টুডে নিউজ সার্ভিস, দুর্গাপুরঃ দুর্গাপুর দেখলে এক অন্য মে দিবস। আন্তর্জাতিক মে দিবস বা শ্রমিক দিবস উদযাপিত হলো চালক দিবস হিসেবে। পূর্ব ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একমাত্র স্থলবন্দরে ড্রাইভারদের হাতে তুলে দেওয়া হল তাঁদের ঝুঁকিপূর্ণ জীবন ও শ্রমের মর্যাদা স্বরূপ পুরস্কার। এখানেই থেমে থাকা নয় পুরস্কার হাতে তুলে দেওয়ার সময় আরও বড় চমক অপেক্ষা করছিল, অবিরত পণ্যবাহী ট্রাকে যারা স্থানান্তরের সামগ্রী পৌঁছে দেন কন্টেনার, তাঁদের পুরস্কারের মোড়ক ছিল দৈনিক সংবাদপত্র। আয়োজকদের পক্ষে এলাইড আই সি ডি সার্ভিসেস লিমিটেডের পক্ষে ট্রান্সপোর্ট ম্যানেজার রাজেশ কুমার প্রসাদ জানান, পুরস্কারে ব্যবহৃত মোড়কে কোন প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়নি, পৃথিবীতে দূষণমুক্ত রাখার বার্তা হিসেবে। শেষ পর্যন্ত এই সমস্ত পণ্যবাহী কন্টেইনারের চালকরাই সমাজের প্রয়োজনীয় পণ্য মানুষের হাতে তুলে দেয়। সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পেছন থেকে এদের ভূমিকা অগ্রগণ্যই বলা যায়। তাই শ্রমিক দিবসকে আমরা চালক দিবসে রূপান্তরিত করে অন্য ভাবে উৎযাপন করি প্রতি বছর। মে দিবসের এই বিশেষ অনুষ্ঠানে কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরের বেঙ্গল এরোট্রোপলিস লিমিটেডের ডাইরেক্টর কৈলাস মন্ডল উপস্থিত ছিলেন, তিনি তার বক্তব্যতে জানান অন্ডাল বিমানবন্দরে ও কার্গো টার্মিনাল রয়েছে, এই স্থলবন্দরের পাশাপাশি কার্গো টার্মিনাল পূর্ব ভারতে উন্নয়নের দিশা দেখাচ্ছে। সমগ্র এলাকায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিধি যে বাড়ছে সেটা বোঝা যায়। চালকদের সম্মানিত করা অভিনব একটি পন্থা। সমাজের তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
দুর্গাপুর স্থলবন্দর হল পূর্ব ভারতের প্রথম ও একমাত্র স্থলবন্দর। পশ্চিমবঙ্গে হলদিয়া বন্দর ও কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে জাহাজে বহু পণ্য যাতায়াত করে। ওই দুই বন্দরের উপরে চাপ কমাতেই ২০০৬ সালের মে মাসে দুর্গাপুরের বাঁশকোপায় স্থলবন্দর গড়ে তোলা হয়। বন্দরটির বছরে কন্টেইনার পরিবহন ক্ষমতা ৬০,০০০ টি।
দুর্গাপুর স্থলবন্দর ব্যবহার করে ঝাড়খণ্ড, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশাসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের পণ্য কন্টেইনারজাত করে অভিবাসন ও শুল্কের ছাড়পত্র নিয়ে সরাসরি কলকাতা বন্দর ও হলদিয়া বন্দর ব্যবহার করে বিদেশে পাঠানো হয়। এছাড়া এই বন্দর থেকে পণ্য বাংলাদেশ পাঠানো হয় পেট্রাপোল স্থলবন্দর মাধ্যে। এতে ২-৩ দিন সময় বাঁচে।
বাঁশকোপায় প্রায় পাঁচ হেক্টর এলাকা জুড়ে গড়া হয়েছে স্থলবন্দরটি। রয়েছে পর্যাপ্ত আয়তনের গুদাম। কনটেনার ওজন করা থেকে শুল্ক নেওয়া বা শুল্ক দফতরের ছাড়পত্র দেওয়ার মতো নানা ব্যবস্থা আছে। ফাঁকা কন্টেনার রাখার জন্য আলাদা গুদাম, কনটেইনার সারাইয়ের সুবিধাও রয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে পেশাদার রক্ষীরা আছেন। ২৪ ঘণ্টা নজরদারির জন্য রয়েছে সিসিটিভি। কর্মীর সংখ্যা শ’দুয়েক। ২০১১ সালে ভারতীয় রেলের অধীন কন্টেনার কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে রেল যোগাযোগও গড়ে তোলা হয়।
Social