তন্ময় অধিকারী,কেতুগ্রামঃ কথায় আছে ‘চুরি বিদ্যা মহাবিদ্যা, যদি না পড়ে ধরা’। চুরি মানে না বলে অন্যের জিনিস নেওয়া। পেশাদার চোরেরা একে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে এবং বিদ্যা হিসেবে শেখাতে পারে।
অনেক সিনেমাতে চোর ও চুরির অনেক গল্প সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
চুরি করলে চোরের বিভিন্ন শাস্তির বিধান আছে।চোর সমাজের চোখে ধরা না পড়লেও শেষ বিচারের দিনে তাকে জবাবদিহি করতে হবে।নাস্তিক, আস্তিক, সকল ধর্মমত র্নিবিশেষে কেয়ামতের দিন,পরলোক বা পরজন্ম এগুলো সবাই বিশ্বাস করি। অর্থাৎ ঈশ্বরের আদালতে সকলের বিচার হবে। “শেষ বিচারের হাইকোর্টেতে উকিল মিলবে না।” তাই ঈশ্বরের আরাধনা করা অথবা সামাজিক কাজে নিজেকে নিয়োজিত থাকা।
কিন্তু সেই চুরি যদি ঈশ্বরের ঘরে বা যদি ঈশ্বরই চুরি হয়ে যায়?

ঈশ্বর চুরির শান্তি দেন” এবং “কিন্ত ঈশ্বর চুরি হলে”। “ঈশ্বর চুরির শান্তি দেন” এই অংশটি সম্ভবত একটি ধারণা বা বিশ্বাসকে বোঝায় যে ঈশ্বর অন্যায়ের শাস্তি দেন। যদি কেউ অন্যায় বা চুরি করে, তবে ঈশ্বর তাকে শাস্তি দেবেন। এটি একটি সাধারণ ধর্মীয় ধারণা। “কিন্ত ঈশ্বর চুরি হলে” এই অংশটি একটি জটিল প্রশ্ন। যদি ঈশ্বর, যিনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন, তিনিই চুরি হন, তাহলে এর অর্থ কী? এটি একটি রূপক বা দার্শনিক প্রশ্ন হতে পারে, যা ঈশ্বরের অস্তিত্ব, ক্ষমতা এবং প্রকৃতির উপর প্রশ্ন তোলে।
যদি ঈশ্বর সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন, তবে তার চুরি যাওয়া বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ধারণা কি সম্ভব?
এই প্রশ্নগুলি ঈশ্বরের প্রকৃতি এবং তার ভূমিকা সম্পর্কে গভীর দার্শনিক বিতর্ক সৃষ্টি করে। এটি একটি রূপক হতে পারে, যা মানব সমাজের দুর্বলতা এবং অন্যায়ের শিকার হওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করে। অথবা, এটি ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস এবং তাঁর বিচার ব্যবস্থার উপর প্রশ্ন তৈরি করতে পারে।
বালি চুরি,কয়লা চুরি,গরু চুরি, চাকরি চুরি, কিডনি চুরি অথবা ১০০ দিনের কাজের চুরি এই পর্যন্ত ঠিক ছিল, কিন্তু তাই বলে ঈশ্বরের ঘরে চুরি।হ্যাঁ ,এমন নৈতিকতা হীনতায় ভুগছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার অন্তর্গত গ্রামবাসী।
কোমরপুর গ্রামের জটাধারী মন্দির, কালাচাঁদ মন্দির অথবা পাচুন্দীর চ্যাটার্জী বাড়ির দূর্গা মন্দির কোনটায় এই অসামাজিক নৈতিকতাহীন পাপীদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে গোপন সি.সি.টি.ভি ক্যামেরাও কোন সুবিধা দিতে পারেনি।
প্রশাসন তদন্ত শুরু করলেও তাঁরাও নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি।যখন চারিদিকে ব্যাপক ধর্ম সংকট বা বিপর্যয়ের কথা চলছে সেই মূহূর্তেও ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস,তার ক্ষমতা, অস্তিত্ব কিছু অনৈতিক মানুষের মানসিকতায় শেষ হতে চলেছে। আমার এই খোলা চিঠি যদি পুনরায় ধর্ম প্রীতি বা ধর্ম ভীতি সৃষ্টি করতে সহায়তা করে, তাহলে এই চিঠি সার্থকতা পায়।