টুডে নিউজ সার্ভিস, মেদিনীপুরঃ মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রসূতি ও সদ্যোজাত মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকদের কাঠগড়ায় তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের আরএমও এবং এমএসভিপি সহ সিনিয়র ও জুনিয়র চিকিৎসক মিলিয়ে মোট ১২ জনকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
গত ৮ জানুয়ারী মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে সিজারের পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ৫ জন মহিলা। তাঁদের মধ্যে ১ জনের মৃত্যু হয়। ৩ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় গ্রিন করিডর করে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ঘটনায় রিঙ্গার্স ল্যাকটেট (আরএল) স্যালাইনের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনায় ১৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য দফতর। তাঁরা ইতিমধ্যেই মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ঘুরে গিয়েছেন। বৈঠক করেছেন মেডিকেল কলেজের সুপার, অধ্যক্ষ, নার্স, চিকিৎসকদের সঙ্গে। সংগ্রহ করা হয়েছে ঔষধ, স্যালাইন, অ্যানাস্থেশিয়া প্রভৃতির নমুনা। সোমবার তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করে এই তদন্ত কমিটি। তারপরেই সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তিনি ঘটনায় সিআইডি তদন্তের ঘোষণা করেন। তদন্তে নেমে মঙ্গলবার দুপুর ১টা নাগাদ মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে আসেন সিআইডি-র তদন্তকারীরা৷ মেডিকেল কলেজের সুপারের অফিসে গিয়ে সুপার ডাঃ জয়ন্তকুমার রাউতকে জেরা করেন তাঁরা৷ তদন্তকারীদের দল পৃথক ভাবে মেডিকেল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসক, জুনিয়র চিকিৎসক, নার্সদের জেরা করে। ঐ দিন ব্যবহার করা ঔষধ, স্যালাইন, ইনজেকশন প্রভৃতি সংগ্রহ করা হয় বলেও জানা গিয়েছে। সংগ্রহ করা হয়েছে নথিপত্রও। জিজ্ঞাসাবাদ চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
ঘটনার প্রেক্ষিতে ব্যবহৃত স্যালাইনের দিকে আঙুল উঠলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি চিকিৎসকদের দায়ী করলেন। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবার পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি জানিয়েছেন, চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির পরেও বাঁচানো যায়নি এক প্রসূতি এবং এক শিশুকে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘যাঁদের কাছে মানুষের ভাগ্য নির্ধারিত হয়, যাঁদের হাতে সন্তান জন্মায়, তাঁরা দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করলে মাকে এবং সন্তানকে বাঁচানো যেত।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, “অস্ত্রোপচারের সময় যে প্রোটোকল মেনে চলা দরকার, তা মানা হয়নি। সিনিয়র চিকিৎসকেরা উপস্থিত না হয়ে জুনিয়র চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করেছেন।’’ ঘটনায় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের আরএমও সৌমেন দাস, বিভাগীয় প্রধান মহম্মদ আলাউদ্দিন, হাসপাতাল সুপার জয়ন্তকুমার রাউত সহ সিনিয়র চিকিৎসক, ইন্টার্ন চিকিৎসক, পিজিটি চিকিৎসক, অ্যানাস্থেশিস্ট মিলিয়ে মোট ১২ জনকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
Social