Breaking News

“যমের দুয়ারে পড়ে কাঁটা”- ভাইদের কপালে শুভ্র চন্দনের ছোয়া, ভ্রাতৃদ্বিতীয়ায় মেতেছে ছোট থেকে বড়

পল মৈত্র, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ সকাল থেকেই বাংলার ঘরে ঘরে পালিত হচ্ছে ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা। পঞ্জিকা মতে, কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় দিনে অর্থাৎ কালীপুজোর দু’দিন পরে পালিত হয় ভ্রাতৃদ্বিতীয়া। এবার তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। আজ ভাতৃদ্বিতীয়া। আজ এই পবিত্র দিনে বোনেরা তার দাদা বা ভাইয়ের কপালে শুভ্র চন্দন দিয়ে তাদের সুস্থ জীবন ও শতায়ু প্রার্থনা করেন। নানা ব্যাঞ্জন রান্না করে খাওয়ান। এই পবিত্র তিথি তাই বড় মধুর। পুরাণে এই তিথির মাহাত্ম্য সম্বন্ধে বলা হয় –  সূর্য দেবতার পুত্র যমকে ভাইফোঁটা দিয়েছিলেন সূর্য তনয়া যমুনা দেবী। পৌরাণিক আখ্যান অনুযায়ী সূর্য লোক ছেড়ে সূর্য পত্নী সংজ্ঞা দেবী ভূলোকে চলে আসেন। মাতাকে না পেয়ে সূর্য কন্যা যমী ভূলোকে আসেন। এখানেই তিনি যমুনা রূপে নদী হয়ে প্রবাহিত হন।

অপরদিকে মাতা ও ভগিনীকে হারিয়ে ধর্মরাজ যম অতিশয় শোকে মগ্ন হন। শোকে আকুল হয়ে স্বধর্ম ভুলে যেতে বসেন। এই পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রন করেন মহামুনি নারদ। তিনি ভূলোকে এসে যমুনা দেবীকে তাঁর ভ্রাতার দুঃখ শোকের কথা বলেন, অপরদিকে নারদ মুনি যমুনাদেবীর কথা অনুযায়ী যমকে গিয়ে জানান, ভ্রাতৃদ্বিতীয়ায় স্বয়ং যমুনা দেবী ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান করে আপনাকে ফোঁটা দেবেন। যমী প্রথম তাঁর ভ্রাতা যমকে ফোঁটা দিলেন। সেই থেকে ভূলোকে “ভাইফোঁটা” অনুষ্ঠান প্রচলিত হোলো। বলা হয় ভাইফোঁটা যমের প্রিয় অনুষ্ঠান। যম ও যমীর মধ্যে যে স্নেহ ভালোবাসা, মর্তের ভাই বোনেদের মধ্যে তেমন প্রীতি স্নেহ দেখে যম অতিশয় তুষ্ট হন। তিনি মানবকে কৃপা করেন। এই জন্য ভাইফোঁটার অনুষ্ঠানে বলা হয় – “যমের দুয়ারে পড়ে কাঁটা।” 

সেলিব্রিটিদের ভাইফোঁটা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের বাড়িতেও আজ উৎসবের আমেজ। উপোস করে থাকা বোন–দিদিরা ভাই আসবে বলে আয়োজন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। একইসঙ্গে মিষ্টির দোকান, শপিং মলে নেমেছে কেনাকাটার ভিড়। গত সোমবার থেকেই সেই ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ভাইয়ের আয়ু বৃদ্ধি এবং কল্যাণের জন্য প্রার্থনা করবেন তাঁরা। আর ভাই–দাদারা বোন–দিদির মঙ্গল কামনা করে আজকের দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখবে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে একই চিত্র ধরা পড়েছে। ভাইফোঁটার আগেই সোমবার সকাল থেকেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বুনিয়াদপুর, গঙ্গারামপুর ও সদর শহর বালুরঘাট সহ সর্বত্রই দোকানগুলিতে ভাইফোঁটার কেনাকাটার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। আধুনিক উপহার সামগ্রীর দোকানগুলিতে ভাই–বোনেদের ভিড় ছিল বেশি। পুজো–সহ বিভিন্ন উৎসবে জামাকাপড় তো কেনাই হয়। তাই ভাইফোঁটায় পোশাকের প্রতি আগ্রহ কমতে দেখা যাচ্ছে। সেই তুলনায় উপহার সামগ্রীর প্রতি ঝোঁক বাড়ছে মানুষের। ভাইফোঁটাতে বাজারে সবকিছুই আজ অগ্নিমূল্য কিন্তু তবুও ভাই বোন দাদা দিদিরা কোনও কিছুতে রাখতে নারাজ। সর্বশেষে সব ভাই ও দাদারা উপহার আদান প্রদানের পর কবজি ডুবিয়ে মাংস, মন্ডা, মিঠাই, ইলিশ মাছ তৃপ্তি সহকারে বেশ রসিয়ে খেয়েছে তা তাদের নিশ্চিত ঢেকুর তারই বার্তা দেয়।

About Burdwan Today

Check Also

ছাত্রের সঙ্গে বিয়ে! ভাইরাল ভিডিও নিয়ে মুখ খুললেন অধ্যাপিকা

https://youtube.com/watch?v=DtKkoXN83Go%3Fsi%3Duq8Tf9oKtBf_HpoM https://youtu.be/DtKkoXN83Go?si=jCn7axQlgKt47XXr

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *