ডিজিটাল অ্যারেস্টের হুমকি দিয়ে হাসপাতালের ঠিকা কর্মীকে প্রতারণার চেষ্টা

Prabir Mondal
3 Min Read

টুডে নিউজ সার্ভিস, বর্ধমানঃ ডিজিটাল অ্যারেস্টের হুমকি দিয়ে আবার প্রতারণার চেষ্টা। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি উইং অনাময় হাসপাতালের ঠিকা কর্মী তাপস কুমার হাজরাকে। তাপস বাবু জানিয়েছেন তাঁকে রীতিমতো ডিজিটাল অ্যারেস্টের  ভয় দেখিয়ে  শুক্রবার মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে প্রতারকরা একই সাথে পুলিশের পোশাক পরা এক ব্যক্তির সাথে ভিডিও কলে  কথাও বলায়। শনিবার বিষয়টি নিয়ে বর্ধমান সাইবার ক্রাইম পুলিশ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাপস বাবু । তাপস বাবু জানান, শুক্রবার দুপুর ১১টা ৩০ মিনিট নাগাদ তাঁর কাছে অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন আসে। তারা তাপসবাবুকে বলে, তাঁর নামে মহারাষ্ট্রের পুনেতে একাধিক থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তাঁর নামে ২০-২৫টা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় আড়াই কোটি টাকা বেআইনি লেনদেন হয়েছে। আপনার নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে। ২ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে ডিজিটাল অ্যারেস্ট করা হবে। তারা আরও জানায়, পুনেতে গিয়ে জামিন নিতে হবে। তাতে প্রায় ৩০-৪০ হাজার টাকা খরচ হবে। প্রতারক তাপস বাবুকে বলে, “আমি স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। আপনি ২১ হাজার ৮৫০ টাকা এখনই পাঠিয়ে দিন। আপনার জামিন হয়ে যাবে। আর জামিন হয়ে গেলে ২০ হাজার টাকা ফেরত পেয়ে যাবেন।”

এরপরই সে ফোনটা কেটে দিয়ে তাপসবাবুকে ভিডিও কল করে। এবং তাঁকে বলে ফাঁকা জায়গায় যেতে। সেই সময় অন্য প্রান্ত থেকে পুলিশের পোশাক পরা এক ব্যক্তি আবছা লেখায় তার নামের কানাড়া ব্যঙ্কের একটা এটিএম কার্ড দেখায় এবং আধার নম্বর বলে।

তাপসবাবুকে বলা হয়, সেটা তাঁর আধার কার্ডের সঙ্গে মিল আছে কি না, তা দেখানোর জন্য ক্যামেরার সামনে ধরতে। তাপসবাবু জানান,  আমি ভয় পেয়ে গিয়ে তার কথামতো আমার আধার কার্ড ক্যামেরার সামনে ধরে তা মিলিয়ে দেখি আমার কার্ডের নম্বর হুবহু একই। এরপর আমাকে বেশ কিছু ছবি ও কাগজ পাঠিয়ে বলে টাকা পাঠিয়ে দিন। প্রতারকরা তাকে হুমকী দিয়ে বলে তিনি যেন এই কথা দ্বিতীয় কোনও ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা না করেন। করলে তাঁর ক্ষতি হয়ে যাবে। এরপর ফোনটা কেটে তাপসবাবু তাঁর ছেলেদের ফোনে সব জানান। তাঁরা ওই ব্যক্তিকে ফোন করলে সঙ্গে সঙ্গে তাপসবাবুর হোয়াটঅ্যাপে প্রতারকরা যে সব ছবি পাঠিয়েছিল, তা মুহূর্তের মধ্যে ডিলিট করে দেয়। অপরদিকে তাঁর ছেলেকেও হুমকি দেয়, তোর বাবার কী অবস্থা করি, দেখবি পরে।

তাপস বাবু আরও বলেন, তিনি এই ঘটনার পর বেশ ভয় পেয়ে যান। একটি বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সহ তাঁর বেশ কিছু নথি প্রতারকরা কীভাবে পেল, তা তিনি কিছুতেই মেলাতে পাচ্ছিলেন না। পরে বন্ধুবান্ধব এবং ছেলেদের কথায় তিনি  বর্ধমান সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অপরদিকে  বর্ধমান সাইবার ক্রাইম থানা এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করেছে বলে জানাগেছে।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *