পাপু লোহার, বুদবুদঃ বুদবুদের কসবা এলাকার চম্পাই নগরে শিবের নীলপুজো উপলক্ষে শিব মন্দিরে সকাল থেকেই শিবের মাথায় জল ঢালতে ভিড় জমান স্থানীয় ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভক্তরা। শোনা যায় এই মন্দিরের কথা মনসা মঙ্গল কাব্যে বর্ণিত আছে। যেখানে বেহুলা লখিন্দরের কাহিনীতেও রয়েছে। সেই সমস্ত কাহিনীর কিছু কিছু নিদর্শন আজও দেখা মেলে। আর তা দেখার জন্য বহু মানুষ আজও চম্পাই নগরে আসেন ভ্রমণে। কসবা-চম্পাইনগরীই হল চাঁদ সদাগরের চম্পক নগরী৷
আমরা জানি, চাঁদ সদাগর ছিলেন পরম শৈব এবং তিনি তাঁর বসতভিটায় শিবমন্দির তৈরি করে শিবের আরাধনা করতেন। কিম্বদন্তী অনুসারে বর্ধমানের এই গ্রামে দুটি প্রাচীন শিবমন্দিরে প্রতিষ্ঠিত দুটি শিবলিঙ্গ (যার মধ্যে একটি হল রামেশ্বর শিবলিঙ্গ) স্বয়ং চাঁদ সদাগরের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত৷ ডিভিসি ক্যানেলের দক্ষিণদিকে একটি উঁচু ঢিবিতে রয়েছে একটি সুন্দর শিবমন্দির। এক বিশাল অশ্বত্থ গাছের পাশে অবস্থিত শিবমন্দিরটিতে রয়েছে গৌরীপট্টহীন এক বিশাল শিবলিঙ্গ, যেটি রামেশ্বর নামে পরিচিত৷ আর স্থানীয় মানুষের কাছে ওই শিব মন্দির চাঁদ সওদাগরের শিব মন্দির নামেই পরিচিত।
প্রতিবছরের মতো এ বছরও চাঁদ সওদাগরের প্রতিষ্ঠিত শিবমন্দিরে শুরু হয়েছে শিবের গাজন। গাজন উপলক্ষে মন্দির চত্বরে বসেছে মেলা। গাজন উৎসব চলবে রাতভর সেই সঙ্গে চলবে মেলা । মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া মেলা ও গাজন চলবে পয়লা বৈশাখ পর্যন্ত। গত দু’বছর করোনা আবহে তেমন ভাবে গাজন ও নীল ষষ্ঠীর পুজো না হলেও এই বছর মহা ধুমধামে পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। স্থানীয় মানুষরা ছাড়াও দূরদূরান্ত বহু ভক্তের সমাগম হয়েছে এই বছর। চাঁদ সদাগরের প্রতিষ্ঠার শিব মন্দিরে জল ঢেলে নীল পুজা করেন এবং পরিবারের মঙ্গল কামনায় শিবের কাছে প্রার্থনা করেন।
মন্দিরের পুরোহিত জানিয়েছেন, বহুকাল আগে চাঁদ সদাগর এখানে তার পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন এবং তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ শিবের ভক্ত ও সেই জন্যই তিনি এখানে প্রতিষ্ঠা করেন শিব মন্দির। আর সেই পৌরাণিক কাল থেকে হয়ে আসছে এখানে শিবের পুজো। তবে শিব রাত্রিতে সব থেকে বড় পুজোর আয়োজন করা হয়। পুজো উপলক্ষ্যে ৩দিন ধরে মেলার আয়োজন করা হয়।
Social