্দিন, বর্ধমানঃ টাকা নিয়ে হানাহানি, চুরি কিংবা ছিনতাই আজকাল প্রায়শই ঘটে। কিন্তু এরই মাঝে সততার এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের তিন বন্ধু। লাখ টাকা কুড়িয়ে পেয়েও নিজেদের মধ্যে না রেখে, তারা সেই অর্থ জমা দেন মঙ্গলকোট থানায়। পুলিশের সহযোগিতায় সেই টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হয় প্রকৃত মালিকের হাতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভাতারের বলগোনা বাজারে কুড়িয়ে পাওয়া এক লক্ষ টাকা জমা দেন মঙ্গলকোটের বেবুচা গ্রামের বাসিন্দা জাহির হোসেন মণ্ডল, রাজা মণ্ডল, এবং অহিত মল্লিক। ঘটনাটি ঘটে চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে।
মঙ্গলকোট থানার আইসি মধুসূদন ঘোষ তৎপরতার সঙ্গে সেই টাকা প্রকৃত মালিক শেখ রফিকুল আলমের হাতে ফিরিয়ে দেন গত শুক্রবার রাতে।
শেখ রফিকুল আলম, যিনি মঙ্গলকোটের বেলগ্রামের বাসিন্দা এবং বলগোনা বাজারে একটি স্টেশনারি দোকানের মালিক, জানান, “গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দোকান বন্ধ করার সময় সমস্ত টাকা একটি ব্যাগে রেখে ভুলে সেটা বাজারেই ফেলে আসি। আমি ভেবেছিলাম ব্যাগটি দোকানেই আছে। শুক্রবার সকালে দোকান খুলে দেখি ব্যাগটি নেই। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও টাকার ব্যাগটি খুঁজে পাইনি।”
তবে সেই মুহূর্তে তার জন্য আশার আলো হয়ে দাঁড়ান তিন সত্ বন্ধু। তারা ব্যাগটি কুড়িয়ে পেয়ে স্থানীয়দের জানিয়ে দেন যে টাকা থানায় জমা করবেন। পরে রফিকুল আলম তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় প্রমাণসহ থানায় গিয়ে তার টাকা ফেরত পান।
মঙ্গলকোট থানার আইসি মধুসূদন ঘোষ তিন বন্ধুর সততার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, “এখনও সমাজে সৎ মানুষ আছেন। তারা টাকাটা জমা দিয়ে গেছেন এবং তা প্রকৃত মালিককে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।”
তিন বন্ধুও তাদের কাজ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, “আমরা মানসিকভাবে তৃপ্ত যে এই অর্থ তার প্রকৃত মালিকের হাতে পৌঁছেছে।” এই ঘটনা মঙ্গলকোটে সততার এক উজ্জ্বল উদাহরণ স্থাপন করেছে এবং সমাজে সৎ মানুষদের গুরুত্বকে আবারও সামনে এনেছে।