পাপু লোহার, কাঁকসাঃ উদ্দাম তালে গান চলছে আর চলছে নাচ। নাচছেন কনের ঘরের লোকেরা আবার সেই সাথে তাল মিলিয়ে নেচে চলেছেন বরযাত্রীরা। জমকালো বিয়ের অনুষ্ঠান, কনেপক্ষ আর বরযাত্রী মিলে বিশাল আয়োজন। এই দুর্মূল্যের বাজারে প্রায় হাজার লোকের আয়োজন। কম সে নয় আয়োজন! এঁচোরের তরকারি, মটর পনির, আমের চাটনি, মিষ্টি আর পাঁপড়। এমনটাই দেখা গেল কাঁকসার গোপালপুরের উত্তরপাড়ার সত্যনারায়ন পল্লীতে। কিন্তু বর আর কনে কই? এখানেই জবরখবর! বরকনে মানুষ নয়। জীব সমাজকে বাঁচিয়ে রেখেছে যারা সেই উদ্ভিদ। বট আর অশ্বত্থ গাছের বিয়ে দিলেন আজ উত্তরপাড়ার সত্যনারায়ন পল্লীর বাসিন্দারা। ধুমধাম করে এই বিয়ের আয়োজন। বৈদিক মতে মন্ত্র পাঠ করে বিয়ে হল বট আর অশ্বত্থ গাছের মধ্যে। উদ্যোক্তা হচ্ছেন আরতি বিশ্বাস, মমতা সানা, ল্যাবলী চত্রবর্তী, চন্দনা দাস, ভারতী মজুমদার, আন্না মন্ডল, লক্ষী ওঝা। তবে পুরুষেরাও রয়েছেন এই আয়োজনে । তারা হলেন শ্রী দিবাকর বিশ্বাস ড. প্রদীপ কুমার দাস, শ্রী সুশান্ত অধিকারী, শ্রী সমীর সানা। এলাকার মহিলারাই এই বিবাহের আয়োজন করেছেন। তাদের কথায় প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে আর এর কারন অবাধে গাছ কাটা।
মহিলাদের কথায় “উন্নয়নের নামে গাছ কাটা, মানুষের ইচ্ছার নামে গাছ কাটা আর এসবের ফলেই প্রকৃতির বুকে ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, ধ্বংস হচ্ছে জীবকূল।” তাই মানব সমাজকে বুঝতে হবে উদ্ভিদ আর জীবকূল না থাকলে এ সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। আর সেই কারনেই পাড়ার মহিলারা একজোট হয়ে সিদ্ধান্ত নেন গাছের বিয়ে দিয়ে গাছের সম্বন্ধে ভালবাসা গড়ে তুলতে হবে। “গাছ বাঁচান আর নিজেরা বাঁচুন এই মন্ত্রেই আজ গাছের বিয়ে এবং এর সবের কৃতিত্ব আমাদের পাড়ার সব মহিলাদের” বলে জানালেন অধ্যাপক ডঃ প্রদীপ কুমার দাস। রাত আটটা নাগাদ বিয়ে শুরু হয়। পাত পেরে খাওয়া দাওয়া সবই চলছে ধুমধাম করে ।
Social