জেলবন্দিদের উৎসবের স্বাদ দিতে নয়া পরিকল্পনা জেল কর্তৃপক্ষের

Prabir Mondal
3 Min Read

টুডে নিউজ সার্ভিসঃ দেবীপক্ষ শুরু হয়েছে এবং মহালয়া থেকেই পূজা মণ্ডপগুলোতে ভক্তদের ভিড় একপ্রকার জমতে শুরু করেছে। সারাদেশে চলছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি। পশ্চিমবঙ্গে এই সময় বাংলায় দেবী দুর্গার জমকালো প্যান্ডেল তৈরী করা হয় এবং বিভিন্ন ধরনের খাবারও প্রস্তুত করা হয়। এদিকে এই উৎসবে পশ্চিমবঙ্গের কারাগারে বন্দিরাও পাবেন সুস্বাদু খাবার এবার।

বন্দীরাও উৎসবের সময় খাবারের মেনুতে পরিবর্তনের আবেদন জানায়। এমন পরিস্থিতিতে ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত জেল কর্তৃপক্ষ এই বন্দীদের জন্য আলাদা কিছু করে থাকে। ৯ অক্টোবর থেকে দশমী অর্থাৎ ১২ অক্টোবর পর্যন্ত নতুন মেনু অনুযায়ী বন্দীদের দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবার পরিবেশন করা হবে। এই বিষয়ে কর্মকর্তারা জানান, সময়ের আগেই খাবারের সামান্য অংশ সংরক্ষণ করে তা রক্ষা করা হয়।
যাতে বাড়তি কোনো খরচ না হয়। দুর্গাপূজার কারণে পশ্চিমবঙ্গে বন্দিদের জন্য বিশেষ মেনু তৈরী করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মাছের মাথা দিয়ে পুঁই শাক, মাছের মাথা দিয়ে মুগ ডাল, রাধা বল্লভী এবং ডাল, খির, চিকেন কারি, আলুপটল চিংড়ি, রাইতার সঙ্গে মাটন বিরিয়ানি, বাসন্তী পোলাও রয়েছে।
ব্যারাকপুর সাব-রিফর্মেশন হোমের একজন সিনিয়র জেল আধিকারিক বলেছেন যে জেলটি একটি সংস্কার হোম। বন্দীরা উৎসবের আগে আমাদের চিঠি লেখে এবারে পুজোর সময় খাওয়ার জন্য। আমরা এই বছর মেনুর সঙ্গে প্রক্রিয়ার উন্নতিতেও মনোনিবেশ করছি। আমাদের এই বন্দিদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা। একই সময়ে, বর্ধমান সেন্ট্রাল কারেকশনাল হোমের এক সিনিয়র জেল আধিকারিক জানিয়েছেন যে এখন জেলের ক্যান্টিনে বাবুর্চি এবং হেল্পার হিসাবে কাজ করা বন্দীরা পাঁচ দিনের উৎযাপনের জন্য এই সমস্ত প্রস্তুতি নেবেন। এই বিষয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রতি উৎসবে আমরা বন্দিদের কাছ থেকে ভালো খাবারের অনুরোধ পাই। আমরা এই বছর একটি নতুন মেনু পেয়েছি এবং আমরা আশা করি এটি তাদের মুখেও হাসি আনবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এটাকে তাঁদের উন্নতির দিকে খুবই ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে মনে করি। তবে বন্দীদের ধর্মীয় অনুভূতিরও পূর্ণ খেয়াল রাখা হয়েছে। আমিষ খাবার ছাড়াও বন্দীদের জন্য নিরামিষ খাবারের ব্যবস্থা থাকবে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলার ৫৯টি কারাগারে মোট ২৮,৭৭২ জন বন্দী রয়েছে, যার মধ্যে ২৬,৯৯৪ জন পুরুষ এবং ১,৭৭৮ জন মহিলা বন্দী।
এক জেল সুপার জানান,মানছি ওরা দোষ করেছে। ওদেরও তো ইচ্ছে টা হয় এই পুজো গণ্ডার দিন একটু ভালোমন্দ খেতে। নিজেদের কে শুধরাতে ওরা এখন অনেক বেশি নিজেদের প্রতি মনোনিবেশ করে যা সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যেত না। তাই সবদিক ভাবনা চিন্তা করেই এবারের পুজোয় ওদের জন্য যদি একটু ভালো খাবারের ব্যবস্থা করা যায় তাতে আর মন্দ কি!!
উল্লেখ্য,,কদিন আগেই যখন সন্দীপ ঘোষ গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রেসিডেন্সি জেলে তখন তিনি পোড়া রুটি আর কুমড়োর ঘ্যাঁট খেতে অস্বীকার করেন। মেজাজ হারিয়ে বলেই ফেলেছিলেন “এই খাবার কি মুখে দেওয়া যায়, আমাকে একটা ডিম সিদ্ধ দেবেন,” কিন্তু কারারক্ষীরা পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছিলেন তা সম্ভব নয়, জেলের বাকি সবাই যা খাবার খাচ্ছে আপনাকেও তাই খেতে হবে। তারপর এইবার পুজোর সময় এরকম পঞ্চব্যঞ্জন কতটা তৃপ্তি আনতে সক্ষম হয় কয়েদীদের অন্যদিকে কতটাই জেল সুপার থেকে শুরু করে কারারক্ষীরা মন জয় করতে পারেন এবার কয়েদীদের সেটাই এখন দেখার।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *