ছাত্র-সংঘর্ষে রণক্ষেত্র যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, জখম শিক্ষামন্ত্রী

Prabir Mondal
3 Min Read

টুডে নিউজ সার্ভিসঃ ছাত্র-সংঘর্ষে রণক্ষেত্র যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শিক্ষামন্ত্রী তৃণমূলের অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুপারের সাথে বৈঠক সেরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরোচ্ছিলেন। সেই সময় তার গাড়ির চাকার হাওয়া খুলে দেন আন্দোলনরত পড়ুয়ারা। গাড়ি থেকে নেমে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু তাঁর সামনেই চলতে থাকে বিক্ষোভ। ওঠে ‘চোর-চোর স্লোগান’। পরে মন্ত্রীর গাড়ি এবং সঙ্গে থাকা দু’টি পাইলট কারে ভাঙচুর চালানো হয়। ভেঙে দেওয়া গাড়ির ‘লুকিং গ্লাস’ও। মন্ত্রী জানান, গাড়িতে ইট ছোড়া এবং হেনস্থার জেরে আহত হয়েছেন তিনি। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য তিনি যান এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে।পড়ুয়াদের বিক্ষোভ থেকে রেহাই পাননি অধ্যাপকরাও। যাদবপুরের অধ্যাপক তথা ওয়েবকুপার সদস্য ওমপ্রকাশ মিশ্রকে লাঠি হাতে তাড়া করেন বাম এবং অতি বাম সংগঠনের কয়েক জন পড়ুয়া। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যান। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ধস্তাধস্তির মধ্যে এক পড়ুয়ার মাথা ফেটেছে। আহত হয়েছেন দুই অধ্যাপক। এক মহিলা অধ্যাপকের শাড়ি ছেঁড়ার অভিযোগও উঠেছে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে।বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরোনোর আগে ছাত্রবিক্ষোভ সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “এই গুন্ডামি চলতে পারে না। পড়ুয়াদের চার জন প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে পারি। কিন্তু সবাই মিলে গুন্ডামি করলে মুশকিল। তবে আমি কোনও প্ররোচনায় পা দেব না। যাঁরা এগুলি করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে উপাচার্য পদক্ষেপ করবেন।” পরে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে ব্রাত্য বলেন, “এটা যদি উত্তরপ্রদেশে হত, কোন‌ও ছাত্র সংগঠন এই কাজ করতে পারত? আজকের যে ঘটনা, আমরা চাইলেই পুলিশ ডাকতে পারতম। কিন্তু আমি বারণ করেছি, শিক্ষাঙ্গনে যেন এক জনও পুলিশ না প্রবেশ করে। শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন এয়ার থিয়েটারে ওয়েবকুপার বৈঠকে যোগ দেন তিনি। সেই বৈঠক শুরু হওয়ার আগেই তৈরি হয় উত্তেজনা। ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ ভোটের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছিলেন বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলির সদস্যেরা। বৈঠকে যোগ দিতে এসে বিক্ষোভকারীদের বাধার মুখে পড়েন ব্রাত্য। তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করিয়ে ওপেন এয়ার থিয়েটারের পিছন দিয়ে মঞ্চে তোলা হয়।ব্রাত্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরেও বিশৃঙ্খলা থামেনি। অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারী সংগঠনের অফিসে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার প্রতিবাদে যাদবপুর এইট বি মোড়ে রাস্তা অবরোধ করেন বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই-এর পড়ুয়ারা। ওই পড়ুয়াদের বক্তব্য, শিক্ষামন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরোনোর সময় এক পড়ুয়া গাড়ির ধাক্কায় আহত হয়েছেন। তাঁর মাথা ফেটেছে বলে দাবি করা হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রীকে হেনস্থা করার প্রতিবাদে তৃণমূলের তরফ থেকে সন্ধ্যা ৭টায় সুকান্ত সেতু থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল করে তৃণমূল। এই মিছিলে যোগ দেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা টালিগঞ্জের বিধায়ক অরূপ বিশ্বাস, যাদবপুরের সাংসদ সায়নী ঘোষ এবংর যাদবপুরের বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *