বর্ধমানে যুবতী খুনের তদন্তে সিট গঠন করল জেলা পুলিশ

Prabir Mondal
3 Min Read

টুডে নিউজ সার্ভিস, বর্ধমানঃ বর্ধমানে নান্দুরের ঝাপানতলায় ২৫ বছরের আদিবাসী যুবতী খুনের ২ দিন হয়ে গেলেও এখনও অপরাধী অধরা। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে মৃতা প্রিয়াঙ্কা হাঁসদা-র পরিবার। শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার আমনদীপ সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, ময়নাতদন্তে ধর্ষণের ঘটনার কোনো প্রমাণ মেলেনি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপাার অর্ক ব্যানর্জী-র নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি সিট গঠন করা হয়েছে। মেয়ের খুনের নৃশংসতার বর্ণনা দিতে গিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তাঁর মা, বারবার সংজ্ঞা হারাচ্ছেন। কেন খুন হতে হল মেয়েকে? কেন এই নৃশংতা? তা তাঁরা কিছুতেই বুঝতে পারছেন না। বুঝতে পারছেন না কেন এখনও অধরা অপরাধী। মৃত ছাত্রীর বাবা ও মা চাইছেন, দ্রুত অপরাধীকে গ্রেফতার করে কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করুক পুলিশ। একই দাবীতে আন্দোলনে সামিল হয়েছে একাধিক আদিবাসী সংগঠনও।

স্বাধীনতা দিবসের দিন আদিবাসীরা বর্ধমান থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভও দেখিয়েছে। খোদ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী ছাত্রছাত্রীরাও অবিলম্বে এই খুনের রহস্য উদ্ঘাটন এবং দোষীদের শাস্তির দাবীতে এদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিনি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষায় স্নাতকোত্তর স্তরে দর্শন নিয়ে এমএ করছিলেন। পাশাপাশি একটি ব্যাঙ্গালোরে শপিংমলে সেলস্-এর কাজও করতেন এবং সেলসের কাজের প্রশিক্ষণের জন্য গত নভেম্বর মাসে ব্যাঙ্গালুরু যান। গত সোমবার সে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসে। বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ির পাশেই বাথরুমে যাবার নাম করে ঘর থেকে মোবাইল নিয়ে বের হয়। বেশ কিছুক্ষণ কেটে গেলেও মেয়ে ফিরছে না দেখে প্রিয়াঙ্কার মা কাজল হাঁসদা বাথরুমে গিয়ে দেখে মেয়ে নেই এরপর মাঠে দিকে দেখতে গিয়ে বাড়ি থেকে ৫০ মিটারের মধ্যেই তার গলার নলি কাটা দেহ সবজির ক্ষেত থেকে পাওয়া যায়। এরপরই মৃত ছাত্রীর বাবা সুকান্ত হাঁসদা বর্ধমান থানায় লিখিতভাবে খুনের মামলা রুজু করেন। তার পরিপেক্ষিতেই তদন্ত করছে বর্ধমান থানার পুলিশ। এদিকে, এই খুনের ঘটনা নিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গুজব না ছড়ানোর আবেদন জানিয়েছেন।

শুক্রবার জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, গত ১৪ আগষ্ট সন্ধ্যায় বর্ধমানের একটি ঘটনা নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানোর চেষ্টা চলছে নির্দিষ্ট কিছু মহল থেকে। ময়নাতদন্তে ধর্ষণের ঘটনার কোনো প্রমাণ মেলেনি। এমনকি পরিবারের পক্ষ থেকেও কোনো অভিযোগ করা হয়নি। খুনের অভিযোগের ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং গ্রেফতারের অভিযান চলছে। পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছে, আসামী ওই যুবতীর পূর্ব পরিচিত বলে মনে করা হচ্ছে। অবিলম্বে গ্রেফতার নিশ্চিত করতে সিনিয়র অফিসারদের সমন্বয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপাার অর্ক ব্যানর্জীর নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি সিট গঠন করা হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে ১৪ আগস্ট রাতে নারী সমাবেশের সঙ্গে এই ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। যারা গুজব ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *