সরস্বতী পুজোর পরেরদিন আজও তত্ত্ব আদান-প্রদান উৎসবে সামিল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা

Prabir Mondal
2 Min Read

টুডে নিউজ সার্ভিস, বর্ধমানঃ সরস্বতী পুজোর পরেরদিন আজও তত্ত্ব আদান-প্রদান উৎসবে সামিল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। বয়েজ হস্টেল থেকে তত্ত্ব যাচ্ছে গার্লস হস্টেলে। অন্যদিকে, গার্লস হস্টেল থেকে তত্ত্ব আসছে বয়েজ হস্টেলে। ছেলেরা সবাই পাঞ্জাবী পরে আর মেয়েরা শাড়ি পরে নিয়ে যাচ্ছে এই তত্ত্ব। এমনই ছবি ধরা পড়ল সরস্বতী পুজোর পরেরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার বর্ধমানে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে দীর্ঘদিন ধরেই হয়ে আসছে এই তত্ত্ব উৎসব। এই তত্ত্ব উৎসব ঘিরে মেতে উঠলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। এই অনুষ্ঠান ঘিরে কার্যতঃ আনন্দে মেতে উঠেছেন তাঁরা।
সাতের দশক থেকে চলে আসা এই রীতির মূল আকর্ষণ হল একে অপরের হোস্টেলে গিয়ে উপহার বিনিময় করা। মিষ্টি, চকোলেট, ফুল এইসব উপহার আদান-প্রদানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠে বন্ধুত্বের নতুন বন্ধন, অনেক ক্ষেত্রে প্রেমের সূচনা। বছরের অন্যদিন যেখানে ছাত্রাবাসে ছাত্রীদের প্রবেশ নিষেধ, ছাত্রীদের আবাসেও ছাত্রদের প্রবেশ সম্ভব নয়, এদিন সেই নিয়মের বাঁধন আলগা হয়। পড়ুয়ারা ঢাক-কাঁসর বাজিয়ে, আনন্দে নেচে একে অপরের হস্টেলে পৌঁছে যান, হাতে উপহার সামগ্রী সাজানো তত্ত্বের ডালি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের ছাত্রীদের সঙ্গে পরিচিতি বা বন্ধুত্ব তৈরি হয় চিত্তরঞ্জন, বিবেকানন্দ, নেতাজি ও রবীন্দ্র হস্টেলের ছাত্রদের। চকোলেট বা ফুল বিনিময়ের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পায় সুপ্ত আবেগ। নতুন বন্ধুত্বের পাশাপাশি পুরনো সম্পর্কও আরও দৃঢ় হয়।
এই প্রথা ঠিক কবে, কীভাবে শুরু হয়েছিল, তার সঠিক তথ্য নেই কারও কাছে। তবে প্রবীণ ছাত্রদের মতে, এটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এক ঐতিহ্য, যা শুধুই সৌহার্দ্যের নয়, ভালোবাসারও প্রতীক। সরস্বতী পুজোর আবহ কাটতে না কাটতেই ক্যাম্পাসে যেন ছড়িয়ে পড়ে এক নতুন প্রেমের বাতাস। পুজোর দেবী বিদ্যার প্রতীক হলেও, পুজোর পরের দিনটিতে প্রেমই যেন মুখ্য হয়ে ওঠে।
প্রতি বছরই এই দিনে নতুন সম্পর্কের সূচনা হয়, তৈরি হয় এক নতুন ইতিহাস। তাই এই উৎসব শুধুমাত্র তত্ত্ব আদান-প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, এটি হয়ে ওঠে আবেগের, তৈরি হয় এক অন্যরকম ভালবাসার গল্প।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *