কবি ও বাচিকশিল্পী সুবীর চৌধুরীর সাথে কিছুক্ষণ

Burdwan Today
3 Min Read

 

অরুণাভ দত্ত, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ কবি ও বাচিকশিল্পী সুবীর চৌধুরীর কাছে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই যেন এক একটি কবিতা। পরিবেশের প্রতিটি শব্দ তার মনের খেয়াতরীতে চিত্রকল্প বয়ে আনে। কবিতাই যেন তার জীবনসঙ্গী। দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কুড়িয়ে পাওয়া বিভিন্ন শব্দকে আশ্রয় করেই তিনি কবিতার মালা গাঁথেন। তিনি কবিতা লিখতে গিয়ে মনে করেন – কবিতা একটা গভীর অনুভূতির বিষয়, কবিতা নিয়ে প্রথম থেকেই পরীক্ষা ও নিরীক্ষা চলছে। কবিতার ক্ষেত্রে পরীক্ষা ও নিরীক্ষার বৃত্তকে টপকেই সর্বদা এগিয়ে গিয়ে কাব্যচর্চায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে হবে। কবিতার পাঠকই সময়ের সাথে সাথে ঠিক করার পাশাপাশি বিচার করবেন কোন কবিতার গ্রহণ যোগ্যতা আছে।

 তিনি তার কাব্যচর্চায় নিজেকে বারে বারে আবিষ্কার করেছেন, এই আবিষ্কারের অন্তরালেই তিনি পরতে পরতে ভিন্ন স্বাদে নিজেকে খুঁজে পান। তার কাব্যজীবন শুরু হয় ১৯৭৪ সালে এইচ.এস. পাশের পর থেকেই, সেইসময় কাব্যচর্চার বিষয়ে বালুরঘাটের কবি মুকুল বসু ও কবি জ্যোর্তিময় চট্টোপাধ্যায় ( বাচ্চু দা ) এই দুইজন ব্যক্তির কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ গ্রহণ করতেন। আত্রেয়ী নদীর সদর ঘাটে প্রতিদিন বিকেলে ” অশোক বন “- পত্রিকার সম্পাদক অভিজিৎ চক্রবর্তী ও আরো অনেক কবি সাহিত্যিকের সাথে সাহিত্যের আড্ডায় বসতেন, কাব্যচর্চার ক্ষেত্রে সুবীর চৌধুরীকে স্বাভাবিক ভাবেই নদী আকর্ষণ করতো। তার মা বেলারানী চৌধুরী ও বন্ধু স্থানীয় ” বিবর্ণ মুখোশ “- পত্রিকার সম্পাদক অশোক সরকার তাকে কাব্যচর্চায় যথেষ্ট অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। ” বালুরঘাট বার্তা “- সাপ্তাহিক সংবাদপত্রের শারদীয়া সংখ্যায় প্রথম মুদ্রিত স্বরচিত কবিতার মাধ্যমে তাঁর আত্মপ্রকাশ হয়। রায়গঞ্জের ” উদীরণ ” পত্রিকার পাশাপাশি বালুরঘাটের ” অন্যদিন “, ” মধুপর্ণী “, ” প্রতিলিপি ” পত্রিকা সহ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বাইরেও কোলকাতার ” কবিতা পাক্ষিক “, বহরমপুরের ” অনীক “, বর্ধমান থেকে লীলা করের সম্পাদিত ” কোমল দুর্বা ” পত্রিকা সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। বালুরঘাট ও বালুরঘাটের বাইরে বহু অনুষ্ঠানে তিনি সঞ্চালনাও করেছেন। 

১৯৮৭ সালে বালুরঘাট মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ বিমান সরকার সম্পাদিত ” সূর্যবীজ ” পত্রিকাতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয় এবং পরবর্তীকালে তিনি ” সূর্যবীজ ” পত্রিকার কর্মাধ্যক্ষও হন। ১৯৮৮ সালে প্রকাশক কবি ও সাহিত্যিক মৃণাল চক্রবর্তীর দধীচি সাহিত্য পরিষদ থেকে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ” নির্জনে একা ” প্রকাশিত হয় এবং ২০১৭ সালে দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ” নদীজলে ভেসে যাক পাণ্ডুলিপি ” প্রকাশিত হয়, এই বছর প্রকাশক ও সম্পাদক সাংবাদিক বিনায়ক কৃষ্ণ মজুমদারের আত্রাই প্রকাশনী থেকে তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ” আহত বর্ণমালার পাশে ” প্রকাশিত হয়। আবৃত্তি ও কাব্যচর্চায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি বালুরঘাট ও বালুরঘাটের বাইরে বহু সংস্থা থেকে সংবর্ধনা ও পুরষ্কারও পেয়েছেন।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *