Breaking News

পুজো কমিটি গুলোকে ছাড় দিয়ে মানুষের ঘাড়ে আরও বোঝা চাপালো সরকার

মোহন সাহাঃ একলাফে ক্লাব গুলোকে ১৫ হাজার টাকা পুজোর অনুদান বাড়িয়ে দিল রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো কমিটি গুলোকে নিয়ে বৈঠক করা হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। প্রতিবারের মতো মুখ্যমন্ত্রী এদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগের বার ৭০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম দূর্গা পুজো করার জন্য। এবার পুজো কমিটি গুলোকে সেই টাকা বাড়িয়ে ৮৫ হাজার করে দিচ্ছি।’’ মুখ্যমন্ত্রী যখন এই কথা বলছেন তখন কমিটি গুলোর পক্ষ থেকে এক লক্ষ টাকার দাবি জানানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘স্ল্যাব আছে। একে বারে দিলে হয় নাকি? এবার ৮৫ হাজার দিচ্ছি পরের বার এক লক্ষ টাকা দেবো, এখনই বলে দিলাম। দুবারেরটা একবারে বলে দিলাম।’’ বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে মমতার এই ঘোষনা বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন রাজ্যে মোট পুজো কমিটির সংখ্যা ৪৩ হাজার। সব পুজো কমিটি গুলোকে যদি ৮৫ হাজার টাকা দেওয়া হয় তাহলে ৩৬৫ কোটি টাকা খরচ হবে রাজ্যের। এদিন তিনি দাবি করেছেন কেন্দ্র বাজেটে রাজ্য ফের বঞ্চিত। কিন্তু তাও উৎসবের জন্য টাকা দেবে সরকার।

এখানেই প্রশ্ন উঠছে ক্লাব গুলোর জন্য বরাদ্দ যদি সরকার বাড়াতে পারে তাহলে কেন সরকারি কর্মীদের ডিএ দেওয়া হচ্ছে না, মিড ডে মিলে বা শিক্ষা খাতে কেন ব্যাব বরাদ্দ বাড়াচ্ছে না সরকার?

কয়েকদিন আগে বিদ্যুৎ এর মাশুল বেড়েছে। সেই প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ এর দাম বেড়েছে তাই এবার পুজো কমিটি গুলোকে বিদ্যুৎ এর ক্ষেত্রে ৭% শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। দমকলের অনুমোদনের জন্য কোন টাকা লাগবে না।’’ বিদ্যুৎ এর দাম কমানোর জন্য সরকার কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না মানুষের ওপর বোঝা বাড়ছে তার ওপর পুজো কমিটি গুলোকে ছাড় দিয়ে আরও বোঝা বাড়িয়ে দিল রাজ্য। 

এদিনের বৈঠক থেকে প্রশাসনকে পুজোর সময় সক্রিয় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। তার কথায় যান চলাচল থেকে মন্ডপে দর্শনার্থীদের চাপ সব কিছু সুষ্ট ভাবে পরিচালনা করতে হবে। উল্লেখ্য প্রশ্ন থাকছে রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশের কর্মী মিলিয়ে যা সংখ্যা তাতে এই কাজ করা কোন ভাবে সম্ভব নয়। এনসিসি থেকে সিভিক ভলেন্টিয়ার সবাইকে ব্যবহার করা হয় এই কাজে। যার বদলে সামান্য কিছু টাকা দেওয়া হয় তাদের। 

সুজিত বসুকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সুজিত এখানে আছে মনে রাখতে হবে একটা শ্রীভূমির পুজোর জন্য যেন গোটা রাস্তা বন্ধ না হয়ে যায়। তবে শুধু শ্রীভূমি না উত্তর কলকাতার কয়েকটা পুজোর জন্যও রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।’’ মুখ্যমন্ত্রী যে নাম না করে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজোকে খোঁচা দিলেন তা বোঝা যাচ্ছে। গত বছর তাদের থিম ছিল রাম মন্দির। ভিড়ের কারণে পদপিষ্ট হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে।

উল্লেখ্য মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধনের কারণে মহালয়ার আগে থেকেই মন্ডপে ভিড় করতে থাকেন অনেকে। যার জেরে অফিস থেকে ফেরার পথে নাকাল হতে হয় সাধারণ মানুষকে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন ক্লাব গুলোকে তাদের থিম আগে থেকে প্রশাসনকে জানাতে হবে যাতে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া যায় ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার জন্য।  

১৫ অক্টোবর কার্নিভাল হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গত বছরের মতো জেলায় জেলায় কার্নিভাল হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।   

About News Desk

Check Also

চাকরি দেওয়ার নামে দলের নেতার কাছেই প্রতারণার শিকার, সব হারিয়ে আত্মঘাতী তৃণমূল নেতা

দেবনাথ মোদক, বাঁকুড়াঃ হাতে তিন চারটে চাকরি রয়েছে। কিন্তু তার জন্য দিতে হবে মোটা অঙ্কের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *