চপল বিশ্বাস, নদীয়াঃ নদীয়া জেলার পারিবারিক স্তরে বেশ কিছু বৈশিষ্ট্যপূর্ণ দুর্গাপূজা হয়ে আসছে। ধারাবাহিকভাবে কয়েকশো বছরের প্রাচীন পুজোগুলো। অষ্টাদশ শতাব্দীতে নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় নতুন রীতি প্রচলন করে দুর্গোৎসব শুরু করেন। প্রায় তিনশাে বছর চাল হওয়া। বিভিন্ন রীতিনীতিকে মান্যতা দিয়ে আজও পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র নীল দুর্গাপুজো হয়ে আসছে কৃষ্ণনগরের নাজিরাপাড়ায় চট্রোপাধ্যায় পরিবারে। ১০৮টি নীল পদ্ম দিয়ে দুর্গাপূজার অকাল বোাধন করে শরতকালে পুজো শুরু করেছিলেন রামচন্দ্র। কিন্তু কৃষ্ণনগর নাজিরাপাড়ায় চট্টোপাধ্যায় পরিবারে দুর্গা অপরাজিতা রূপে পূজিত হন। দেবীর বর্ণ নীল। আরেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য, দেবীর বাম দিকে লক্ষ্মীর সঙ্গে কার্তরক ও সরস্বতীর সঙ্গে গণেশ থাকেন। আমরা সাচরাচর অন্যে কোথাও দেখি না।
এই পুজোর নেপথ্যে রয়েছে এক অলৌকিক কাহিনী। এই পরিবারের বর্তমান প্রাণপুরুষ অধ্যাপক চঞ্চল চট্টোপাধ্যায় বলেন, প্রথমে দুর্গাপ্রতিমা অতসীরূপে পূজিত হতেন। কিন্তু, কোনো একসময়ে দুর্গামুর্তির তৈরির দায়িত্বে থাকা মৃৎশিল্পী ভুলবশত দেবীর গায়ের রং অতসী বর্ণের বদলে নীল করে ফেলেন। এরপর পরিবারের এক সদস্য নীল বর্ণের অপরাজিতা রূপে দেবীকে পুজো করে স্বপ্নাদেশ পান। তারপর থেকেই নীল দুর্গার পূজা।
এই নীল দুর্গা পুজো শুরু হয়েছিল ওপার বাংলায়। ওপার বাংলার বরিশাল জেলার রামরাইল গ্রামে বাস ছিল চট্টোপাধ্যায় পরিবারের। ১৯৪৭ সালের পর ওপার বাংলা থেকে এই পরিবারের সদস্যরা এপার বাংলায় চলে আসেন নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। ১৯৪৮ সাল থেকে শুরু হয় নীল দুর্গা পুজো কৃষ্ণনগরে। নীলবর্ণের দুর্গা থেকে ওই চট্টোপাধ্যায় পরিবারের বাড়ির নাম হয়ে গিয়েছে নীল দুর্গা বাড়ি।
পুজোর আরেক বৈশিষ্ট্য পশুবলির বদলে শত্রুবলি দেওয়া হয়।
Social