মাটি ও বালি বোঝাই গাড়ি আটক

Prabir Mondal
3 Min Read

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জীঃ অজয়, দামোদর, দ্বারকেশ্বর, ময়ূরাক্ষী সহ এই রাজ্যের একাধিক নদীর বুকে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ বালির খাদান। এইসব খাদান থেকে বেআইনিভাবে বালি উত্তোলনের ফলে সরকারের রাজস্বের ক্ষতি হচ্ছে। অন্যদিকে পকেট ভরছে খাদান মালিকদের, শাসকদলের স্থানীয় নেতা সহ একদল দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মচারিদের। যে কোনো উৎসবে চাঁদা তোলার মত বিভিন্ন জায়গায় গাড়িগুলো থেকে অর্থ আদায় করা হয়। শোনা যায় খাদান মালিকরা স্থানীয় থানায় ‘ভেট’ দেয়। অজয় বা দামোদর যাইহোক না কেন দেখা যাবে প্রশাসনের চোখের সামনে ব্রীজের একশ মিটারের মধ্যে নদীর বুকে জেসিবি ব্যবহার করে বালি তোলা হচ্ছে। এরফলে ব্রীজ দুর্বল হচ্ছে। কোথাও বা নদীর বুকে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। নদীর গতিপথের পরিবর্তন হচ্ছে। অতিরিক্ত বালি বোঝাই গাড়িগুলো যে রাস্তা দিয়ে ছুটে চলেছে সেই রাস্তাগুলো অল্প সময়েই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সব দেখে প্রশাসন নীরব থেকে যাচ্ছে। থাকবেই বা না কেন! অধিকাংশ বালির খাদানের মালিকের মাথার উপর হাত থাকছে শাসকদলের স্থানীয় নেতাদের। কোথাও কোথাও তারাই আবার খাদানের মালিক।

গত ২৪ জুন পুরপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জ্জী মিটিং করেন। শোনা যাচ্ছে অবৈধ বালি ও পাথর খাদান, বেআইনিভাবে সরকারি জায়গা ও ফুটপাত দখল সহ একাধিক বিষয়ে তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি মন্ত্রী, দপ্তরের সচিব, পুর প্রধানদের ভৎসনা করেন। প্রশ্নের মুখে পড়ে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা।

তার নির্দেশের পরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসনিক আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা। অবৈধ মাটি ও বালি পাচারের বিরুদ্ধে বড়সড় পদক্ষেপ নেয় জামুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতি।

২৫ জুন জামুরিয়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সিদ্ধার্থ রানার নেতৃত্বে ভূমি দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ জগন্নাথ শেঠ, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ অনিমেষ ব্যানার্জ্জী, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ উদীপ সিং, কৃষি কর্মাধ্যক্ষ কৌস্তব চক্রবর্তী অভিযানে নামেন। ৬০ নং জাতীয় সড়কের বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ধসল মোড়ের কাছে তারা দুটি মাটি বোঝাই ডাম্পার আটক করেন।

সঙ্গে কোনো বৈধ কাগজপত্র না থাকায় গাড়ি দুটি ও গাড়ি চালকদের কেন্দা ফাঁড়ির পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই ধরনের অভিযান চালিয়ে আরও চারটি মাটি বোঝাই ট্রাক্টর আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি ধসল মোড়ে অবস্থিত গাড়ি ওজন করার আড়ালে চলছিল অবৈধ বালি কারবার। খবর পেয়ে তারা সেখানে যান। তারা লক্ষ্য করে দেখেন প্রায় এক থেকে দেড় হাজার সিএফটিরও বেশি অবৈধ বালি মজুদ করা রয়েছে। খবর পেয়ে ভূমি দপ্তরের শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকরাও ঘটনা স্থলে চলে আসেন।

প্রশাসনের এই ত‍ৎপরতায় খুব খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের দাবি এই ধরনের অভিযান নিয়মিত চালাতে হবে।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *