শঙ্কু কর্মকার, কাটোয়াঃ ৪৫ বছরের গ্রাম আজও অন্ধকারে ঢেকে। গ্রামে আজও আসেনি বিদ্যুৎ। হারিকেনের আলো জ্বেলে পরীক্ষা দিচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। বছর কয়েক আগে সোলার প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দিলেও তা পুরোপুরি ভাবে বন্ধ হয়ে যায় মাস ছয়েক চলার পর।পূর্ব বর্ধমানের এই গ্রামটির নাম দামপাল।
পূর্বস্থলী দু’নম্বর ব্লকের পাটুলী পঞ্চায়েতের দামপাল গ্রাম।গ্রামটির অবস্থান পূর্ব বর্ধমান জেলার অধীনে হলেও গ্রামটি জুড়ে রয়েছে নদীয়া জেলার সাথে। মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে ভাগীরথী নদী। ৪৫ বছর আগে থেকে এই দামপাল গ্রামে বসতি গড়ে ওঠে।সেই থেকে আজও গ্রামে নেই বিদ্যুৎ।
গ্রাম লাগোয়া নদী থাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যয় বহুল ও ব্যবস্থা নেই পরিকাঠামোর। যে কারণে নদী পার করে বিদ্যুৎ আনা সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে। তবে ২ বছর আগে সোলার প্যানেল বসিয়ে গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে সৌর বিদ্যুৎ সংযোগ দেয় বিদ্যুৎ দপ্তর। পরিবর্তে বিদ্যুৎ বিলের মতো মাসে মাসে টাকা নিত দপ্তর।কয়েক মাসের মধ্যেই এই প্রকল্প বিকল হয়ে পড়ে। প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে আর গ্রামে জ্বলেনা আলো। সন্ধ্যা নামলেই সেই আঁধার নেমে আসে গ্রামজুড়ে।
গ্রামে বিদ্যুৎ না থাকায় দুর্ভোগের শেষ নেই গ্রামবাসীদের। রাত হলেই ভরসা হ্যারিকেন বা লন্ঠনের আলো। দিন মানেই মিটিয়ে ফেলতে হয় সংসারের যাবতীয় কাজ। পড়ুয়াদের লন্ঠন বা হ্যারিকেনের আলোতে পড়াশুনা করতে হয় রাতে। গ্রামে পাঁচ থেকে ছয় জন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রয়েছে তারাও পড়াশোনা করছেন হারিকেন লন্ঠনের আলোতে। অসুস্থ রুগীকে অন্ধকারে রেখেই চলে সেবা।গ্রামে যুবক যুবতীদের বিবাহের সমন্ধ হবার আগেই ভেঙ্গে যায়। বর্ধমান জেলার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে মাটির কাঁচা পথ ও নদী পার করতে হয় গ্রামবাসীদের।
পূর্ব বর্ধমান জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন ও নদীয়া জেলার সীমান্ত যুক্ত এই গ্রামে বিদ্যুৎ না থাকলেও এই গ্রাম লাগোয়া নদীয়া জেলার বিভিন্ন গ্রামে আছে বিদ্যুৎ।রাত হলেই সেই গ্রাম গুলিতে জ্বলে আলো।শুধু মাত্র বর্ধমান জেলায় দামপাল গ্রাম অবস্থান হওয়ায় বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত এই গ্রাম,আক্ষেপ কয়েক হাজার গ্রামবাসীদের।
Social