টুডে নিউজ সার্ভিস, বর্ধমানঃ দুই অসহায় বিধবা মহিলার কাছ থেকে রশিদ কেটে উন্নয়ন ফি নেওয়ার অভিযোগ উঠলো পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার অন্তর্গত দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আলিপুর গ্রামে। একজনের নাম সরস্বতী তুরী। তিনি স্বামী সন্তানহীন অসহায় মহিলা লোকের বাড়িতে কাজ করে মাটির ভাঙ্গা বাড়িতে কোনোরকমে দিনযাপন করেন। অপর বিধবা মহিলার নাম সবিতা দাস, বিবাহযোগ্য কন্যা ও এক পুত্রকে নিয়ে কোনো রকমে দিন কাটে তাদের। নুন আনতে পান্তা ফুরানো জোড়া তালি দিয়ে সংসারে মাথা গোজার ঠাঁই বলতে একটা ভাঙা কুঠীর। দুজনেই মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া বাংলার বাড়ি প্রকল্পে বাড়ির প্রথম কিস্তির ৬০,০০০ টাকা পেয়েছেন। এরপর পঞ্চায়েত থেকে তাদের কাছে একেবারে রশিদ কেটে দুজনের কাছ থেকেই হাজার টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগ শুধু দুর্গাপুর পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে নয়, মেমারি-১ ব্লকের অনেক পঞ্চায়েতেই ডেভেলপমেন্ট ফি বাবদ কোথাও ৫০০ টাকা কোথাও ১০০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
যদিও ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে পঞ্চায়েতকে ‘নাক গলাতে’ নিষেধ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরেও তার কথাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নেয়া হয়েছে টাকা।
এ ব্যাপারে দুর্গাপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নিতাই ঘোষকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করেন। তিনি জানান কোন ঘর প্রাপকদের কাছ থেকে কোনরকম টাকা নেওয়া হয়নি। এরপর সাংবাদিকরা চেপে ধরলে, তিনি প্রথমে জানান বাড়ি পারমিশনের জন্য টাকা নেওয়া হয়েছে আবার তিনি জানান বাস্তু জমির শ্রেণী পরিবর্তন করার জন্য টাকা নেওয়া হয়েছে।
এরপর সাংবাদিকরা যখন প্রশ্ন করেন, বাস্তু জমি রেকর্ড করার ক্ষেত্রে বিষয়টা বিএলআরও দেখেন । সে ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত কি টাকা নিতে পারে ? উত্তরে উপধান নিতাইবাবু জানান, টাকা নেওয়া যায় । এক কথায় তিনি জানান পঞ্চায়েত ডোনেশনের ওপরে চলে, অর্থাৎ পঞ্চায়েতের আনুষঙ্গিক খরচাপাতির জন্য ডোনেশন নেওয়া হয়। অর্থাৎ, এই টাকা নেয়া হয়েছে পঞ্চায়েতের নিজস্ব ফান্ডের জন্য। তবে তিনি সাংবাদিকদের জানান, বাংলার বাড়ির প্রাপকদের কাছ থেকে কোনোরকম টাকা নেওয়া হয়নি।
পঞ্চায়েত উপপ্রধান অস্বীকার করলেও সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়লো অন্য ছবি, এই দুই অসহায় মহিলা যাদের একবেলা আহার জুটলে অন্য বেলায় কি খাবে চিন্তা করতে হয়! তাদের কাছ থেকে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে যে কারণেই হোক এই হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে।
তবে সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই মেমারি এক নম্বর ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত যারা রশিদ কেটে ঘর প্রাপকদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে সমস্ত বিষয়টি প্রশাসন খতিয়ে দেখছেন।।
