দেবনাথ মোদক, বাঁকুড়াঃ বাঁকুড়া জেলার স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত একটি অনুষ্ঠানে রাজ্যের খাদ্য সরবরাহ দফতরের প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি অপমানিত হয়ে মঞ্চ ছেড়ে চলে যান। ঘটনাটি কেন্দ্র করে জেলার রাজনৈতিক মহলে তুমুল চাপানউতোর শুরু হয়েছে। মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি জানিয়েছেন, তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে অপমানিত করা হয়েছে, যার ফলে তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়ে অনুষ্ঠানের মঞ্চ ছেড়ে চলে যান।
বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছিল ওইদিন এবং মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। আমন্ত্রণ পত্রে উদ্বোধনের নির্ধারিত সময় ছিল সকাল ৯টা। তবে মন্ত্রীকে মৌখিকভাবে জানানো হয় তিনি ১১টা নাগাদ অনুষ্ঠানে আসলে হবে। সেই অনুযায়ী মন্ত্রী ১০টা ৪০ নাগাদ স্টেডিয়ামে পৌঁছান। কিন্তু, ততক্ষণে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন হয়ে যায়। মন্ত্রী বিষয়টি বুঝতে পেরে অপমানিত বোধ করে ক্ষুব্ধ হয়ে মঞ্চ ছাড়েন। আয়োজকদের পক্ষ থেকে মন্ত্রীকে সম্মান জানানো চেষ্টা করা হলেও, মন্ত্রী তা ফিরিয়ে দিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে মাঠ ছেড়ে চলে যান।
এ ঘটনায় জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি শ্যামল সাঁতরা এবং বাঁকুড়ার সাংসদ অরুপ চক্রবর্তী অস্বস্তিতে পড়েন। মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি-র অভিযোগ যে, তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে অপমান করা হয়েছে এবং এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছিল।
তিনি আরও বলেন, “এটি ছিল একেবারে ইচ্ছাকৃত অপমান।” অন্যদিকে, শ্যামল সাঁতরা, যিনি রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং বর্তমানে বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি মন্ত্রীর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “মন্ত্রীকে সঠিক সময়ই জানানো হয়েছিল, কিন্তু তিনি দেরি করে পৌঁছানোর কারণে, শিশুদের প্রতিযোগিতার সময় মাথায় রেখে উদ্বোধন আগে করে দেওয়া হয়।”
এদিকে, বাঁকুড়া সাংসদ অরুপ চক্রবর্তী এই ঘটনার ব্যাপারে ‘সামান্য অভিমান’ বলে মন্তব্য করেছেন এবং পুরো বিষয়টি গুরুত্বহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এটা শুধু একটু ছোটখাটো অভিমান, যা কোনো বড় সমস্যা সৃষ্টি করবে না।”
এটি একটি উল্টো পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যেখানে মন্ত্রী নিজের অপমানের ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন, অন্যদিকে, জেলা সভাপতি এবং সাংসদ এর সঠিকতা নিয়ে আলাদা বক্তব্য রেখেছেন। তবে, একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, এই ঘটনাটি রাজনৈতিক মহলে তুমুল আলোচনার সৃষ্টি করেছে এবং বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ ও স্থানীয় সাংসদের জন্য এক বড় ধরনের অস্বস্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
